রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ফলে সারা দেশে ট্রেন চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক হয়েছে। ভোর থেকেই রেল যোগাযোগ সচল হতে শুরু করে, যা গত কয়েকদিনের অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়েছে।
বুধবার (২৮ জানুয়ারি) মধ্যরাতে রেল উপদেষ্টার বাসভবনে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শ্রমিক প্রতিনিধিদলের পাশাপাশি সংকট নিরসনের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং বিএনপির প্রতিনিধি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, সোমবার (২৬ জানুয়ারি) মধ্যরাত থেকে কর্মবিরতিতে যান রেলের রানিং স্টাফরা, যার ফলে সারা দেশের রেল যোগাযোগ কার্যত অচল হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার সারাদিন ট্রেনযাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হন।
দিনভর শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে সরকারের উপদেষ্টাদের একাধিক দফায় বৈঠক হলেও কোনো কার্যকর সমাধান আসেনি। যাত্রীদের দুর্ভোগ বিবেচনায় এনে মঙ্গলবার মধ্যরাতে ছাত্র নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ও বিএনপির প্রতিনিধি শিমুল বিশ্বাসের মধ্যস্থতায় রেল উপদেষ্টার বাসভবনে পুনরায় আলোচনার আয়োজন করা হয়। এ বৈঠকে শ্রমিক নেতারাও অংশ নেন।
রাত আড়াইটার দিকে দীর্ঘ আলোচনা শেষে রেল উপদেষ্টা শ্রমিকদের কয়েকটি প্রধান দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন এবং দেশজুড়ে রেল চলাচল পুনরায় সচল হয়।
এই ঘটনাকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা শ্রমিক, প্রশাসন ও মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতার উদাহরণ হিসেবে দেখছেন।
রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, রেলওয়ের রানিং স্টাফদের সুবিধার বিষয়ে কথা হয়েছে। এই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় কিছু সুবিধার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে। তবে এরপরও রেলওয়ের রানিং স্টাফদের আরও কিছু দাবি রয়েছে। বিশেষ করে মাইলেজের সুবিধা এক মাসের বেশি হতে পারবে না।
রেল উপদেষ্টার এমন আশ্বাসে রাত থেকেই রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতা মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, যাত্রীদের এমন দুর্ভোগ আমরা চাই না। বাধ্য হয়ে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। স্টাফ ভাইদের বলব, তারা যেন নিজ নিজ দায়িত্বে ফিরে যায়।
এদিকে রেল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) রাত সোয়া ২টার দিকে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এ তথ্য জানান তিনি।
পোস্টে তিনি লেখেন, রেল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধর্মঘট প্রত্যাহার। শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা রেলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সমস্যার সমাধান করতে রেল উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছি।

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছেন অনেকে। আপনি কী মনে করেন?