দেশজুড়ে বিরোধী রাজনৈতিক দল, নাগরিক সংগঠন এবং সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী ও স্বৈরাচারী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করার দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে। এমন প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টি ‘গুরুত্বের সঙ্গে’ পর্যালোচনার আশ্বাস দিয়েছে।
শুক্রবার (৯ মে) দুপুরে সরকারের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়,
“আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার প্রশ্নে সরকার ইতোমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। আলোচনার ভিত্তিতে খুব শিগগির এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
সরকার জানিয়েছে, বিষয়টি মূল্যায়নের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংস্থাগুলোর প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। এতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতান্ত্রিক কাঠামো ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,
“যতদিন না পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হচ্ছে, ততদিন সবাইকে শান্ত ও সহনশীল অবস্থান বজায় রাখতে সরকার আন্তরিকভাবে আহ্বান জানাচ্ছে।”
এর আগে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়,
“আইনের আওতায় এনে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কারণ সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সশস্ত্র আধিপত্য, খুন, গুম, ধর্ষণ, টর্চার সেল এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।”
এদিকে, মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত রাজনৈতিক সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩-এ সংশোধনী আনার বিষয়েও সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় খসড়া প্রস্তুতের কাজ করছে।
এছাড়া সাবেক রাষ্ট্রপতি ও ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ডসহ একাধিক হত্যা মামলার অভিযুক্ত আবদুল হামিদের গোপন দেশত্যাগ এবং থাইল্যান্ডে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় জনমনে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে—বিষয়টি সম্পর্কে সরকার অবগত রয়েছে।
সরকার জানায়,
“আবদুল হামিদের দেশত্যাগের বিষয়ে দায়ীদের চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রশাসনিক ও ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একইসাথে ইন্টারপোলের মাধ্যমে সাবেক এই রাষ্ট্রপতিকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।”
প্রসঙ্গত, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ধারাবাহিক বিক্ষোভ, অবস্থান কর্মসূচি ও ছাত্র-জনতার সমাবেশ চলমান রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান সরকার এই চাপের মুখে দ্রুত ও কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?