ভোটে জিতলে নিজ সংসদীয় এলাকার জন্য কী কী করবেন এর লম্বা ফিরিস্তি তুলে ধরেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী ও সাবেক এমপি রুমিন ফারহানা। একই সঙ্গে তিনি ভোট না হলে কী হবে সে বিষয়েও নিজের কথা তুলে ধরেছেন।
বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। শুক্রবার (২৯) তিনি এসেছিলেন নিজ সংসদীয় আসন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ)-এর সরাইল উপজেলায়।
বিকেলে সেখানকার অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির কর্মী সমাবেশে এসব বিষয়ে কথা বলেন।
তবে কর্মিসভায় জেলা ও উপজেলা বিএনপির একটি অংশ উপস্থিত ছিল না। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক, সদস্যসচিবসহ বড় অংশকে এতে দেখা যায়নি। তবে আহ্বায়ক কমিটির একাধিক সদস্যসহ সাবেক নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন।
রুমিন ফারহানা মূলত একটি পক্ষের সমর্থন নিয়ে নিজ সংসদীয় এলাকায় নির্বাচনকেন্দ্রিক নিজের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মাসখানেক ধরে তিনি প্রতি সপ্তাহেই সরাইল ও আশুগঞ্জে দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। সম্প্রতি এক সভায় তিনি জানিয়েছিলেন, গণতন্ত্র ফিরে আসায় এখন তার গাড়ির চালক, পাঁচক (রান্না করার মহিলা) ভোটে দাঁড়াতে চায়।
শুক্রবারের কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ‘সবাই এখন ঐক্যবদ্ধ থাকার সময়।
ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি। আমরা ঐক্যবদ্ধ থেকে একটি নির্বাচন যদি আদায় করতে না পারি, তাহলে আন্দোলনের বিজয় ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রকারীর শক্তি বিএনপিকে পরাজিত করতে পারবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কোনোভাবে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। বিএনপি আশা করে এই সরকার গণমানুষের দাবির প্রতি লক্ষ্য রেখে দ্রুত একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আয়োজন করবে।
বিএনপি আর কোনো ষড়যন্ত্র দেখতে চায় না। আরেকবার ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শুনতে চায় না। বিএনপি চায় না নির্বাচনকালীন সময় ব্যবহার করে আবারও কোনো দুষ্কৃতকারী বাংলাদেশের মানুষের ঘাড়ে চেপে বসে।’
বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম-নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এমন কোনো দিন নেই বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি আর হামলা হয়নি।
কিন্তু সব জুলুমেরই শেষ আছে। আওয়ামী লীগ মনে করেছিল যত দিন তারা বেঁচে থাকবে, তত দিন তারাই ক্ষমতায় থাকবে। দেশের মানুষ তাদের জবাব দিয়ে দিয়েছে। মানুষের সমর্থন ও ভালোবাসা যদি থাকে, তাহলেই রাজনীতি করা যায়।’
এ সময় রুমিন ফারহানা আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারলে নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করার ঘোষণা দেন। এর মধ্যে ছিল একাধিক বড় সেতু ও উল্লেখযোগ্য কিছু সড়ক নির্মাণের কথা। নারী সংসদীয় আসনের এমপি থাকাকালে যেসব উন্নয়ন করা সম্ভব হয়, সেগুলোও তিনি তুলে ধরেন।
সরাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ বি এম মোমিনুল হক, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফুজায়েল চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তারা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।