নাজমুল হক চৌধুরী, নরসিংদী প্রতিনিধি:
নরসিংদীর শেখেরচরে ডাকাতির সময় ঘরে ঢুকে কিশোরী সুমনা আক্তার তিথি (১৩) কে হত্যা ও তার মাকে আহতের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। এসময় লুট হওয়া ১০ লাখ ১ হাজার টাকাসহ হত্যার বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো: এনায়েত হোসেন মান্নান।
সংবাদ সম্মেলনে জানা যায়, হত্যার ঘটনার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নরসিংদী, ফরিদপুর, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা ও বরিশালে অভিযান চালিয়ে জড়িত ৪ জনকে গ্রেপ্তার ও লুট হওয়া ১০ লাখ ১ হাজার টাকাসহ হত্যার ঘটনার বিভিন্ন আলামত জব্দ করে পিবিআই এর একটি দল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানার পাঁচই এলাকার বাসিন্দা ফরিদ হোসেনের ছেলে ও শেখেরচর এলাকার ভাড়াটিয়া মো: রমজান শেখ ওরফে লিমন (২২), তার ভাই হাসিবুর রহমান শান্ত (৩১), নেত্রকোণার কেন্দুয়া থানার গন্ডা এলাকার বাসিন্দা ইনসান মিয়ার ছেলে ও শেখেরচর এলাকার ভাড়াটিয়া মো: কাউছার মিয়া (২০) ও নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া থানার চর গোয়াশ এলাকার বাসিন্দা মো: আব্দুল খালেক ওরফে বাবলুর ছেলে ও শেখেরচর এলাকার ভাড়াটিয়া মো: ইমন আলী (২১)।
তারা নরসিংদীর শেখেরচর এলাকার ভাড়ায় বাড়িতে বসবাস করে বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
পুলিশ সুপার মো: এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বিদেশ হতে পাঠানো বাসায় রাখা মোটা অংকের টাকা লুট করতেই শেখেরচর বাজার সংলগ্ন এলাকার চা-পানের দোকানী মোফাজ্জল হোসেনের বাড়িতে ঢুকে গ্রেপ্তারকৃতরা।
এসময় ৭ বছরের প্রতিবন্ধী শিশু সন্তানকে বাথরুমে আটক রাখে তারা। পরে বাসায় থাকা টাকা লুট করার সময় বাধা দিলে গৃহবধূ আসমা বেগম ও মেয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সুমনা আক্তার তিথিকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় অসংখ্য আঘাত করে মৃত ভেবে চলে যায়। পরে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কিশোরী তিথীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। গুরুতর আহত মা আসমা বেগম (৩৮) ঢাকার একটি হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে দেয়া জবানবন্দীতে টাকা লুট ও হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানান পুলিশ সুপার মো: এনায়েত হোসেন মান্নান।
আসামীরা আরও জানান, গৃহকর্তা মোফাজ্জল হোসেন বাড়ির পাশেই চা-পানের দোকান করতেন। সেখানে নিয়মিত আসা যাওয়া ছিল তাদের। সে সুবাধে বাড়িতে বিদেশ হতে টাকা আসার খবর জেনে যায় তারা।
পরে , গত ২৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে গৃহকর্তা মোফাজ্জল হোসেন ঘরে ঢুকে স্ত্রী ও সন্তানকে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। তাৎক্ষণিকভাবে কে বা কারা ঠিক কারণে এ হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে জানাতে পারেনি গৃহকর্তা মোফাজ্জল হোসেন। পরে তিনি বাদী এ ঘটনায় সদর থানায় অজ্ঞাত আসামী করে মামলা করেন।