সজিব রেজা, দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুরে গোর-এ-শহীদ (বড় মাঠে) আজ শনিবার (২৫ শে জানুয়ারি) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর দিনাজপুর জেলা শাখার উদ্যোগে এক বিশাল কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান কয়েকদিন থেকে দিনাজপুর জেলা কর্মী সম্মেলন সফল করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামীর জেলা উপজেলা নেতা কর্মীরা ব্যাপক প্রচারনা চালায়। প্রত্যেকটা উপজেলা তে কর্মী সম্মেলন সফল করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর নেতা কর্মীরা শোডাউন করে। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে দিনাজপুর জেলার সকল নেতা কর্মী সম্মেলনে জড়ো হতে শুরু করেন। পুরো মাঠ নেতা কর্মী দ্বারা কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
দুপুরে সকল নেতা কর্মীর উদ্দেশ্যে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান প্রথমে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে বলেন, যে রব্বুল আলামিন ছাত্র জনতার নেতৃত্বে ২৪ এর জুলাই আগষ্টে বাংলাদেশের জনগনকে শান্তি এবং মুক্তির স্বাদ দিয়েছে আলহামদুল্লিাহ্। আমাদের গর্বিত সন্তানরা জীবন বাজি রেখে সেদিন গুলির সামনে বুক পেতে দিয়ে যে লড়াই করেছিলো সে লড়াইয়ের ফসল আজকের নতুন বাংলাদেশ। তিনি জুলাই আগষ্টে আহত এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে এবং সকলের জন্য দোয়া করেন।
তিনি বলেন, আপনারা বড় মজলুম ছিলেন। পুরো সংগঠনটাই মজলুম ছিলো। একে একে চোখের সামনে আমাদের শীর্ষ এগারোজন দায়িত্বশীল নেতাকে দুনিয়া থেকে নির্মম ভাবে বিদায় করা হয়। ৫ জন কে ফাঁসির কাস্টে ঝুলানো হয়েছে। বাকিদের কে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। শহীদ আমীরে জামাত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী থেকে শুরু করে সাবেক আমীরে জামাত অধ্যাপক গোলাম আজম এবং কুরআনের পাখি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ সকলের প্রতি নির্মম আচারণ করা হয়েছে।
তাদেরকে মিথ্যা অভিযোগে সাজানো আদালতে পাতানো স্বাক্ষী দিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় করা হয়েছে। তাদের অপরাধ ছিলো তারা দেশকে ভালোবাসেন। বিগত খুনি ডাকাতরা এসব ভালো মানুষদেরকে সহ্য করতে পারে নাই। তিনি আরো বলেন বিগত সময় তারা আমাদের উপর অমানবিক অত্যাচার করেছে । তারা বাংলাদেশে আমাদের সব কার্যালয় বন্ধ করে দেয়। আমাদেরকে তারা নিষিদ্ধ করে দেয় সাথে লক্ষ লক্ষ মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের ভাইবোন সন্তানকে তারা জেলে নিক্ষেপ করেছে এবং তারা গুম খুন চালিয়েছে।
কোলের শিশু থেকে ৭০ বছর বৃদ্ধ কেউ রেহাই পাইনি তাদের হাত থেকে। তিনি বিগত সরকার এর কথা উল্লেখ করে বলেন, তারা বলতেন গনতন্ত্রের দরকার নাই উন্নয়ন হলেই চলবে। উন্নয়ন করতে গিয়ে তারা রোডের বদলে বাঁশ উপহার দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন একমাত্র সতন্ত্র সরকারই পারবে বিগত সালে কার কার উপর অত্যাচার হয়েছে তা বের করতে। সরকারেরর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আপনারা অনেকগুলো সংস্কারের বিষয়ে হাত দিয়েছেন এবং যতটা সম্ভব আপনারা করুন।
তবে গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশের মানুষ যাদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে যারা খুন, ধর্ষণ, লুটপাট,দখল চাঁদাবাজি করে জলুম করেছে তাদের নামের কালো তালিকা প্রকাশ করে জনগনের সামনে দেন। জনগন তাদের চিনুক। অন্যদিকে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের সকল নাগরিকের এই দেশে বসবাস করার বৈধ্য অধিকার রয়েছে। এইদেশে যেই জন্মগ্রহন করেছে বাংলাদেশের সংবিধান তাকে সমান অধিকার দিয়েছে। অন্য ধর্মের সকলে আপনারা আমাদের ভাইবোন আমরা সকলে গর্বের সঙ্গে এক সাথে বসবাস করতে চাই। উক্ত কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা আবদুল হালিম (সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী), অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন (কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী), অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল (কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী), মোঃ দেলোয়ার হোসেন (কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির)। এবং উক্ত কর্মী সম্মেলনে সভাপতি করেন অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান (আমীর, দিনাজপুর জেলা)

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এ বছরের শেষ দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ বছরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনিও মনে করেন?