সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

ইসলাম ও জীবন

যে কারণে মরিচায় আচ্ছন্ন হয় অন্তর

মানুষের অন্তর আল্লাহ তায়ালা অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। এই অন্তরই মানুষকে সৎ ও অসৎ, ভাল ও মন্দ, সত্য ও মিথ্যা চিনতে সাহায্য করে। কিন্তু যখন মানুষ গুনাহ করে, তখন তার অন্তরে এক ধরনের ‘মরিচা’ পড়ে যায়। এই মরিচা তাকে আল্লাহর পথ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, ঈমানের আলোকে ম্লান করে দেয়। আর অন্তরের এই মরিচা, তার বিশ্বাসের […]

নিউজ ডেস্ক

২১ জানুয়ারী ২০২৫, ২১:৪৫

মানুষের অন্তর আল্লাহ তায়ালা অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। এই অন্তরই মানুষকে সৎ ও অসৎ, ভাল ও মন্দ, সত্য ও মিথ্যা চিনতে সাহায্য করে। কিন্তু যখন মানুষ গুনাহ করে, তখন তার অন্তরে এক ধরনের ‘মরিচা’ পড়ে যায়। এই মরিচা তাকে আল্লাহর পথ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, ঈমানের আলোকে ম্লান করে দেয়।

আর অন্তরের এই মরিচা, তার বিশ্বাসের দৃঢ়তা এবং নেক কাজের প্রতি আগ্রহকে দুর্বল করে দেয়। আল্লাহ তায়ালা তাঁর কিতাবে মানুষের অন্তরের শুদ্ধতার প্রতি গভীর মনোযোগ দিয়েছেন, এবং গুনাহ থেকে তওবা করার মাধ্যমে এই মরিচা পরিষ্কার করার পথও বাতলিয়ে দিয়েছেন।

অবিশ্বাস, আল্লাহর অবাধ্যতা, জুলুম, অশ্লীলতা ও অন্যান্য গুনাহ মানুষের অন্তরে মরিচা সৃষ্টি করে। কুরআন ও হাদিসের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, গুনাহের কারণে মানুষের অন্তরে কালো বিন্দু পড়ে এবং সেটি যদি তওবার মাধ্যমে পরিষ্কার না করা হয়, তাহলে তা অন্তরকে পুরোপুরি আচ্ছন্ন করে ফেলে।

যেমন মরিচা লোহাকে খেয়ে নষ্ট করে, তেমনি গুনাহ মানুষের অন্তরের শুদ্ধতাকে ধ্বংস করে দেয়। এই অবস্থায় মানুষ ভালোমন্দের পার্থক্য বুঝতে পারে না এবং এমনকি আল্লাহর কালামও তার কাছে অসত্য মনে হতে থাকে।

কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, اِذَا تُتۡلٰی عَلَیۡهِ اٰیٰتُنَا قَالَ اَسَاطِیۡرُ الۡاَوَّلِیۡنَ كَلَّا بَلۡ رَانَ عَلٰی قُلُوۡبِهِمۡ مَّا كَانُوۡا یَكۡسِبُوۡنَ
যখন তার কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয়, তখন সে বলে, ‘পূর্ববর্তীদের রূপকথা।’ না, এটা সত্য নয়, বরং তাদের কৃতকর্মের ফলেই তাদের অন্তরের ওপর মরিচা জমে গেছে। (সুরা মুতাফফিফিন, আয়াত: ১৩, ১৪)

এছাড়াও, রসুল সা. বলেছেন, যখন বান্দা পাপ করে, তখন তার অন্তরে একটি কালো বিন্দু পড়ে। যদি সে তওবা করে, সেই কালো বিন্দু পরিষ্কার হয়ে যায়। কিন্তু যদি পাপের পর পাপ করতে থাকে, তাহলে সেই কালো বিন্দু বড় হতে থাকে, এবং এক পর্যায়ে তা তার গোটা অন্তরকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। (সুনানে তিরমিজি: ৩৩৩৪)

তবে, কাফেরদের অন্তরে এই মরিচা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছায় যে, তাদের অন্তরে আল্লাহ তায়ালা সিল বা মোহর মেরে দেন, ফলে তারা হেদায়াত থেকে বঞ্চিত হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
اِنَّ الَّذِیۡنَ كَفَرُوۡا سَوَآءٌ عَلَیۡهِمۡ ءَاَنۡذَرۡتَهُمۡ اَمۡ لَمۡ تُنۡذِرۡهُمۡ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ خَتَمَ اللّٰهُ عَلٰۤی قُلُوۡبِهِمۡ وَ عَلٰۤی سَمۡعِهِمۡ وَ عَلٰۤی اَبۡصَارِهِمۡ غِشَاوَۃٌ ۫ وَّ لَهُمۡ عَذَاب عَظِیۡمٌ


নিশ্চয় যারা কুফরি করেছে, তুমি তাদেরকে সতর্ক কর কিংবা না কর, উভয়ই তাদের জন্য সমান, তারা ঈমান আনবে না। আল্লাহ তাদের অন্তরে ও কানে মোহর মেরে দিয়েছেন এবং তাদের চোখসমূহে রয়েছে পর্দা। আর তাদের জন্য রয়েছে মহা আজাব। (সুরা বাকারা, আয়াত: ৬ -৭)

তবে, আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়ালু। তিনি গুনাহগার বান্দাকে বারবার ক্ষমা করে দেন। তাই আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া উচিত নয়। কারণ, আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাকে ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কুরআনে আল্লাহ বলেন, قُلْ يٰعِبَادِيَ الَّذِيْنَ اَسْرَفُوْا عَلٰۤي اَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللهِ اِنَّ اللهَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِيْعًا اِنَّهٗ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ


বলো, হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের উপর বাড়াবাড়ি করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি গাফুর ও রাহিম। (সুরা জুমার,আয়াত: ৫৩)

যদি আমরা গুনাহ করি, দ্রুত তওবা করে আল্লাহর রহমত লাভ করি। আল্লাহ তায়ালা বারবার ক্ষমা করেন, এবং তাঁর রহমত অব্যাহত থাকে। গুনাহ থেকে মুক্তি পেতে এবং অন্তরের শুদ্ধতা অর্জন করতে, আমাদের সদা সচেষ্ট থাকতে হবে।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে জুলুম, অশ্লীলতা ও অন্যান্য গুনাহসহ সব ধরনের পাপ থেকে বেচে থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন।

ইসলাম ও জীবন

বিশ্বের ১৬৫ দেশের মুসলিমরা ব্যবহার করছেন যে স্যোশাল মিডিয়া

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্সের মত সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মুসলিমদের তৈরি স্যোশাল মিডিয়া ‘আলফাফা’। বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৬৫টিরও বেশি দেশের প্রায় চার লাখ মুসলিম এটি ব্যবহার করছেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, আলফাফা জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হচ্ছে, আলফাফা মুসলিমদের জন্য সর্বোচ্চ ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। যে স্বাধীনতা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্সে পাওয়া যায় না। ইসলাম নিয়ে অধিকাংশ পোস্ট […]

নিউজ ডেস্ক

২০ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭:৪৭

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্সের মত সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মুসলিমদের তৈরি স্যোশাল মিডিয়া ‘আলফাফা’। বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৬৫টিরও বেশি দেশের প্রায় চার লাখ মুসলিম এটি ব্যবহার করছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, আলফাফা জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হচ্ছে, আলফাফা মুসলিমদের জন্য সর্বোচ্চ ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। যে স্বাধীনতা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্সে পাওয়া যায় না। ইসলাম নিয়ে অধিকাংশ পোস্ট ডিলেট করে দেয় তারা। কিন্তু আলফাফা তৈরিই করা হয়েছে মুসলিমদের জন্য।

জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের একদল মুসলিম যুবক শুরু করেন এ স্যোশাল সাইট। ক্রমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সাইটটি। বর্তমানে ১৬৫টিরও বেশি দেশের মুসলিম ব্যবহার করছে এ অ্যাপস। বিশেষ করে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড হয়েছে এক মিলিয়নেরও বেশি।

আলফাফার নির্বাহী পরিচালক আসিফ সাঈদ গণমাধ্যমকে জানান, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সহকর্মী ও বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করতে অনেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেরই প্রকাশ ঘটেছে। কিন্তু মুসলমানদের জন্য ঈমান-আমল ঠিক রেখে সে সবের অনেক কিছু ব্যবহার করা দুষ্কর। সেসব বিষয় মাথায় রেখে ইসলামি মতাদর্শ লালন করা যুক্তরাষ্ট্রের একদল যুবক নিয়ে এসেছে সম্পূর্ণ হালাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। নাম আলফাফা ডটকম।

এতে বিনামূল্যে আপনার ব্যবসা, মসজিদ, রেস্টুরেন্ট বা চাকরি ও পেশাদার প্রোফাইল তালিকাভুক্ত করতে পারবেন। অ্যামাজনের মতো ই-কমার্স হিসেবেও দেখতে পারেন মুসলিমদের পরিচালিত এ সাইটটি।

একটি বাটনের ক্লিকে বিশ্বজুড়ে আপনার বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সংযোগ করতে পারবেন সহজে। একই সঙ্গে স্যোশাল মিডিয়া, মুসলিম ডিরেক্টরি, ব্লগ, ফোরাম, জবস, টিচ, ই-কমার্সসহ নানান ফিচারে সাজানো হয়েছে সাইটটি। গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপসটি ডাউনলোড করতে লিখুন alfafaa.

ইসলাম ও জীবন

মাত্র সাড়ে ৪ বছর বয়সে মায়ের কাছে হাফেজ হলেন শিশু আহমাদ

মাত্র সাড়ে ৪ বছর বয়সে ১০ মাস সময়ে মায়ের কাছে কোরআন মাজিদের হিফজ সম্পন্ন করার এক বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুম। তার বয়স বর্তমানে ৪ বছর ৬ মাস ২৯ দিন। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় ঢাকার যাত্রাবাড়ির মাদরাসাতু উসওয়াতি ফাতিমাহ রাদিয়াল্লাহু আনহায় এ বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। তার শিক্ষক ছিলেন তারই মা, যিনি তাকে […]

নিউজ ডেস্ক

২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮:১৮

মাত্র সাড়ে ৪ বছর বয়সে ১০ মাস সময়ে মায়ের কাছে কোরআন মাজিদের হিফজ সম্পন্ন করার এক বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুম। তার বয়স বর্তমানে ৪ বছর ৬ মাস ২৯ দিন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় ঢাকার যাত্রাবাড়ির মাদরাসাতু উসওয়াতি ফাতিমাহ রাদিয়াল্লাহু আনহায় এ বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। তার শিক্ষক ছিলেন তারই মা, যিনি তাকে অত্যন্ত যত্ন ও আন্তরিকতায় হিফজ সম্পন্ন করিয়েছেন। হিফজের সময় আহমাদ কোরআনের বাংলা অর্থও শিখেছেন, যা তার প্রতিভার আরও একটি প্রমাণ।

বিশ্বখ্যাত কারি ও বিচারক শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আজহারীর মতে, এই বয়সে হিফজ সম্পন্ন করার ঘটনা বিশ্বে বিরল। ইরান বা আলজেরিয়ায় ৫ বছর বয়সে হিফজের দৃষ্টান্ত থাকলেও আহমাদের মতো সাড়ে চার বছরে এ অর্জন অভূতপূর্ব। আহমাদ তার হিফজ সম্পন্ন করতে সময় নিয়েছে মাত্র ১০ মাস ১৮ দিন।

তার মায়ের একান্ত ইচ্ছা, তিনি যেন বিশ্বমানের মুত্তাকি, মুখলিস হাফেজ ও আলেম হিসেবে গড়ে ওঠেন। আল্লাহ তাআলা তাকে সেই তাওফিক যেনো দান করেন, সে দোয়াই কামনা করেছেন তিনি।

বিস্ময় শিশু আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুমের বাবা, খ্যাতিমান টিভি উপস্থাপক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাসুম বিল্লাহ বিন রেজা গণমাধ্যমকে বলেন, মহান রবের দরবারে কোটি কোটি কৃতজ্ঞতা, মহান রব দয়া মায়া করে আমার কলিজার টুকরো আহমাদকে তাঁর মহান গ্রন্থ আল কোরআন হিফজ করার তাওফিক দান করেছেন। আমাদের সন্তানের এ অর্জন আমাদের জন্য শুধু গর্বের নয়, দায়িত্বেরও। আমরা চাই, আহমাদ যেন একদিন বিশ্বজুড়ে কোরআনের আলো ছড়ায় ও মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। আমি দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থী।

হাদিস ফাউন্ডেশন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানড. আহমাদ আবদুল্লাহ ছাকিব বলেন, ‘বাবা-মায়ের সঙ্গে এই বিস্ময় শিশু যখন আমার মারকাযে বেড়াতে আসে, তখন আমি নিজেই স্তব্ধ হয়ে যাই। শুধু কোরআন হিফজ নয়, সে কোরআনের শব্দার্থও শিখে নিয়েছে। বাংলা, ইংরেজি ও আরবি ভাষায় ঝরঝরে রিডিং করতে পারে। আরবিতে তার স্পিকিং দক্ষতাও অসাধারণ। সব মিলিয়ে এটি এক অবিশ্বাস্য প্রতিভা। এখানেই তার যাত্রা শেষ নয়। বুখারি ও মুসলিম শরিফের হাদিস ধারাবাহিকভাবে মুখস্থ করার লক্ষ্যে সে এগিয়ে যাবে এটাও সে জানায়। মাশাআল্লাহ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে মুসলিম উম্মাহর একজন সুবিজ্ঞ মুখলিস আলেমে দ্বীন হিসাবে কবুল করুন।’

কুয়েত প্রবাসী দাঈ, শায়খ হাবিবুর রহমান মাদানী বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, যিনি তাঁর অনুগ্রহে সকল কল্যাণ পরিপূর্ণ করেন। আল্লাহ এই শিশু ও তার পরিবারকে বরকত দিন। তাকে ইসলামের জন্য এক মূল্যবান সম্পদ বানিয়ে দিন এবং সকল অকল্যাণ থেকে রক্ষা করুন। এমন সংবাদ হৃদয়কে প্রশান্তি দেয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে উত্তম প্রতিদান দিন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফেজ হুসাইনুল বান্না বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। এটা আল্লাহর মেহেরবানি যে আল্লাহ এমন শেষ্ঠ সন্তান দান করেছেন। ইয়া রাব্বি লাকাল হামদ। আল্লাহ যুগের আলেমে দীন হিসেবে কবুল করুন।

ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ শায়খ শরিফ আবু হানিফ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহপাকের বড় মেহেরবানি। বিনয়ের সাথে আল্লাহর শোকর আদায় করি। কারো বদনজর যেন না পড়ে খেয়াল রাখতে হবে। এ সংবাদ শুনেই সবাই মাশাআল্লাহ পড়বেন। তার জন্য দোয়া করবেন। সকল জ্বীন-ইনসানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহ ওকে হেফাজত করুন।’

মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শায়খ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আল্লাহু আকবর, মাশাল্লাহ তাবারকাল্লাহ, এটা বাংলাদেশের জন্য মহান এক গৌরব। আমি বাংলাদেশের মায়েদের প্রতি অনুরোধ করবো, আপনারা যদি সন্তানদের কোরআনের প্রতি ভালোবাসা ও অধ্যবসায় শেখাতে পারেন, তবে এমন সাফল্য সম্ভব। নিজের সন্তানকে সময় দিন, তাদের মননশীলতা ও প্রতিভা বিকাশে সহযোগিতা করুন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সন্তানকে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতার পথিক বানিয়ে দিন। আমিন’

ইসলাম ও জীবন

সেজদায় যে দোয়া পড়তেন বিশ্বনবী সা.

নামাজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ এক মহান ইবাদত। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে সিজদা হলো একটি বিশেষ অংশ, যেখানে মুসলিমরা নিজেদের অন্তর-আত্মা নিয়ে আল্লাহর কাছে পুরোপুরি নত হয়ে দোয়া করে। সিজদায় আমরা সাধারণত একটি বিশেষ দোয়া পড়ি যা আমাদের সবার কাছে পরিচিত। দোয়াটি হলো: سُبحانَ ربِّيَ الأعلَى উচ্চারণ: সুবহানা রাব্বিয়াল আলাদোয়াটির অর্থ হলো : আমার প্রতিপালক সুমহান ও […]

নিউজ ডেস্ক

১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২০:৫২

নামাজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ এক মহান ইবাদত। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে সিজদা হলো একটি বিশেষ অংশ, যেখানে মুসলিমরা নিজেদের অন্তর-আত্মা নিয়ে আল্লাহর কাছে পুরোপুরি নত হয়ে দোয়া করে। সিজদায় আমরা সাধারণত একটি বিশেষ দোয়া পড়ি যা আমাদের সবার কাছে পরিচিত। দোয়াটি হলো:

سُبحانَ ربِّيَ الأعلَى

উচ্চারণ: সুবহানা রাব্বিয়াল আলা
দোয়াটির অর্থ হলো : আমার প্রতিপালক সুমহান ও পবিত্র। (সাহিহুল জামি, হাদিস : ৪৭৩৪)

এছাড়াও সিজদায় আরও অনেক দোয়া পড়া যায়, যা হাদিসে নববিতে উল্লেখ রয়েছে যা আমাদের জন্য অত্ন্ত্য মূল্যবান পাথেয়। এখানে কিছু বিশেষ দোয়া উল্লেখ করা হলো, যা রসুল সা. সিজদায় পাঠ করেছেন এবং সেই গুলো আমাদেরও পড়া উচিত।

১. আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রসুল সা. সিজদায় এই দোয়াটি পড়তেন:
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ وَعَلاَنِيَتَهُ وَسِرَّهُ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি কুল্লাহু দিক্কাহু ওয়া ঝুল্লাহু; ওয়া আউয়ালাহু ওয়া আখিরাহু; ওয়া আলানিয়্যাতাহু ওয়া সিররাহু।

দোয়াটির অর্থ হলো : হে আল্লাহ! তুমি আমার ছোট-বড়, পূর্বের-পরের এবং প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সকল গোনাহ মাফ করে দাও। (মুসলিম, হাদিস : ৪৮৩)

২. আল্লাহর প্রশংসা

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রসুল সা. সিজদায় তাসবিহের সঙ্গে এই দোয়াটি পড়তেন:
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمدِكَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي
উচ্চারণ: সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুমাগফিরলি।

দোয়াটির অর্থ হলো : হে আল্লাহ! হে আমাদের প্রতিপালক! আমি আপনার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি। হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দিন। (বুখারি, হাদিস : ৭৬১; মুসলিম, হাদিস : ৪৮৪)

৩ . সিজদার গভীর অর্থ

হযরত আলি রা. বর্ণনা করেন, রসুল সা. সিজদায় এই দোয়া পাঠ করতেন:
اللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَلَكَ أَسْلَمْتُ وَأَنْتَ رَبِّي سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ وَصَوَّرَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ تَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকা সাজাদতু ওয়া বিকা আমানতু ওয়া লাকা আসলামতু ওয়া আনতা সাজাদা ওয়াজহিয়া লিল্লাজি খালাকাহু ওয়া চাওয়ারাহু ওয়া শাক্কা সামআ’হু ওয়া বাচারাহু তাবারাকাল্লাহু আহসানুল খালিক্বিন।

দোয়াটির অর্থ হলো : হে আল্লাহ! তোমার জন্যই সেজদা করছি। একমাত্র তোমার প্রতিই ঈমান এনেছি এবং তোমার কাছেই আত্মসমর্পণ করেছি। আমার মুখমণ্ডল ওই সত্ত্বার জন্য সিজদাবনত হয়েছে, যিনি উহাকে সৃষ্টি করেছেন, সুসমন্বিত আকৃতি দিয়েছেন এবং তাতে কান ও চক্ষু স্থাপন করেছেন। নিপুনতম সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালা কত কল্যাণময়! (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১১২৭; মুসলিম, হাদিস : ০১/৫৩৪)

৪. আল্লাহর সন্তুষ্টি প্রার্থনা

আয়েশা রা. বর্ণনা করেন, এক রাতে তিনি রসুল সা.-কে বিছানায় না পেয়ে খুঁজে পেলে, তিনি সিজদায় এই দোয়া পড়ছিলেন:
اللهم اني اعوذ بك برضاك من سخطك وبمعافتك من عقوبتك و اعوذ بك منك لا احسي ثناء عليك انت كما اثنيت علي نفسك
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আ’উজু বি-রিদাকা মিন সাখাতিকা ওয়া বি-মুআ’ফাতিকা মিন উ’কুবাতিকা ওয়া আ’উজুবিকা মিনকা লা উহসি ছানাআন আলাইকা আংতা কামা আছনাইতা আলা নাফসিকা।

দোয়াটির অর্থ হলো : হে আল্লাহ! তোমার সন্তুষ্টির মাধ্যমে তোমার অসন্তুষ্টি হতে আশ্রয় চাই। আর তোমার শাস্তি হতে পরিত্রাণ চাই। তোমার প্রশংসা করে শেষ করা যায় না। তুমি সেই প্রশংসার যোগ্য, যেরূপ তুমি নিজেই করেছ। (মুসলিম, হাদিস : ৪৮৬; ইবনু মাজাহ, হাদিস : ৩৮৪১; রিয়াদুস সালিহিন, হাদিস : ১৪৩০)

৫. আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা

আবি মুসা রা. বর্ণনা করেন, রসুল সা. সিজদায় এই দোয়া পড়তেন:
اللهمَّ اغفِرْ لي خطيئَتي وجَهلي ، وإسرافي في أمري ، وما أنت أعلمُ به مني ، اللهمَّ اغفرْ لي خطَئي وعَمْدي ، وهَزْلي وجِدِّي ، وكلُّ ذلك عندي
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলি খাত্বিয়াতি ওয়া ঝাহলি ওয়া ইসরাফি ফি আমরি ওয়া আংতা আ’লামু বিহি মিন্নি; আল্লাহুম্মাগফিরলি ঝিদ্দি ওয়া হাযলি ওয়া খাত্বায়ি ওয়া আ’মদি ওয়া কুল্লু জালিকা ইংদি; আল্লাহুম্মাগফিরলি মা ক্বাদ্দামতু ওয়া মা আখ্খারতু ওয়া মা আসরারতু ওয়া মা আ’লানতু, আংতাল মুকাদ্দিম ওয়া আনতাল মুওয়াখখির, ওয়া আনতা আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির।

দোয়াটির অর্থ হলো : হে আল্লাহ! তুমি আমার অসতর্কতাবশত কৃত গুনাহ, অজ্ঞতাবশত অপরাধ, আমার কাজের ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন এবং তুমি আমার ওই সমস্ত অপরাধও ক্ষমা করে দাও যে সম্পর্কে তুমি আমার চেয়ে অধিক অবগত আছ। হে আল্লাহ! তুমি আমার চেষ্টাপ্রসূত, হাসি-ঠাট্টাপ্রসূত, ভুলবশত এবং ইচ্ছাকৃত সকল গুনাহ মাফ করে দাও। (বুখারি, হাদিস : ৬৩৯৯)

নামাজের সিজদায় আল্লাহর কাছে দোয়া কবুল করা হয়, তাই আমাদের উচিত নবীজির শেখানো ভাষায় মনেপ্রাণে আল্লাহর কাছে সব আকুতি প্রকাশ করা। এসব দোয়া আমাদের জীবনের সকল সমস্যা থেকে মুক্তি, আত্মসমর্পণ ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সহায়ক পাথেয় হবে । ইনশাআল্লাহ

আল্লাহ তালায়া আমাদেরকে হাদিসে শেখানো দোয়াগুলো সিজদায় যথাযথ আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন ।