বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, “আমাদেরকে আসনের প্রলোভন দেখিয়ে কেনার চেষ্টা করবেন না। কোনো রাজনৈতিক দল, এমনকি শেখ হাসিনাও আমাদের তরুণ প্রজন্মকে রাজপথ থেকে সরাতে পারেনি। আমরা আমাদের আদর্শে অবিচল। পার্লামেন্টে সিট দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের নীতিকে কেনা যাবে না।”
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে চুয়াডাঙ্গার জেলা শিল্পকলা একাডেমির মুক্তমঞ্চে জাতীয় নাগরিক কমিটির আয়োজনে চুয়াডাঙ্গা রাইজিং সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন,
“তরুণরা কেবল ভোটের জন্য জীবন দেয়নি।
তাদের ভাবনা, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা বুঝতে প্রবীণ রাজনীতিকরা ব্যর্থ হয়েছেন। এখন তারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র করছেন।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “খুনি হাসিনা, ওবায়দুল কাদের এবং আসাদুজ্জামান কামাল খানের মতো অপরাধীদের আগে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তাদের বিচার না হলে কোনো আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না। এর আগে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে কি না, সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হবে না।”
তরুণদের চেতনা ও আদর্শের পক্ষে এই বক্তব্য নতুন করে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বক্তৃতায় হাসনাত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন এবং তরুণ প্রজন্মের শক্তিকে মূল রাজনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরেছেন।
প্রবীণ রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি গত ১৬ বছরে অনেক ত্যাগ এবং নির্যাতনের মধ্য দিয়ে আপনাদের যেতে হয়েছে। আপনাদের যে ত্যাগ-অভিজ্ঞতা এবং তরুণদের ভয়হীন মনোবল রয়েছে এই দুটোর সমন্বয়ে ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই, বিদেশ থেকে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সবাইকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা একটি সম্ভাবনাময় জেলা। কিন্তু এখানে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। কেন হয়নি আপনারা জানেন। বিগত ১৬ বছর সারাদেশের মানুষের মতো এখানকার মানুষও ভোট দিতে পারেনি। চুয়াডাঙ্গা সীমান্তবর্তী একটি জেলা। এ জেলার বিপরীতে ভারতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে আছেন। তিনি মাঝে মধ্যে আমাদেরকে ভয় দেখান, যে তিনি টুপ করে এদেশে ঢুকে পড়বেন। সেটা যাতে না করতে পারে, সেকারণে আপনাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে সজাগ থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের সজাগ থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের পূণর্বাসনের প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই। আমরা সার্ভিস ওরিয়েন্টেড বাংলাদেশ চাই।
স্থানীয় সংগঠক সাফফাতুল ইসলামের সঞ্চালনায় চুয়াডাঙ্গা রাইজিং সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গার আহ্বায়ক আসলাম হোসেন অর্ক।
এ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম, মোল্লা এহসান, আশরেফা খাতুন।
স্থানীয়দের মধ্যে বক্তব্য দেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দামুড়হুদার সংগঠক আ. রহিম, আ. রাকিব, চুয়াডাঙ্গার কাজল, দর্শনার আবিদুর রহমান রিফাত, কুষ্টিয়া জেলার সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ইসরাফিল হোসেন, জীবননগরের পারভেজ প্রমুখ।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এ বছরের শেষ দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ বছরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনিও মনে করেন?