কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শনিবার (১০ মে) সকালে রাজধানীর বারিধারার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, সেলিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আলোচিত লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কুয়েতে অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে দণ্ডিত কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী। পাপুল কুয়েতের একটি আদালতে চার বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হন এবং পরবর্তীতে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়।
সেলিনা ইসলাম একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন-৪৯ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। সেই সময় তিনি কুয়েতে বসবাসরত একজন ব্যবসায়ী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন এবং তার নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও জয়লাভ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পাপুলের বিতর্কিত ব্যবসা ও অনিয়মে তার স্ত্রীর প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার বিষয়েও দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধান চলছিল।
গ্রেপ্তারের পর সেলিনা ইসলামকে রমনা বিভাগের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। মামলাটি প্রাথমিকভাবে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে র্যাবের একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তদন্তাধীন রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, তার বিরুদ্ধে দেশের বাইরে অবৈধভাবে অর্থ প্রেরণ, ভিসা বাণিজ্য, এবং বিদেশি নাগরিকদের শোষণের অভিযোগ রয়েছে।
ডিবি কর্মকর্তারা জানান, সেলিনা ইসলামের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বিদেশে সম্পদ, এবং তার পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রেপ্তারের সময় তার বাসা থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র জব্দ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল কুয়েতে একটি বড় মানবসম্পদ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন, যেটির মাধ্যমে হাজারো শ্রমিককে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো হতো। পরে তদন্তে দেখা যায়, সেখানে শোষণ, ঘুষ, ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন এবং সেই অর্থের একটি বড় অংশ দেশের বাইরে স্থানান্তরিত করেছেন।
সেলিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা এবং আইনি প্রক্রিয়ার পরবর্তী পদক্ষেপ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিবি জানায়, তাকে আদালতে তোলা হবে এবং তদন্তের স্বার্থে রিমান্ড আবেদন করা হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ বা সংসদ সচিবালয়ের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?