সোহেল রানা,সিংগাইর প্রতিনিধিঃ
মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইরের জামশা কালীগঙ্গা নদী শাসন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নদীর তীরবর্তী এলাকার অর্ধশতাধিক পরিবার তাদের ভিটে বাড়ি হারিয়ে হচ্ছেন নিঃস্ব ও ভূমিহীন। ভুক্তভোগীদের রেকর্ডকৃত সম্পত্তি নেওয়া হলেও বিনিময়ে পাচ্ছেননা কোন ক্ষতিপুরণ।সরকারের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।
জানা যায়, নদী ভাঙ্গন রোধে ১৭ টি প্যাকেজের মাধ্যমে কালিগঙ্গা নদী শাসন প্রকল্প হাতে নেয় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। এরমধ্যে উপজেলার জামশা ইউনিয়নে দুটি প্যাকেজে প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে দেড় কিলোমিটার নদী শাসন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
নদীর তীরবর্তী পরিবারগুলোর অভিযোগ, নদী শাসন প্রকল্পে তাদের রেকর্ডকৃত সম্পত্তি নেওয়া হলেও তারা কোন ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না। এদিকে ব্যাক্তি মালিকানা ভূমির মাটি রাতের আধারে বিক্রির অভিযোগও রয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
রেকর্ডকৃত ভূমির বসতবাড়ি ভেঙ্গে নদী শাসন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকলেও মানা হয়নি ভূমি অধিগ্রহণ আইন। যে কারণে বাড়িঘর হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে নদী পাড়ের অর্ধশতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। সরকারের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি তাদের।
ভুক্তভোগী ঝর্ণা বেগম বলেন, আমার আধা বিঘার মতো জমিতে বাড়ি ছিলো। নদীতে ভাঙতে ভাঙতে বারো আনি শেষ। চার আনির মধ্যে ঘর করে থাকতাম, তাও ভাইঙ্গা দিলো। সরকার যদি আমাদের কিছু ক্ষতিপূরণ দিতো, না হলে একটু খাস জমি দিতো তাহলে বৃদ্ধ মাকে নিয়ে থাকতে পারতাম। এখন তো আমার আর কিছুই রইলো না।
একই অভিযোগ ভুক্তভোগী আব্দুল হাসেম আলী বলেন, আমার ব্যক্তি মালিকানা জমির প্রায় ২০-৩০ ফুট জমির মাটি কাটছে। আমার জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ছিলো, প্রায় ১ লাখ টাকা মূল্যের আদা চাষ করে ছিলাম। এখিন আমার সবই শেষ।
আমার জমির মাটি নিয়ে অন্য জায়গার রাস্তা ভরাট করেছে। অনেককেই নিজের জায়গার মাটি দিলেও আমাকে দেয় নাই। সরকারের কাছে এর নিকট আমার এই ক্ষতির ক্ষতিপূরণ চাই।
এরূপ প্রায় অর্ধশতাধিক ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, বাঁধ হলেও আমাদের ক্ষতি করে কেনো? আমাদের শেষ সম্বল ভিটে মাটি এভাবে কেড়ে নিলে আমরা কোথায় যাবো? তাই আমরা সরকারি ভূমি অধিগ্রহণ আইনের নিয়মেই ক্ষতিপূরণ দাবি করি।
একই সাথে ভূমি অধিগ্রহণ আইনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে ক্ষতিপুরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
জেলা পানি উন্নয়ন বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ সংবাদ মাধ্যম কে বলেন, সরকারিভাবে ভূমি অধিগ্রহণ না করায় এসব পরিবারেগুলোকে ক্ষতিপুরণ দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। এ প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরনের কোন ব্যবস্থা নেই।
যদি ওয়ার্ড ব্যাংক কিংবা এডিবির কোন প্রকল্প হতো তাহলে দেয়া হতো। এ ফান্ডে ক্ষতিপূরণ দেয়ার এরকম কোন মাধ্যম নেই।