বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আর কোনো স্বৈরাচারকে আমরা থাকতে দিব না। ভোট দিতে হবে, নির্বাচন দিতে হবে। এমন কোনো বুদ্ধিমান ব্যক্তি হয় নাই, উনারা বসে সংস্কার করবেন আর বাংলাদেশ ৪০/৫০ বছর এভাবে চলবে। নির্বাচনকে দীর্ঘায়িত করে ষড়যন্ত্র চলবে না। সবাই ভোট দেওয়ার অপেক্ষায় আছে। এখানে মাঝখানে কেউ এসে খেলাধুলা করবেন, ভোট পিছিয়ে দেবেন, বিলম্বিত করবেন, সেসব চেষ্টা করে লাভ হবে না।
সোমবার বিকেলে নগরীর মাঝিরঘাট এলাকায় মহানগর শ্রমিক দলের আয়োজনে শ্রমিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্ল্যাহসহ শ্রমিক দলের নেতারা।
আমীর খসরু বলেন, শ্রমিকদের অনেক সমস্যা আছে, মিল, কারখানা ও বন্দরে সমস্যা আছে। আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আমরা সকল শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বসে সমস্যার সমাধান করব। ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবে শ্রমিকদের সমস্যার কথা পরিষ্কার ভাবে বলা হয়েছে ও সমাধানের কথা বলা হয়েছে।
বিগত ফ্যাসিস্টদের পতনের মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রবর্তন করা জানিয়ে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক উপায়ে বাংলাদেশে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সংসদে যাবেন, সরকার গঠন করবেন, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহি থাকবে। শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল সে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ ছিল না। জনগণের কাছে জবাবদিহি ছিল না। কারণ সে অনির্বাচিত, সে দখলবাজ ও স্বৈরাচার। বিএনপির বার্তা পরিষ্কার- বাংলাদেশে আর কোনো স্বৈরাচারকে ক্ষমতা দখল করে থাকতে দেব না। স্বৈরাচার বহুরূপে আছে। অনেকে ভোট নিয়ে স্বৈরাচার হয়ে যায়, ভোট নেওয়ার আগে স্বৈরাচার হয়ে যায়। অনেকে আন্দোলনকে হাইজ্যাক করে স্বৈরাচার হয়ে যায়। কোনো স্বৈরাচার আর বাংলাদেশে থাকতে পারবে না।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশের আজকে গণতন্ত্রের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। বাংলাদেশে নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এগুলো ঠেকিয়ে আবার বহুরূপে ভিন্নরূপে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকার পাঁয়তারি করলে সেটা চলবে না। আগেভাগে বলে দিচ্ছি, বড় বড় স্বৈরাচারকে বাংলাদেশের মানুষ বিতাড়িত করেছে। ওই প্রক্রিয়া সেই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন রূপে , বহুরূপীভাব দিয়ে আর স্বৈরাচারকে আমরা থাকতে দিব না। ভোট দিতে হবে, নির্বাচন দিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে।
সমস্ত আন্দোলন বাংলাদেশে হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য। আজ সেই গণতন্ত্র অপেক্ষায় আছে, ভোটাধিকার ও মানবাধিকার অপেক্ষায় আছে। জীবনের নিরাপত্তা মানুষ চায়। সুতরাং কিছু মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ কোন পথে যাবে, সেটা কি জনগণ গ্রহণ করবে? যত সংস্কারের প্রয়োজন তত সংস্কার বাংলাদেশের সংসদে বিএনপি এবং আমাদের সহযোগী দল করবে। ৩১ দফার মধ্যে সব সংস্কার অর্ন্তনিহিত আছে। জনগণের রায় দিয়ে সংসদে আমরা সেসব সংস্কার করব। এমন কোনো বুদ্ধিমান ব্যক্তি হয় নাই, উনারা বসে সংস্কার করবেন আর বাংলাদেশ ৪০/৫০ বছর এভাবে চলবে। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। প্রতিনিয়ত সংস্কার হতে হবে। সংস্কারের দোহাই দিয়েন না জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা নির্বাচনী সংস্কারটা করেন। আর কোনো সংস্কার করা কারও কোনো অধিকার নাই। জনগণের রায় নিতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে। অন্য কোনো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হবে না।
আমীর খসরু বলেন, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় অব্যাহতভাবে থাকার চেষ্টা করলে বাংলাদেশের জনগণ সেটা মেনে নেবে না। রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। জনগণের প্রতিনিধিরাই সংসদে যাবেন। যারা জনগণের কাছে যাবেন না তারা আগামীর বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। নির্বাচনী হাওয়া শুরু হয়ে গেছে। এ হাওয়া কেউ বন্ধ করতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন ও সংসদ চায়।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সময় কোনো বিষয় নয়, নিরপেক্ষ নির্বাচনই আসল কথা। তাঁর এই বক্তব্যে আপনার সমর্থন আছে কি?