বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ভ্রমণ কর জালিয়াতির অভিযোগে ছয়জন ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে পুলিশ। পরে নির্দিষ্ট জরিমানা পরিশোধ ও লিখিত মুচলেকা দেওয়ার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বেনাপোল পোর্ট থানার পুলিশ সন্দেহভাজনদের আটক করে এবং যাচাই-বাছাই শেষে তাদের কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করে। আটক ব্যক্তিরা হলেন কলকাতার আহম্মেদ মুসাইন, সগির হোসেন, জিন্নাত খাতুন, রেশমা খাতুন, নুদরাত আরা ও পারভিন শাহিন।
আটক ব্যক্তিরা জানান, তারা ভারত থেকে বিভিন্ন পণ্য এনে বাংলাদেশে বিক্রি করেন। বুধবার তারা আকাশপথে বাংলাদেশে আসেন এবং বৃহস্পতিবার বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে ফেরার চেষ্টা করছিলেন। তবে ভ্রমণ কর সংক্রান্ত রসিদ ভারত থেকে পাঠানো হয়েছিল এবং সেটি বৈধ বলে তারা দাবি করেন। কিন্তু সীমান্ত পার হওয়ার সময় কাস্টমস কর্মকর্তারা রসিদ পরীক্ষা করে জালিয়াতির বিষয়টি শনাক্ত করেন।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল মিয়া জানান, পুলিশের নিয়মিত টহল চলাকালে সন্দেহজনক আচরণের কারণে ওই যাত্রীদের কাস্টমস কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পরে রসিদগুলো যাচাই করে দেখা যায়, এগুলো জাল। এরপর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের নির্ধারিত ভ্রমণ কর পরিশোধ করতে বাধ্য করে। জরিমানা হিসেবে প্রত্যেককে দ্বিগুণ হারে দুই হাজার টাকা করে পরিশোধ করতে হয়। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ না করার অঙ্গীকারনামা দেওয়ার পর তাদের ভারতে ফেরত পাঠানো হয়।
বেনাপোল বন্দরের একটি সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই চেকপোস্ট এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র ভ্রমণ কর জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। পাসপোর্টধারীদের জমা দেওয়া ভ্রমণ করের রসিদ বৈধ কিনা তা যাচাইয়ের জন্য চেকপোস্ট কাস্টমসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে তদারকির জন্য কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি নিয়োগ করা হয়নি। ফলে প্রায়ই কর ফাঁকির ঘটনা ঘটছে।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক মো. সজিব নাজির বলেন, বেনাপোল চেকপোস্টে ভ্রমণ কর জালিয়াতির একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে, যারা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে এ ধরনের অনিয়ম বন্ধ করা যায় এবং সরকারি রাজস্ব নিশ্চিত হয়।