বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

জাতীয়

ছাপাখানা ব্যর্থ হলে বইয়ের কাজ পাবে সেনাবাহিনী

দরপত্র বাতিল, পুনর্দরপত্র আহ্বান ও বইয়ের বিভিন্ন কন্টেন্ট পরিবর্তন করে আগামী শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়াসহ নানা চ্যালেঞ্জে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। দেরিতে শুরু করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে এখন এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদেরও ব্যস্ত সময় কাটছে। ছাপাখানা মালিকরা অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন পুনর্দরপত্র ও দেরিতে কার্যাদেশ অনুমোদনের কারণে নতুন বই […]

নিউজ ডেস্ক

২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১:২৮

দরপত্র বাতিল, পুনর্দরপত্র আহ্বান ও বইয়ের বিভিন্ন কন্টেন্ট পরিবর্তন করে আগামী শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়াসহ নানা চ্যালেঞ্জে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। দেরিতে শুরু করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে এখন এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদেরও ব্যস্ত সময় কাটছে। ছাপাখানা মালিকরা অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন পুনর্দরপত্র ও দেরিতে কার্যাদেশ অনুমোদনের কারণে নতুন বই জানুয়ারির এক তারিখে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এনসিটিবি বলছে জানুয়ারির এক তারিখেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই চলে যাবে।

যদি কোনো ছাপাখানা মালিক এর ব্যত্যয় করে তবে সরাসরি পারচেজের (ডিপিএম) মাধ্যমে আর্মি প্রিন্টিং প্রেস বই ছাপিয়ে বই সরবরাহ করবে। এর ফলে পুস্তক প্রেস মালিকদের কপালে যে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে, সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান ড. রিয়াজুল হাসান জানান, চলতি মাসের নভেম্বরের মধ্যেই ৭০টি লটে প্রায় ৪ কোটি বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে যাবে। এই লটে রয়েছে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই। এরমধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ অন্যান্য বইয়ের কাজও শেষ হবে। প্রাথমিকের অন্য যে লটের বই বাকি থাকবে, অর্থাৎ চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই- সেটিও ডিসেম্বরের ২০ তারিখের মধ্যে জেলা উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।

প্রতিবছর জুন মাসে বই ছাপার প্রক্রিয়া শুরু হলেও এবার তা হয়নি। যে কারণে শেষ সময়ে যে কাজের চাপ বাড়বে- সেটি নিয়ে মুদ্রাকর, পুস্তক প্রেস মালিক ও এনসিটিবি কর্মকর্তাদেরও কোনো দ্বিমত নেই। কারণ নভেম্বরের শেষ সপ্তাহেও নবম ও দশম শ্রেণির বইয়ের দরপত্রের কাজই শেষ হয়নি।

এ বিষয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান জানান, অনেক প্রতিষ্ঠান দরপত্রের মধ্য দিয়ে কাজ পেয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে তাদের কাজের মান খারাপ। বা নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে পারবে না। এমনটি দেখলে বসে থাকবে না বোর্ড। সেক্ষেত্রে ডিপিএমের (ডিরেক্ট পারচেজ ম্যানেজমেন্ট) মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে বই ছাপানোর কাজ দেওয়া হবে। এ বছর যদিও তারা এক কোটি বই ছাপানোর কাজ করছে। কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে তাদেরকে আরও ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি বই ছাপানোর দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
বইয়ের মান ভালো হবে, নেওয়া হচ্ছে ব্যবস্থা ॥ গত কয়েক বছর অসাধু ব্যবসায়ী ও সরকারের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার মধ্যস্থতায় নিম্নমানের বই দেওয়ার চল শুরু হয়েছিল। এ নিয়ে তৈরি হয়েছে বড় সিন্ডিকেট। কিন্তু এবার এই সিন্ডিকেট ভাঙতে চাইছে এনসিটিবি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বই উৎপাদন ও মান নিয়ন্ত্রণের সবকিছুই ছিল প্রেস মালিকদের হাতে। তারাই নিম্নমানের বই ছাপত। তাদের কোম্পানিই মান সঠিক বলে ছাড়পত্র দিত। এক্ষেত্রে এনসিটিবির দায়িত্বশীলদের অবহেলাও অস্বীকার করার সুযোগ নেই। এ প্রসঙ্গে এনসিটিবি চেয়ারম্যান জনকণ্ঠকে বলেন, আগে যারা অসৎ প্রেস মালিক ছিল তাদেরকে জরিমানা বা তিরস্কার না করে বরং পুরস্কার দেওয়া হতো।

ছোটখাটো কিছু প্রেসকে লোক দেখাতে কালো তালিকাভুক্ত করত। এবার এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে চায় এনসিটিবি। এরই মধ্যে আনন্দ পাবলিশার্স নামের একটি কোম্পানির যন্ত্রাংশের ত্রুটি ও কাজের মানের কারণে শোকজ করা হয়েছে। এই পাবলিশার্সটি আওয়ামী লীগ আমলের সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের ভাই রাব্বানী জব্বারের। দীর্ঘদিন তারা পাঠ্যবইয়ের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত ছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে। এনসিটিবি বলছে ৬ষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বইয়ের কাজও দুর্দান্ত গতিতে চলছে। নবম ও দশম শ্রেণির দরপত্রের কাজ শেষ করে এটিও দ্রুত ছাপা হওয়া শুরু হবে।

তবে এ বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ছাপাখানা মালিকরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলছেন, এনসিটিবি মনে করছে কম্পিউটারে একটি টিপ দিলেই বই ছাপা হয়ে বের হয়ে যায়। বিষয়টি এত সহজ হবে না। সময় না দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে বই হাতে পাওয়ার বিষয়টি অকেকটা মেঘ না চাইতে জলের মতো।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান জানান, বিনামূল্যের বইয়ে কাগজের যে

উজ্জ্বলতা ও যে মান দেওয়ার কথা, বিগত সালগুলোতে তা দেওয়া হচ্ছিল না। এবার প্রাথমিকের চার রঙা বইয়ের উজ্জ্বলতা ৮৫ জিএসএম (গ্রাম পার স্কোয়ার মিটার) ও মাধ্যমিকের ৮২ জিএসএম দরপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। বিগত সময়েও এমন ছিল। কিন্তু সেটির বাস্তবায়ন ছিল না। যে কারণে বিনামূল্যের এসব বই ৬ মাস ৮ মাসেই পড়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ত। কিন্তু এবার আশা করা যাচ্ছে বইয়ের মান ভালো হবে। এ বিষয়ে এনসিটিবির আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকা উচিত বলেও তিনি মনে করেন।

বইয়ের সংখ্যা বাড়ছে সঙ্গে খরচও ॥ গত বছরের চেয়ে এবার পাঠ্যপুস্তক ছাপাতে ৭৮৩ কোটি টাকা বেশি খরচ হবে। এর জন্য এনসিটিবি দশম শ্রেণির বই ছাপানোর বিষয়কে কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছর ১০ম শ্রেণিতে কোনো বই ছিল না। এর আগে সৃজনশীল পদ্ধতিতেও ১০ম শ্রেণিতে বই লাগত না। নবম-দশম পাঠ্যবই একই ছিল। এবং সেটি পড়েই শিক্ষার্থীরা এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিত। কিন্তু এবার দশম শ্রেণির জন্য অতিরিক্ত সোয়া ৫ কোটি বই ছাপাতে হচ্ছে। যার জন্য খরচ পড়বে অন্তত সাড়ে ৪শ কোটি টাকা। তবে আগামীবার দশম শ্রেণির জন্য আলাদা বই ছাপাতে হবে না বলেও সংশ্লিষ্টরা জানান।
হবে না বই উৎসব, বই পাওয়া যাবে অনলাইনে।

প্রতি বছরের মত ঘটা করে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হলেও আগামী বছরের জানুয়ারির এক তারিখে বই উৎসবের আয়োজন করছে না এনসিটিবি। ডিসেম্বরের ৩০ বা ৩১ তারিখ এনসিটিবি তাদের ভবনে সংবাদ সম্মেলন করবে বলে জানানো হয়েছে। এদিন শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ও সাংবাদিকরা উপস্থিত থাকবেন বলে এনসিটিবির পরিকল্পনায় রয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আগেই এনসিটিবির ওয়েবসাইটে সব শ্রেণির বইয়ের পিডিএফ ফাইল আপলোড করা হবে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এই বই পড়ে তাদের মতামত জানাতে পারবেন। এ ছাড়া কোনো ভুলত্রুটি থাকলে সে বিষয়েও প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয়

যে ট্রাভেল কোম্পানির মাধ্যমে দেশ ছেড়েছেন নেতারা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির অনেক নেতাকর্মী বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ছাড়াও বিভিন্ন দেশে চলে গেছেন। এসব নেতাদের অনেকেই ‘দি সিটি ট্রাভেলস’ নামে একটি ট্রাভেল কোম্পানির সহযোগিতায় দেশ ত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। দেশত্যাগ করা এসব নেতাকর্মীরা সবাই ছাত্র হত্যার আসামি। জানা […]

নিউজ ডেস্ক

১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১০

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির অনেক নেতাকর্মী বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ছাড়াও বিভিন্ন দেশে চলে গেছেন। এসব নেতাদের অনেকেই ‘দি সিটি ট্রাভেলস’ নামে একটি ট্রাভেল কোম্পানির সহযোগিতায় দেশ ত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। দেশত্যাগ করা এসব নেতাকর্মীরা সবাই ছাত্র হত্যার আসামি।

জানা গেছে, ‘দি সিটি ট্রাভেলস’ এর মালিক গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার বাসিন্দা হাফেজ নুর মোহাম্মদ। তিনি বিগত সরকারের আমলে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘনিষ্ঠজন। তবে সরকার পতনের পর ভোল পাল্টে নুর মোহাম্মদ হয়ে গেছেন জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাভার শাখার সভাপতি। সাভারের কাছে একটি নির্মাণাধীন ভবনে বর্তমানে তার ট্রাভেল কোম্পানির মাধ্যমে ওমরাহ বুকিং দিচ্ছেন।

তবে ভবনের ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে লম্বা সড়ক, যেন কোনো আবাসিক এলাকা। দুই পাশে প্লট। কয়েকটি ভবনে চলছে নির্মাণকাজ। গড়ে উঠছে সুউচ্চ ভবন। আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়েই গড়ে তুলেছেন ‘জমজম নূর সিটি’ নামে এই আবাসিক এলাকা।

ঢাকার নিকটবর্তী সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের কোন্ডা, কোটিপাড়া এলাকায় গত পাঁচ-ছয় বছর আগে গড়ে ওঠে বিতর্কিত জমজম সিটি। ধলেশ্বরী নদীর শাখা বামনি খালের জলাধার ও পানি চলাচলের জলাভূমির ওপর বালু ভরাট করে গড়ে তোলা হয় এ প্রকল্প। স্থানীয়দের বাধাসহ নানা অভিযোগের জেরে আদালত, পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজউক এ প্রকল্পকে অবৈধ ঘোষণা করে কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এসব নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে আবাসন প্রকল্প বর্ধিত করার কাজ।

সম্প্রতি সরেজমিন প্রকল্পটিতে গিয়ে ফটকের ছবি তুলতেই এগিয়ে আসেন একজন নিরাপত্তারক্ষী। পেছনে পেছনে এগিয়ে আসেন প্রকল্পের একজন পরিচালক ও কয়েকজন সাঙ্গোপাঙ্গ। উত্তেজিত হয়ে ছবি তোলায় বাধা দিতে চান তারা। পুরোটা ঘুরে দেখার উদ্দেশ্যে ভেতরে ঢুকতেই এ প্রতিবেদকের পে

সরেজমিন প্রকল্প ঘুরে দেখা যায়, এখানে পাঁচটি কলোনি রয়েছে। প্রথম কলোনিতে দুটি তিন তলা ভবন, একটি প্রকল্প কার্যালয় এবং নদীর ওপর একটি ভবন দেখা গেল। দ্বিতীয় কলোনিতে একটি সিলিন্ডার গোডাউন ও নির্মীয়মাণ তিন তলা দুটি ভবন। তৃতীয় কলোনিতে একটি মসজিদ ও গোটা পাঁচেক ভবন। এর মধ্যে একটি নয়তলা। পরের কলোনিতে একাধিক তিন তলা ভবন আর শেষ কলোনিতে অন্তত অর্ধশত প্লটের সীমানা চিহ্নিত করা হয়েছে।

কয়েক বছর ধরেই সাভারের বলিয়ারপুর এলাকায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বামনি খাল দখল করে জমজম হাউজিং কোম্পানি প্লট বিক্রি করছে। এই খাল দিয়ে এক সময়ে নানা ধরনের নৌযান চলাচল করত। স্থানীয় বাসিন্দারা বর্ষা মৌসুমে নৌকায় যাতায়াত করতেন। গত বছরও খাল দিয়ে নৌকা বেয়ে চলেছেন অনেকে। কিন্তু জমজম হাউজিং কোম্পানির মালিক হাজি নুর মোহাম্মদ লোকজন নিয়ে খালটি ভরাট করে রাতারাতি নানা ইমারত নির্মাণ করেন। এমনকি তার উদ্যোগে খালের জায়গায় চান্দুলিয়া এলাকার কয়েকজন ব্যক্তির সহযোগিতায় একটি মসজিদও নির্মাণ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে যাদুরচর, মধুরচর, মেইটকা, তেঁতুলঝোড়া, বলিয়ারপুর, চান্দুলিয়ার শত শত মানুষ একত্র হয়ে প্রতিবাদ করেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, ঢাকা জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত কমিটি করে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে রীতিমতো প্রকাশ্য দিবালোকে বামনি খালের জলাধারের ওপর গড়ে ওঠে জমজম নূর হাউজিং প্রকল্প। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোপালগঞ্জের বাসিন্দা হাফেজ নুর মোহাম্মদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। প্রকল্পের কার্যালয়ের পরের ভবনটিও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের দুই কর্মকর্তার মালিকানাধীন বলে জানায় প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয়দের দাবি, লিকুর প্রভাবেই প্রশাসনের চোখের সামনে খালটি দখল করেন নুর মোহাম্মদ। লিকু ও আওয়ামী লীগের একাধিক প্রভাবশালী নেতার বিনিয়োগ রয়েছে এ প্রকল্পে। নুর মোহাম্মদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল সাভারের সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, সাভারের সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব, তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফখরুল আলম সমর, বনগাঁও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, ভাকুর্তা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেনসহ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে।

এ বিষয়ে জানতে জমজম নূর সিটি হাউজিংয়ের মালিক হাফেজ নুর মোহাম্মদকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। খুদেবার্তা পাঠানো হলেও কোনো জবাব দেননি। আবাসন প্রকল্পের কার্যালয়ে গিয়েও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে নিজেকে ব্যবস্থাপক পরিচয় দিয়ে কামরুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি বলেন, পুরো প্রকল্পের কোনো অংশই খালের জমিতে পড়েনি। কোনো জমি দখলের অভিযোগ সত্য নয়। আইনের নির্দেশ মেনে প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে এটি একটি ট্রাভেলস কোম্পানি। ভবন নির্মাণ হচ্ছে।

 

জাতীয়

বাংলাদেশের কোনো বন্ধু রাষ্ট্র নেই : আইন উপদেষ্টা

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বাংলাদেশের চারদিকে কোনো বন্ধু রাষ্ট্র নেই। তাই খেয়াল রাখতে হবে ভবিষ্যতে যেন আর কোনো দেশ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে না পারে। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে দুই বিচারপতির স্মারণসভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের চারদিকে কোনো বন্ধু রাষ্ট্র নেই; […]

নিউজ ডেস্ক

১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২:৩৩

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বাংলাদেশের চারদিকে কোনো বন্ধু রাষ্ট্র নেই। তাই খেয়াল রাখতে হবে ভবিষ্যতে যেন আর কোনো দেশ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে না পারে।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে দুই বিচারপতির স্মারণসভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের চারদিকে কোনো বন্ধু রাষ্ট্র নেই; খেয়াল রাখতে হবে, ভবিষ্যতে যেন আর কোনো দেশ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে না পারে।

কোনোভাবেই উগ্রবাদকে গ্রহণ করা হবে না উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, এ দেশে যা ঘটে তা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে তুলে ধরা হয়। খেয়াল রাখতে হবে, ভবিষ্যতে যেন, এমন সুযোগ আর কেউ না পায়।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি দেশের ভালো চাই, মানুষের ভালো চাই, সমাজের ভালো চাই, বন্ধুদের ভালো চাই, সন্তানদের ভালো চাই, আমাদের দেশকে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করতে চাই, বাংলাদেশকে আর কোনো ফ্যাসিবাদ বা ষড়যন্ত্রের মুখ থেকে রক্ষা করতে চাই, তালে আমাদের অবশ্যই জঙ্গিবাদ মৌলবাদ থেকে নিজের দেশকে রক্ষা করতে হবে, যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে এর সুযোগ নিয়ে আমাদের দেশের সম্ভাবনাকে এবং আমাদের অগ্রযাত্রাকে যেন কেউ ব্যাহত করতে না পারে, দেশি বা বিদেশি শক্তি।’

ফিচার

ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিদিন আমাদের সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে বরিশাল বিভাগের আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অপপ্রচারের ব্যাপারে আপনারা সবসময় সজাগ থাকবেন। তারা প্রতিদিন মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। তারা যাতে মিথ্যে […]

নিউজ ডেস্ক

১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২১:৩১

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিদিন আমাদের সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে বরিশাল বিভাগের আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অপপ্রচারের ব্যাপারে আপনারা সবসময় সজাগ থাকবেন। তারা প্রতিদিন মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। তারা যাতে মিথ্যে রিপোর্ট না দেয় সেজন্য আমি আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি। আপনারা সত্য রিপোর্ট দেন।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আমরা যদি কোনো ভুল করি, আপনারা বলেন, আমরা সেটা রেক্টিফাই করব। আমার ভেতরে কোনো রকম দুর্নীতি থাকলে আপনারা বলুন, আমার উত্তর দিতে দ্বিধা নেই। কিন্তু কোনো মিথ্যা রিপোর্ট আপনারা দেবেন না।

এ সময় তিনি বলেন, আমাদের বাহিনীগুলোকে জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে হবে। এতে আমাদের চেষ্টাগুলো নিয়ে এখানে আলোচনা হয়েছে। আমাদের বাহিনীরও অনেক সমস্যা রয়েছে। যেমন, গাড়ি ও অর্থসহ নানা লজিস্টিক সমস্যা।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও কীভাবে উন্নতি করা যায় এ ব্যাপারেও আলোচনা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বরগুনার এসপির বিষয়ে তদন্ত করে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়ে মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুএকদিন দেরি হচ্ছে হয়তো। তবে একটি ফরমাল ইনভেস্টিগেশন তো করতেই হবে। আর তাতে যদি তাকে দোষী পাওয়া যায় অবশ্যই তার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে অন্যায় করলে দরকার হলে এদেরও জেলে নেওয়া হবে।

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, এবারে অবশ্যই একটা সুরাহা হবে। এখানে ৬ মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। আর আইজিপি সাহেবের নির্দেশে নতুন একটি টিমও করে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ বাহিনীর আস্থার একটি সংকট ছিল, তবে এটা হঠাৎ করে ঠিক হয়ে যাবে না। কিন্তু আগের থেকে কিছুটা উন্নতি হয়েছে, আস্তে আস্তে আরও হবে।

নীরব চাঁদাবাজির কোনো বিষয় থাকলে এসপি, পুলিশ কমিশনার ও ডিআইজি সাহেবকে জানান। তারা ব্যবস্থা না নিলে আমাকে কিংবা আইজি সাহেবকে জানান। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।

মাদকের বিষয়ে তিনি বলেন, মাদক আমাদের বড় সমস্যা। ক্যারিয়ারগুলো ধরা পড়ছে বেশিরভাগ সময়, হোতাগুলো ধরা পড়ছে না। কিন্তু এবার বেশ কয়েকজন বড় বড় হোতা ধরা পড়েছে।

মাদক আমাদের দেশের বড় সমস্যা। এর সমাধান আমাদের সবাইকে মিলে করতে হবে। আপনাদের কাছে অনুরোধে মাদকের বিষয়ে তথ্য দেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অ্যাকশনে না গেলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই যাব। পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীকেও তথ্য দিতে পারেন। পেপারে আগে না দিয়ে এদের কাছে জানান, যদি তারা না ব্যবস্থা নেয় তাহলে পেপারে দিয়ে দেন। কিন্তু মাদকের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে আমাদের সহযোগিতা করুন, মিডিয়ায় আগে দিলে তারা সজাগ হয়ে যায়, তাই আমরা চাই তারা ঘুমিয়ে থাকা অবস্থাতেই ধরে ফেলতে।

এখন অনেক মামলা হচ্ছে, অনেক নির্দোষ লোককে আসামি করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আপনাদের সজাগ হতে হবে। আমি বাহিনী প্রধানদেরও বলেছি, যারা এ ধরনের মামলা করবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে এখন থেকে। খারাপ লোককে খারাপ বললে সেও মামলা করে দিচ্ছে, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সার্কুলারও দিয়েছে- যারা এরকম মামলা করে সেগুলো না নেওয়ার জন্য। আর নিলেও বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আগে পুলিশ বাদী হয়ে অনেক আসামি করত কিন্তু এখন পুলিশ সেরকম মামলা দেয় না, এখন দেয় সাধারণ মানুষ।

পুলিশ সংস্কারে পুলিশ কমিশন কাজ করে যাচ্ছে, তারা রিপোর্ট দিলে সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই আমার বরিশালে প্রথম পরিদর্শন। এখানে এসে নিজেকে খুব ধন্য মনে করছি, অন্যান্য জায়গার থেকে এখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। মাঝে মাঝে যদিও রাস্তাটা ব্লক করে ফেলে, এটার জন্য সবাই চেষ্টা করবেন। রাস্তা ব্লক না করে তাদের যে দাবি-দাওয়া থাকে তা সঠিক চ্যানেলে প্লেস করলে সব থেকে ভালো হয়। এখানে ছাত্র প্রতিনিধিরা রয়েছে, তাদেরও আমি সহায়তা করার জন্য বলেছি, রাস্তা ব্লক করে যাতে জনগণকে ভোগান্তির মধ্যে না ফেলা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম, র‌্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার, বরিশাল সেনানিবাসের ৭ পদাতিক ডিভিশনের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল আজিম- পিএসসি