শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

ইসলাম ও জীবন

যে সময়ের স্বপ্ন অধিক সত্য হয়

স্বপ্ন মানুষের অবচেতন মনের এক গভীর প্রকাশ, যা অনেক সময় আমাদের কৌতূহল সৃষ্টি করে। ইসলামের দৃষ্টিতে স্বপ্নের তাৎপর্য রয়েছে এবং মুমিনদের স্বপ্ন বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। মহানবী সা. বলেছেন, মুমিনের স্বপ্ন সত্য হতে পারে, তবে কিছু স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকেও হতে পারে। তাই, স্বপ্নের মধ্যে ভালো-মন্দের পার্থক্য জানা গুরুত্বপূর্ণ। আজ আমরা জানবো কার স্বপ্ন বেশি […]

নিউজ ডেস্ক

১২ জানুয়ারী ২০২৫, ১৪:৪৯

স্বপ্ন মানুষের অবচেতন মনের এক গভীর প্রকাশ, যা অনেক সময় আমাদের কৌতূহল সৃষ্টি করে। ইসলামের দৃষ্টিতে স্বপ্নের তাৎপর্য রয়েছে এবং মুমিনদের স্বপ্ন বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। মহানবী সা. বলেছেন, মুমিনের স্বপ্ন সত্য হতে পারে, তবে কিছু স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকেও হতে পারে। তাই, স্বপ্নের মধ্যে ভালো-মন্দের পার্থক্য জানা গুরুত্বপূর্ণ। আজ আমরা জানবো কার স্বপ্ন বেশি সত্য হয় এবং কোন সময়ের স্বপ্ন সত্য হয়, ইনশাআল্লাহ।

স্বপ্ন তাৎপর্যহীন নয়
ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের স্বপ্ন তাৎপর্যহীন নয়, বরং মুমিনের স্বপ্ন বিশেষ গুরুত্ব রাখে। রসুলুল্লাহ সা. সত্য স্বপ্নকে নবুয়তের অংশ বলেছেন। আবু হুরায়রা রা. বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি, কেবল মুবাশশিরাত (সুসংবাদ) ছাড়া নবুয়তের আর কিছু অবশিষ্ট নেই। সাহাবিরা প্রশ্ন করেন, মুবাশশিরাত কী? তিনি বলেন, ভালো স্বপ্ন। (বুখারি শরিফ, হাদিস: ৬৯৯০) অন্য হাদিসে বিশ্বনবী সা. বলেন, মুমিনের স্বপ্ন নবুওতের ৪৬ ভাগের এক ভাগের সমান। (আবু দাউদ শরিফ, হাদিস: ৫০১৮)

যাদের স্বপ্ন সত্য হয়
নবী-রাসুলদের স্বপ্ন ছিল সন্দেহাতীতভাবে সত্য। তাঁদের স্বপ্ন ছিল ওহি। সহিহ বুখারির বর্ণনা মতে, নবীজির ওপর স্বপ্ন সত্যের মাধ্যমেই তাঁর ওপর ওহি নাজিলের সূচনা হয়েছিল। আর উম্মতের মধ্যে তাদের স্বপ্নই বেশি সত্য হয়, যারা কথা ও কাজে অধিক সত্যবাদী। নবী করিম সা. বলেছেন, সময় যখন কাছাকাছি হবে তখন মুসলিমের স্বপ্ন মিথ্যা হবে না এবং যে যত সত্যবাদী হবে তার স্বপ্নও তত সত্য হবে। স্বপ্ন তিন প্রকার: ১. উত্তম স্বপ্ন, যা আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ, ২. ভীতিপ্রদ স্বপ্ন, যা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে, ৩. যা মানুষ চিন্তা-ভাবনা ও ধারণা অনুপাতে দেখে থাকে। (আবু দাউদ শরিফ, হাদিস: ৫০১৯)

যে সময়ের স্বপ্ন সত্য হয়
দিন ও রাতের যেকোনো সময়ের স্বপ্ন সত্য হতে পারে। কোনো সময়কে সত্য স্বপ্নের জন্য নির্ধারণ করা হয়নি। তবে রাতের স্বপ্ন দিনের স্বপ্নের তুলনায় অধিক শক্তিশালী। আল্লামা মুহাম্মদ ইবনে সিরিন রহ. বলেছেন, দিনের স্বপ্ন রাতের স্বপ্নের মতো হয়। ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে উভয়ের বিধান এক। পুরুষ ও নারীর স্বপ্নের মধ্যেও কোনো পার্থক্য নেই। (তাফসিরুল আহলাম মিন কালামি আইম্মাতিল আলাম, পৃষ্ঠা-৯৩)

তবে মহানবী সা. এমন কিছু সময় উল্লেখ করেছেন, যেসব সময়ের স্বপ্ন অধিক সত্য হয়।

১. যখন দিন-রাতের পরিধি সমান হয়: যখন দিন ও রাতের ব্যাপ্তি সময় বা কাছাকাছি হয়, তখন মুমিনের স্বপ্ন সত্য হয়। রসুলুল্লাহ সা. বলেন, সময় যখন কাছাকাছি হবে তখন মুসলিমের স্বপ্ন মিথ্যা হবে না। (আবু দাউদ শরিফ, হাদিস: ৫০১৯) ইমাম বাগাভি রহ. এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন, বসন্ত ও শরৎকালের স্বপ্ন অধিক সত্য হয়। যখন গাছে ফল আসে ও তা পরিপক্ব হয়, তখন সময় নিকটবর্তী থাকে এবং দিন-রাতের পরিধি সমান থাকে। (তাজিলুস সুকয়া ফি তাবিরির রুয়া, পৃষ্ঠা-১৩)

২. শেষ রাতের স্বপ্ন: প্রাজ্ঞ আলেমরা বলেন, রাতের শেষ অর্ধাংশের স্বপ্ন বেশি সত্য হয়, চাই তা ফজরের আগে হোক বা পরে। কেননা এ সময় মহান আল্লাহ পৃথিবীর আসমানে অবতরণ করেন এবং এটা ফেরেশতাদের ছড়িয়ে পড়ার সময়। আর প্রথম অর্ধাংশের স্বপ্ন বেশির ভাগ সময় মিথ্যা হয়, কেননা এটি শয়তানের বিচরণ করার সময়। (তাজিলুস সুকয়া ফি তাবিরির রুয়া, পৃষ্ঠা-১৩) এ বিষয়ে বিশ্বনবী সা. বলেছেন, শেষ রাতের স্বপ্ন অধিক সত্য হয়। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস: ২২৭৪)

৩. কিয়ামতের পূর্ববর্তী সময়: কিয়ামতের পূর্বে মুমিনের স্বপ্ন অধিক পরিমাণে সত্য হবে। মহানবী সা. বলেছেন, যখন কিয়ামতের সময় নিকটবর্তী হবে, তখন মুমিনের স্বপ্ন খুব কমই মিথ্যা হবে। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস: ২২৭০) এর কারণ ব্যাখ্যায় আল্লামা সিন্ধি রহ. বলেন, কিয়ামত হলো সেই সত্য প্রকাশকারী, যা সব সত্য প্রমাণ করবে। সুতরাং যে জিনিস তার যত বেশি নিকটবর্তী হবে তা তত বেশি বাস্তব হবে। (মুসনাদে আহমদ (টীকা): ১৩/৮২)

যে সময়ের স্বপ্ন দ্রুত প্রতিফলিত হয়
আল্লামা দিনওয়ারি রহ. বলেন, প্রথম রাতের স্বপ্ন বিলম্বে বাস্তবায়িত হয়, রাতের অন্য অংশের তুলনায় শেষ অর্ধাংশের স্বপ্ন দ্রুত প্রতিফলিত হয়। সবচেয়ে দ্রুত প্রতিফলিত হয় সাহরির (শেষ রাত) সময়ের স্বপ্ন, বিশেষ করে ফজর উদিত হওয়ার সময়। (ফাতহুল বারি: ১৬/৩৩৯)

স্বপ্নের ব্যাপারে মহানবী সা.-এর হুঁশিয়ারি
আবু রাজিন উকাইলি রা. বলেন, রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, স্বপ্নের ব্যাপারে যে পর্যন্ত আলোচনা করা না হয়, সে পর্যন্ত এটা পাখির পায়ে (ঝুলে) থাকা জিনিসের মতো। আলোচনা করার সঙ্গে সঙ্গে তা যেন পা থেকে পড়ে গেল। তাই স্বপ্নদ্রষ্টা ব্যক্তি যেন জ্ঞানী ব্যক্তি অথবা পছন্দীয় ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো কাছে স্বপ্নের ব্যাপারে আলোচনা না করে।(তিরমিজি শরিফ, হাদিস: ২২৭৮)

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে স্বপ্নের তাৎপর্য বুঝে, তা সঠিকভাবে গ্রহণ ও বিশ্লেষণ করা এবং ভালো স্বপ্নে  আল্লাহর প্রশংসা করা ও খারাপ স্বপ্নে আল্লাহর আশ্রয় চাওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।

ইসলাম ও জীবন

রমজান মাসের ফজিলত ও আমলসমূহ

পবিত্র রমজান মাসের আগমন মুসলিমদের জন্য অপার আনন্দের বিষয়। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “বলুন, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে, তা এর চেয়ে উত্তম।” (সূরা ইউনুস: ৫৮)। আল্লাহর এই অনুগ্রহের তুলনা কোনো পার্থিব সম্পদের সঙ্গে হতে পারে না, কারণ এটি অনন্ত কল্যাণের প্রতীক। রাসূলুল্লাহ […]

নিউজ ডেস্ক

০২ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৫

পবিত্র রমজান মাসের আগমন মুসলিমদের জন্য অপার আনন্দের বিষয়। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “বলুন, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে, তা এর চেয়ে উত্তম।” (সূরা ইউনুস: ৫৮)। আল্লাহর এই অনুগ্রহের তুলনা কোনো পার্থিব সম্পদের সঙ্গে হতে পারে না, কারণ এটি অনন্ত কল্যাণের প্রতীক।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও রমজানের আগমনে অত্যন্ত আনন্দিত হতেন। তিনি সাহাবাদের বলতেন, “তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে। আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য সিয়াম পালন ফরজ করেছেন। এই মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের বন্দি করা হয়। এই মাসে রয়েছে একটি রাত, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। যে ব্যক্তি এই রাতের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে প্রকৃতপক্ষে সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো।” (নাসায়ী, হাদিস নম্বর: ২১০৬)।

রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত

১. সিয়াম ফরজ হওয়ার মাস
রমজান মাস ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ রোজার মাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার।” (সূরা আল-বাকারা: ১৮৩)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত। এর একটি হল রমজানের রোজা।” (সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর: ৮)।

২. কুরআন নাজিলের মাস
রমজান কুরআন নাজিলের মাস। আল্লাহ বলেন, “রমজান মাস, এতে নাজিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য দিশারি, স্পষ্ট নিদর্শন এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী।” (সূরা আল-বাকারা: ১৮৫)।

কুরআন কারিম সপ্তম আকাশের লাওহে মাহফুজ থেকে একসঙ্গে দুনিয়ার আকাশে বায়তুল ইজ্জতে নাজিল করা হয়েছিল, এরপর ধাপে ধাপে রমজান মাসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি অবতীর্ণ হতে শুরু করে।

৩. জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যখন রমজান মাস আসে, জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের বন্দি করা হয়।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর: ১০৭৯)।

৪. লাইলাতুল কদরের বরকতময় রাত
আল্লাহ বলেন, “লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ এবং রুহ (জিবরাইল) অবতীর্ণ হন প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে প্রত্যেক বিষয়ের জন্য। শান্তিই শান্তি, সেই রাত ফজর উদিত হওয়া পর্যন্ত।” (সূরা আল-কদর: ৩-৫)।

৫. রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “রমজান মাসে প্রত্যেক মুসলিমের দোয়া কবুল করা হয়।” (মুসনাদ আহমদ, হাদিস নম্বর: ৭০৮২)।

৬. রমজান পাপ মোচনের মাস
যারা সত্যিকারের খাঁটি অন্তরে ইবাদত করেন, তাদের জন্য এই মাস পাপ থেকে মুক্তির সুযোগ এনে দেয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের (আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য) সাথে রমজানের রোজা রাখবে, তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর: ২০১৪)।

৭. জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস
তিনি আরও বলেন, “রমজানের প্রথম রাতে শয়তান ও বিদ্রোহী জিনদের বন্দি করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। এ সময় একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দেন, ‘হে সৎকর্মপরায়ণ! তুমি অগ্রসর হও! হে পাপাচারী! তুমি বিরত হও!’ প্রতি রাতেই বহু মানুষকে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।” (তিরমিজি, হাদিস নম্বর: ৬৮২)।

৮. সৎকাজের প্রতিদান বৃদ্ধি
রমজান মাসে প্রতিটি সৎকর্মের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “রমজানে ওমরাহ করলে তা একটি হজের সমতুল্য।” (সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর: ১৭৮২)।

৯. ধৈর্য ও সবরের মাস
রমজান মাস আমাদের ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখায়। আল্লাহ বলেন, “ধৈর্যশীলদের জন্য বিনা হিসেবে পুরস্কার রয়েছে।” (সূরা আজ-জুমার: ১০)।

১০. মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের মাস
এই মাস মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সংহতির শিক্ষা দেয়। একে অপরকে সাহায্য করা, দান-সদকা বাড়ানো, গরিবদের পাশে দাঁড়ানো—এসব কাজ রমজান মাসে আরও বৃদ্ধি পায়।

আমাদের কর্তব্য কী?

রমজান মাসের এই বিশাল নেয়ামত ও ফজিলতকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে আমাদের অবশ্যই সৎকর্মে ব্রতী হতে হবে। যথাযথভাবে রোজা পালন, বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত, তওবা-ইস্তিগফার, তাহাজ্জুদ ও নফল ইবাদতে মনোনিবেশ করতে হবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি রমজান মাস পেল অথচ তার গুনাহ ক্ষমা করিয়ে নিতে পারল না, তার জন্য ধ্বংস অনিবার্য।” (তিরমিজি, হাদিস নম্বর: ৩৫৪৫)।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে পবিত্র রমজানের ফজিলত অনুধাবন করে যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আন্তর্জাতিক

পবিত্র রমজান উপলক্ষে আরব আমিরাতে ক্ষমা পাচ্ছেন ১৫১৮ জন কারাবন্দি

পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের শাসক শেখ মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম তার মহানুভবতার আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি বিভিন্ন অপরাধে দণ্ডিত ১ হাজার ৫১৮ জন কারাবন্দিকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তারা এই পবিত্র মাসটি পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারেন। এই মানবিক সিদ্ধান্ত দুবাইয়ের জনগণের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং বন্দিদের […]

পবিত্র রমজান উপলক্ষে আরব আমিরাতে ক্ষমা পাচ্ছেন ১৫১৮ জন কারাবন্দি

ছবি : সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩:২৫

পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের শাসক শেখ মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম তার মহানুভবতার আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি বিভিন্ন অপরাধে দণ্ডিত ১ হাজার ৫১৮ জন কারাবন্দিকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তারা এই পবিত্র মাসটি পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারেন। এই মানবিক সিদ্ধান্ত দুবাইয়ের জনগণের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং বন্দিদের পরিবারগুলো আশার আলো দেখতে পেয়েছে।

দুবাইয়ের অ্যাটর্নি জেনারেল চ্যান্সেলর ইশাম ইশা আল-হুমাইদান জানান, শেখ মুহাম্মাদের এই মহানুভবতা শুধুমাত্র আইনি সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি তার উদারতার প্রতিফলন। রমজানের পবিত্রতা ও ক্ষমার বার্তাকে সম্মান জানিয়ে এই বন্দিদের মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দুবাই পাবলিক প্রসিকিউশন পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে ইতোমধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যাতে দ্রুততম সময়ে মুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন করা যায়।

শেখ মুহাম্মাদের এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই উদাহরণ হিসেবে দেখছেন, যা কেবল আইনি শাস্তি লাঘব নয়, বরং সমাজে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়তা করে এবং অপরাধীদের জন্য একটি নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে, যাতে তারা পুনরায় সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে ফিরে যেতে পারে।

এদিকে, আবুধাবিভিত্তিক আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ১ মার্চ থেকে আরব বিশ্বে পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সংস্থাটির পরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওদেহ বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি আরব বিশ্বের কিছু এলাকায় চাঁদ দেখা যেতে পারে। যদি চাঁদ দেখা যায়, তাহলে ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই রমজান শুরু হবে। তবে যদি চাঁদ দেখা না যায়, তাহলে ২ মার্চ থেকে শুরু হবে পবিত্র এই মাস।

আরবি বর্ষপঞ্জিকার নবম মাস রমজান মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাস, যখন সারা বিশ্বের মুসলিমরা সংযম পালন করেন এবং ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন থাকেন। এই মাসটি কেবল আত্মশুদ্ধি ও ইবাদতের জন্য নয়, বরং দান-খয়রাত ও সমাজের অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোরও সময়। শেখ মুহাম্মাদের এই সিদ্ধান্ত সেই মানবিকতারই এক উজ্জ্বল উদাহরণ। তার এই উদ্যোগ শুধু সংযুক্ত আরব আমিরাতে নয়, বরং সারা বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে, যা দানশীলতা ও ক্ষমার মহান শিক্ষা বহন করে।

০২ মে ২০২৫
poll_title
দুইজন ভারতীয়কে বাংলাদেশে ধরে নিয়ে আসার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?

মোট ভোট: ৯৬৩

ইসলাম ও জীবন

‘মজলুমকে সাহায্য করা সর্বোত্তম ন্যায়বিচার’

মজলুম তারাই যারা শোষণ বা অবিচারের শিকার বা জোর খাটিয়ে যাদের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে বা যাদেরকে পুরোপুরি নানা ন্যায্য অধিকার দেয়া হচ্ছে না।

নিউজ ডেস্ক

০৭ মার্চ ২০২৫, ১১:৩০

মজলুমকে রক্ষা করা এমন একটি বিবেক-সম্মত ও সহজাত বিষয় যার ওপর ইসলাম বেশ জোর দিয়েছে।

মজলুম তারাই যারা শোষণ বা অবিচারের শিকার বা জোর খাটিয়ে যাদের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে বা যাদেরকে পুরোপুরি নানা ন্যায্য অধিকার দেয়া হচ্ছে না। এখানে মজলুমদের সহায়তা সম্পর্কিত কয়েকটি হাদিস তুলে ধরা হল:

১. মহানবী-স. বলেছেন, যে জালিমের কাছ থেকে মজলুমের জন্য প্রতিশোধ নেবে সে বেহেশতে আমার সঙ্গী হবে।
২. মহানবী-স. বলেছেন, জুলুম করার ব্যাপারে ও মজলুম হওয়ার ব্যাপারে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাও।
৩. আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী-আ. বলেছেন, তোমরা সব সময় জালিমের কঠোর শত্রু ও মজলুমের সাহায্যকারী হও।
৪. মজলুমকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে সর্বোত্তম ন্যায়বিচার।
৫. আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী-আ. বলেছেন, সর্বোত্তম শাসক তিনি যিনি জুলুমকে ধ্বংস করেন ও ন্যায়বিচারের পুনরুজ্জীবন ঘটান।
৬.ইমাম জাইনুল আবেদিন তথা ইমাম সাজ্জাদ অ. (ইমাম হুসাইনের-আ. পুত্র) বলেছেন, হে আল্লাহ জালিমের সহায়তা করা থেকে ও মজলুম হওয়া থেকে এবং দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য করা ছাড়াই পরিত্যাগ করা ও যাতে আমার অধিকার নেই তা চাওয়া থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাইছি।
৭. ইমাম বাকির আ. বলেছেন, হে আমার সন্তান! তার ওপর জুলুম করা থেকে বিরত থাক আল্লাহ ছাড়া যার আর সহায়তাকারী নেই।

সূত্রঃ পার্সটুডে