জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে ঐকমত্য কমিশন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম জানান, বৈঠকে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন এবং ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনর্গঠনের চলমান প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রধানরা বৈঠকে তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেছেন এবং দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষ থেকে তিনি স্পষ্ট করেন যে, গণ-অভ্যুত্থানের পর যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, সেই সরকারের মেয়াদকালেই বিচার ও মৌলিক সংস্কারের ভিত্তি স্থাপন করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত করা জরুরি। এই সনদ বাস্তবায়িত হলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিদ্যমান মতপার্থক্য দূর হবে এবং সংস্কারের ধারা সুস্পষ্ট হবে।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, পার্লামেন্টে কোনো সংস্কার টেকসই করতে হলে তা গণপরিষদের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় এই পরিবর্তন দীর্ঘস্থায়ী হবে না। তিনি জানান, জাতিসংঘ মহাসচিবও বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে ভবিষ্যতে গণতন্ত্র আরও সুসংহত হয়।
সংবিধান সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, নির্বাচনকে তারা সংস্কারের অংশ হিসেবেই দেখছেন। তবে প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচনই কার্যকর হবে না বলে মত দেন তিনি। সব রাজনৈতিক দলই এ বিষয়ে একমত, তবে মতপার্থক্য রয়েছে কোন সংস্কার আগে হবে এবং কোনগুলো পরবর্তীতে বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই মতপার্থক্য দূর হবে।
বিচারপ্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, জাতিসংঘের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে এবং জাতিসংঘকে এই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, জাতিসংঘের সক্রিয় সহযোগিতা সংস্কার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বৈঠক শেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক ছিল বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সংলাপ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সংবিধান সংস্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সময় কোনো বিষয় নয়, নিরপেক্ষ নির্বাচনই আসল কথা। তাঁর এই বক্তব্যে আপনার সমর্থন আছে কি?