ছাত্র-জনতা হত্যাচেষ্টা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। তিনি একাধিক হত্যা মামলার আসামি বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডে তার নিজ বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান শেষে রাতেই তাকে থানায় নেওয়া হয় এবং পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান।
ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, “আমরা ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বাসা ঘিরে রেখেছিলাম। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা হত্যাচেষ্টা মামলার পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘটিত কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, রাতভর অভিযান চালিয়ে তার বাসা থেকে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং মামলার তদন্তের স্বার্থে তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে কিছু মামলার তদন্ত চলছে, আর কিছু মামলায় নতুন করে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
তুরিন আফরোজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী ছিলেন এবং বিভিন্ন সময়ে আলোচিত-সমালোচিত অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুতে সক্রিয় ভূমিকা রাখার কারণে বিতর্কের মুখে পড়েন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র জানায়, তাকে আজই আদালতে তোলা হতে পারে এবং তদন্তের স্বার্থে রিমান্ড চাওয়া হতে পারে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে মামলার পরবর্তী ধাপ নির্ধারণ করা হচ্ছে।
আইনজীবী মহলে এই গ্রেপ্তার নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ এটিকে বিচারিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেখছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ এই গ্রেপ্তারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভিযোগ যেহেতু ফৌজদারি ও স্পর্শকাতর প্রকৃতির, সেহেতু বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হবে।
জনগণের একাংশ মনে করছে, দেশের আইন ও বিচারব্যবস্থায় সমতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার জন্য এই ধরনের পদক্ষেপ সময়োপযোগী। তবে চূড়ান্ত মন্তব্যের জন্য সবাই অপেক্ষা করছেন তদন্ত ও বিচারিক কার্যক্রমের পরবর্তী অগ্রগতির দিকে।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?