জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। বৃহস্পতিবার (৮ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, চলতি মাসেই ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ও হাইকমিশন বাংলাদেশের সরকারি, বেসরকারি ও সামরিক পর্যায়ে অন্তত ২৩টি বৈঠক করেছে—যা সুস্পষ্টভাবে একটি বিদেশি হস্তক্ষেপের চিত্র তুলে ধরে।
হাসনাত বলেন, এসব বৈঠকের উদ্দেশ্য স্পষ্ট—আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের পথ তৈরি করে দেওয়া এবং বিচারের নামে সময়ক্ষেপণ করে রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে দলটিকে রেহাই দেওয়া। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “একপর্যায়ে বলা হতে পারে—এক সময়ের জনসমর্থিত দলকে নিষিদ্ধ করা আমাদের দায়িত্ব নয়।” অর্থাৎ, জনগণের রায়কে অগ্রাহ্য করে কিছু গোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে রাজনীতির ময়দানে টিকিয়ে রাখার পরিকল্পনায় ব্যস্ত।
পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, “যার রাজনৈতিক এজেন্ডায় গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার নাই, যার লক্ষ্যেই দলটিকে নিষিদ্ধ করার স্পষ্ট অবস্থান নেই—তার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।” তিনি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেন যে, এনসিপি এই প্রশ্নে কোনো আপস করবে না।
একই দিনে অন্য একটি পোস্টে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের বিচারিক কার্যক্রমের ধীরগতি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। হাসনাত অভিযোগ করেন, “খুনিদের নিরাপদে দেশত্যাগে সহায়তা দেওয়া হয়, পুলিশ ধরলেও আদালত জামিন দিয়ে ছেড়ে দেয়। এমনকি শিরীন শারমিনকে রাষ্ট্রীয় সহায়তায় বাসায় গিয়ে পাসপোর্ট সরবরাহ করা হয়।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল তো জানুয়ারিতে গঠিত হওয়ার কথা ছিল, এখনো কেন কার্যক্রম শুরু হয়নি?”
তিনি কঠোর ভাষায় বলেন, “আপনারা বলছেন, আওয়ামী লীগের বিচার করবেন—কিন্তু এ পর্যন্ত কী কী বিচার ও সংস্কার করেছেন তা জাতি জানতে চায়।”
জাতীয় রাজনীতির এই সংবেদনশীল সময়ে এমন প্রকাশ্য অভিযোগ শুধু আলোচনার জন্মই দেয়নি, বরং বিদেশি হস্তক্ষেপ ও রাজনৈতিক বিচার নিয়ে গভীর উদ্বেগও তৈরি করেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির মতো উদীয়মান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর এমন অবস্থান প্রমাণ করে যে, এখন দেশের নতুন প্রজন্ম এক ভিন্নধারার স্বচ্ছ ও শক্তিশালী নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছে—যা বিদেশনির্ভর নয়, বরং জনগণের ম্যান্ডেটকে শ্রদ্ধা করে।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?