বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

জাতীয়

টেবিলে বই, আলনায় কাপড় সবই আছে, নেই শুধু আমার ছেলেটা

বারবার হাত দিয়ে ধরে দেখছিলেন জিনিসগুলো। ছেলের স্মৃতি মনে করে বিলাপ করছিলেন অভাগা মা। আহাজারি করে বলছিলেন, ‘টেবিলে বই, আলনায় কাপড় সবই আছে, নেই শুধু আমার ছেলেটা।’ পড়ার টেবিলে সারি সারি বই রাখা। দেয়ালে টানানো রুটিন, ব্যাগটাও রাখা আছে টেবিলেই। চার্জার লাইট, মার্কার পেন আর ঘড়িটাও রয়েছে টেবিলের তাকে। পাশেই আলনায় রাখা আছে জামাকাপড়। সেগুলোতে […]

নিউজ ডেস্ক

২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫

বারবার হাত দিয়ে ধরে দেখছিলেন জিনিসগুলো। ছেলের স্মৃতি মনে করে বিলাপ করছিলেন অভাগা মা। আহাজারি করে বলছিলেন, ‘টেবিলে বই, আলনায় কাপড় সবই আছে, নেই শুধু আমার ছেলেটা।’

পড়ার টেবিলে সারি সারি বই রাখা। দেয়ালে টানানো রুটিন, ব্যাগটাও রাখা আছে টেবিলেই। চার্জার লাইট, মার্কার পেন আর ঘড়িটাও রয়েছে টেবিলের তাকে। পাশেই আলনায় রাখা আছে জামাকাপড়। সেগুলোতে এখনো লেগে আছে গায়ের ঘ্রাণ। টেবিলে বসে অপলক তাকিয়ে ছিলেন সদ্য সন্তান হারানো এক বাবা।

সড়কে মদ্যপ চালকের বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় নির্মমভাবে প্রাণ হারানো বুয়েট শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদের (২২) বাড়িতে এখন শুধুই চলছে মাতম আর আহাজারি। বাবা মাসুদ মিয়া এবং মা রাইসা সুলতানা যেন সন্তান হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছেন।

গতকাল শনিবার মাসুদের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, কিছুক্ষণ পরপরই চিৎকার করে কেঁদে উঠছিলেন অভাগা এই বাবা-মা। স্বজন এবং মাসুদের সহপাঠীরা শুধুই জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন তাদের।

বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরে পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে বেপরোয়া প্রাইভেটকারের ধাক্কায় নিহত হন বুয়েট শিক্ষার্থী মাসুদ (২২)। আহত হন নিহতের সহপাঠী অমিত সাহা (২২) ও মেহেদী হাসান (২২)।

তারা তিনজনই বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবারের এ ঘটনার পর শুক্রবার মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয় মাসুদকে।

মুহতাসিম মাসুদের মা রাইসা সুলতানা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, আমি তো এখন মরার মতো বেঁচে আছি। আল্লাহ আমার ছেলেকে এতটুকু আয়ু দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিল। দুর্ঘটনার ঘটনাস্থলে আরও আট থেকে ১০ জন ছিল, দুজন আহত হয়েছে। আমার ছেলেটাই শুধু চলে গেছে। আমার ছেলে এতটুকু হায়াত নিয়া আসছে। আমার সন্তান তো কেউ ফিরিয়ে দিতে পারবে না।

আমার সন্তান এত গর্ব করার মতো ছিল, হয়তো ক্ষণজন্মা বলেই এত গর্ব করার মতো ছিল। যেই দেখত, সেই বলত, আপনার ছেলে এত লম্বা, এত সুন্দর। দেখতেও সুন্দর, আচরণেও সুন্দর আমার ছেলে। কেউ কোনো কিছু বললে, শত ব্যস্ততার মাঝেও তার কথাটা গুরুত্ব দিয়ে শুনত। কখনো বিরক্ত হতো না।

বাসায় আসা মাসুদের বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে শুধু চোখের পানি ফেলছিলেন এই অভাগী মা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, তোমাদের বন্ধু তো আর আমার কাছে আসবে না রে। আর কোনোদিন আসবে না।

স্মৃতি হাতড়ে এই মা বলেন, জন্মের পর থেকে এই বুয়েট পর্যন্ত নিয়ে আসার জন্য আমাদের জীবনের যে কত ত্যাগ, কত কষ্ট! আমার সব কষ্ট আল্লাহ নিয়ে গেল। ছেলের স্কুলজীবন থেকে নিজের সঙ্গে রেখে ছেলেকে বড় করেছি। সকালে অফিস করেছি, বিকেলে এসে ছেলেকে কোচিংয়ে নিয়ে গেছি।

আবার রাতে পাশে বসে থেকে পড়িয়েছি, খাইয়ে দিয়েছি। আমার এত কষ্ট, এত ত্যাগ সব আজ শেষ হয়ে গেছে। এই বাসায় আর থাকতে পারব না। এই বাসার প্রতিটি কোণায় আমার ছেলের স্মৃতি। এই মনে হয় আমার ছেলে এসে আমাকে ডাক দেবে। এভাবে তো এখানে বাঁচতে পারব না। এই বাসা ছেড়ে দিয়ে চলে যাব।

বাবা মাসুদ মিয়া জানান, বুয়েটে কনসার্ট ছিল। সেজন্য আমার মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়েছিল। কথা ছিল ১১টার মধ্যেই চলে আসবে। তার মায়ের সঙ্গে শেষ কথা হয় ১১টায়। তখন জানায় অনুষ্ঠান শেষ হয়নি, এজন্য আজ হলে থাকবে। এরপর কনসার্ট শেষ করে দুই বন্ধুকে নিয়ে ৩০০ ফিট যায় খাওয়ার জন্য।

এ সময় রাস্তায় পুলিশ আটকায় কাগজ দেখার জন্য। পুলিশ সদস্যরা মোটরসাইকেলটি রাস্তার পাশে দাঁড় না করিয়ে, রাস্তার মাঝখানেই দাঁড় করায়। যখন কাগজ দেখাচ্ছিল, তখন মদ্যপ অবস্থায় ওই চালক বেপরোয়াভাবে গাড়ি নিয়ে এসে তাদের ওপর তুলে দেয়। মুহতাসিম মাসুদের শুধু মুখ ছাড়া হাত-পায়ের সব হাড় ভেঙে যায়, মেরুদণ্ডের হাড়ও ভেঙে যায়। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যায়।

বাবা মাসুদ মিয়া কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার জীবনের সব শেষ। আমি কীভাবে বেঁচে থাকব জানি না। সব স্বপ্ন-আশা শেষ হয়ে গেছে। আমি আমার ছেলে হত্যার সর্বোচ্চ বিচার চাই। যারা মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে আমার ছেলেকে নির্মমভাবে মেরে ফেলেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই। তারা যেন কোনোভাবেই পার না পেয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমার ছেলেকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করেছি। সরকারের কাছে আমাদের একটা দাবি আছে। সেটি হচ্ছে, কবরের ওই জায়গাটুকু যেন আমার ছেলের জন্যই দেওয়া হয়। বেশি কিছু চাই না, ওই সাড়ে তিন হাত জায়গা নিয়েই বাঁচতে চাই।

এদিকে সহপাঠী নিহত হওয়ার ঘটনায় শনিবার বিক্ষোভ মিছিলে প্রতিবাদমুখর ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন তারা। ‘আর নয় প্রাণহানি, সড়ক হতে হবে নিরাপদ’—এই দাবি উঠছে শিক্ষার্থীদের সোচ্চার কণ্ঠে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়। বরং চালক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে আমাদের এক সহপাঠীকে হত্যা করেছে এবং দুজনকে গুরুতর আহত করেছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

আমরা কোনো ধরনের হুমকি পাইনি; কিন্তু সেটেলমেন্টের চেষ্টা করেছেন উনারা। সেটা আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। তারা আরও বলেন, অভিযুক্তদের আইনজীবী গণমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

এই হত্যাকাণ্ডকে দুর্ঘটনা বলে অপপ্রচারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমরা এই অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই এবং দ্রুত এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।’

সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে তারা বলেন, দেশের বিচারব্যবস্থাকে একটি গোষ্ঠীর হাতে জিম্মি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করুন; অপরাধী যে পরিবারেরই সদস্য হোক না কেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন, এ ব্যাপারটি ফের প্রতিষ্ঠিত হোক।

হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার অবশ্যই বিবাদীপক্ষকে বহন করতে হবে এবং নিহতের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

জাতীয়

যে ট্রাভেল কোম্পানির মাধ্যমে দেশ ছেড়েছেন নেতারা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির অনেক নেতাকর্মী বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ছাড়াও বিভিন্ন দেশে চলে গেছেন। এসব নেতাদের অনেকেই ‘দি সিটি ট্রাভেলস’ নামে একটি ট্রাভেল কোম্পানির সহযোগিতায় দেশ ত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। দেশত্যাগ করা এসব নেতাকর্মীরা সবাই ছাত্র হত্যার আসামি। জানা […]

নিউজ ডেস্ক

১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১০

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির অনেক নেতাকর্মী বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ছাড়াও বিভিন্ন দেশে চলে গেছেন। এসব নেতাদের অনেকেই ‘দি সিটি ট্রাভেলস’ নামে একটি ট্রাভেল কোম্পানির সহযোগিতায় দেশ ত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। দেশত্যাগ করা এসব নেতাকর্মীরা সবাই ছাত্র হত্যার আসামি।

জানা গেছে, ‘দি সিটি ট্রাভেলস’ এর মালিক গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার বাসিন্দা হাফেজ নুর মোহাম্মদ। তিনি বিগত সরকারের আমলে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘনিষ্ঠজন। তবে সরকার পতনের পর ভোল পাল্টে নুর মোহাম্মদ হয়ে গেছেন জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাভার শাখার সভাপতি। সাভারের কাছে একটি নির্মাণাধীন ভবনে বর্তমানে তার ট্রাভেল কোম্পানির মাধ্যমে ওমরাহ বুকিং দিচ্ছেন।

তবে ভবনের ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে লম্বা সড়ক, যেন কোনো আবাসিক এলাকা। দুই পাশে প্লট। কয়েকটি ভবনে চলছে নির্মাণকাজ। গড়ে উঠছে সুউচ্চ ভবন। আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়েই গড়ে তুলেছেন ‘জমজম নূর সিটি’ নামে এই আবাসিক এলাকা।

ঢাকার নিকটবর্তী সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের কোন্ডা, কোটিপাড়া এলাকায় গত পাঁচ-ছয় বছর আগে গড়ে ওঠে বিতর্কিত জমজম সিটি। ধলেশ্বরী নদীর শাখা বামনি খালের জলাধার ও পানি চলাচলের জলাভূমির ওপর বালু ভরাট করে গড়ে তোলা হয় এ প্রকল্প। স্থানীয়দের বাধাসহ নানা অভিযোগের জেরে আদালত, পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজউক এ প্রকল্পকে অবৈধ ঘোষণা করে কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এসব নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে আবাসন প্রকল্প বর্ধিত করার কাজ।

সম্প্রতি সরেজমিন প্রকল্পটিতে গিয়ে ফটকের ছবি তুলতেই এগিয়ে আসেন একজন নিরাপত্তারক্ষী। পেছনে পেছনে এগিয়ে আসেন প্রকল্পের একজন পরিচালক ও কয়েকজন সাঙ্গোপাঙ্গ। উত্তেজিত হয়ে ছবি তোলায় বাধা দিতে চান তারা। পুরোটা ঘুরে দেখার উদ্দেশ্যে ভেতরে ঢুকতেই এ প্রতিবেদকের পে

সরেজমিন প্রকল্প ঘুরে দেখা যায়, এখানে পাঁচটি কলোনি রয়েছে। প্রথম কলোনিতে দুটি তিন তলা ভবন, একটি প্রকল্প কার্যালয় এবং নদীর ওপর একটি ভবন দেখা গেল। দ্বিতীয় কলোনিতে একটি সিলিন্ডার গোডাউন ও নির্মীয়মাণ তিন তলা দুটি ভবন। তৃতীয় কলোনিতে একটি মসজিদ ও গোটা পাঁচেক ভবন। এর মধ্যে একটি নয়তলা। পরের কলোনিতে একাধিক তিন তলা ভবন আর শেষ কলোনিতে অন্তত অর্ধশত প্লটের সীমানা চিহ্নিত করা হয়েছে।

কয়েক বছর ধরেই সাভারের বলিয়ারপুর এলাকায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বামনি খাল দখল করে জমজম হাউজিং কোম্পানি প্লট বিক্রি করছে। এই খাল দিয়ে এক সময়ে নানা ধরনের নৌযান চলাচল করত। স্থানীয় বাসিন্দারা বর্ষা মৌসুমে নৌকায় যাতায়াত করতেন। গত বছরও খাল দিয়ে নৌকা বেয়ে চলেছেন অনেকে। কিন্তু জমজম হাউজিং কোম্পানির মালিক হাজি নুর মোহাম্মদ লোকজন নিয়ে খালটি ভরাট করে রাতারাতি নানা ইমারত নির্মাণ করেন। এমনকি তার উদ্যোগে খালের জায়গায় চান্দুলিয়া এলাকার কয়েকজন ব্যক্তির সহযোগিতায় একটি মসজিদও নির্মাণ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে যাদুরচর, মধুরচর, মেইটকা, তেঁতুলঝোড়া, বলিয়ারপুর, চান্দুলিয়ার শত শত মানুষ একত্র হয়ে প্রতিবাদ করেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, ঢাকা জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত কমিটি করে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে রীতিমতো প্রকাশ্য দিবালোকে বামনি খালের জলাধারের ওপর গড়ে ওঠে জমজম নূর হাউজিং প্রকল্প। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোপালগঞ্জের বাসিন্দা হাফেজ নুর মোহাম্মদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। প্রকল্পের কার্যালয়ের পরের ভবনটিও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের দুই কর্মকর্তার মালিকানাধীন বলে জানায় প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয়দের দাবি, লিকুর প্রভাবেই প্রশাসনের চোখের সামনে খালটি দখল করেন নুর মোহাম্মদ। লিকু ও আওয়ামী লীগের একাধিক প্রভাবশালী নেতার বিনিয়োগ রয়েছে এ প্রকল্পে। নুর মোহাম্মদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল সাভারের সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, সাভারের সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব, তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফখরুল আলম সমর, বনগাঁও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, ভাকুর্তা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেনসহ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে।

এ বিষয়ে জানতে জমজম নূর সিটি হাউজিংয়ের মালিক হাফেজ নুর মোহাম্মদকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। খুদেবার্তা পাঠানো হলেও কোনো জবাব দেননি। আবাসন প্রকল্পের কার্যালয়ে গিয়েও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে নিজেকে ব্যবস্থাপক পরিচয় দিয়ে কামরুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি বলেন, পুরো প্রকল্পের কোনো অংশই খালের জমিতে পড়েনি। কোনো জমি দখলের অভিযোগ সত্য নয়। আইনের নির্দেশ মেনে প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে এটি একটি ট্রাভেলস কোম্পানি। ভবন নির্মাণ হচ্ছে।

 

জাতীয়

বাংলাদেশের কোনো বন্ধু রাষ্ট্র নেই : আইন উপদেষ্টা

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বাংলাদেশের চারদিকে কোনো বন্ধু রাষ্ট্র নেই। তাই খেয়াল রাখতে হবে ভবিষ্যতে যেন আর কোনো দেশ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে না পারে। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে দুই বিচারপতির স্মারণসভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের চারদিকে কোনো বন্ধু রাষ্ট্র নেই; […]

নিউজ ডেস্ক

১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২:৩৩

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বাংলাদেশের চারদিকে কোনো বন্ধু রাষ্ট্র নেই। তাই খেয়াল রাখতে হবে ভবিষ্যতে যেন আর কোনো দেশ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে না পারে।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে দুই বিচারপতির স্মারণসভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের চারদিকে কোনো বন্ধু রাষ্ট্র নেই; খেয়াল রাখতে হবে, ভবিষ্যতে যেন আর কোনো দেশ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে না পারে।

কোনোভাবেই উগ্রবাদকে গ্রহণ করা হবে না উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, এ দেশে যা ঘটে তা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে তুলে ধরা হয়। খেয়াল রাখতে হবে, ভবিষ্যতে যেন, এমন সুযোগ আর কেউ না পায়।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি দেশের ভালো চাই, মানুষের ভালো চাই, সমাজের ভালো চাই, বন্ধুদের ভালো চাই, সন্তানদের ভালো চাই, আমাদের দেশকে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করতে চাই, বাংলাদেশকে আর কোনো ফ্যাসিবাদ বা ষড়যন্ত্রের মুখ থেকে রক্ষা করতে চাই, তালে আমাদের অবশ্যই জঙ্গিবাদ মৌলবাদ থেকে নিজের দেশকে রক্ষা করতে হবে, যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে এর সুযোগ নিয়ে আমাদের দেশের সম্ভাবনাকে এবং আমাদের অগ্রযাত্রাকে যেন কেউ ব্যাহত করতে না পারে, দেশি বা বিদেশি শক্তি।’

ফিচার

ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিদিন আমাদের সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে বরিশাল বিভাগের আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অপপ্রচারের ব্যাপারে আপনারা সবসময় সজাগ থাকবেন। তারা প্রতিদিন মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। তারা যাতে মিথ্যে […]

নিউজ ডেস্ক

১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২১:৩১

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিদিন আমাদের সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে বরিশাল বিভাগের আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অপপ্রচারের ব্যাপারে আপনারা সবসময় সজাগ থাকবেন। তারা প্রতিদিন মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। তারা যাতে মিথ্যে রিপোর্ট না দেয় সেজন্য আমি আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি। আপনারা সত্য রিপোর্ট দেন।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আমরা যদি কোনো ভুল করি, আপনারা বলেন, আমরা সেটা রেক্টিফাই করব। আমার ভেতরে কোনো রকম দুর্নীতি থাকলে আপনারা বলুন, আমার উত্তর দিতে দ্বিধা নেই। কিন্তু কোনো মিথ্যা রিপোর্ট আপনারা দেবেন না।

এ সময় তিনি বলেন, আমাদের বাহিনীগুলোকে জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে হবে। এতে আমাদের চেষ্টাগুলো নিয়ে এখানে আলোচনা হয়েছে। আমাদের বাহিনীরও অনেক সমস্যা রয়েছে। যেমন, গাড়ি ও অর্থসহ নানা লজিস্টিক সমস্যা।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও কীভাবে উন্নতি করা যায় এ ব্যাপারেও আলোচনা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বরগুনার এসপির বিষয়ে তদন্ত করে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়ে মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুএকদিন দেরি হচ্ছে হয়তো। তবে একটি ফরমাল ইনভেস্টিগেশন তো করতেই হবে। আর তাতে যদি তাকে দোষী পাওয়া যায় অবশ্যই তার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে অন্যায় করলে দরকার হলে এদেরও জেলে নেওয়া হবে।

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, এবারে অবশ্যই একটা সুরাহা হবে। এখানে ৬ মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। আর আইজিপি সাহেবের নির্দেশে নতুন একটি টিমও করে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ বাহিনীর আস্থার একটি সংকট ছিল, তবে এটা হঠাৎ করে ঠিক হয়ে যাবে না। কিন্তু আগের থেকে কিছুটা উন্নতি হয়েছে, আস্তে আস্তে আরও হবে।

নীরব চাঁদাবাজির কোনো বিষয় থাকলে এসপি, পুলিশ কমিশনার ও ডিআইজি সাহেবকে জানান। তারা ব্যবস্থা না নিলে আমাকে কিংবা আইজি সাহেবকে জানান। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।

মাদকের বিষয়ে তিনি বলেন, মাদক আমাদের বড় সমস্যা। ক্যারিয়ারগুলো ধরা পড়ছে বেশিরভাগ সময়, হোতাগুলো ধরা পড়ছে না। কিন্তু এবার বেশ কয়েকজন বড় বড় হোতা ধরা পড়েছে।

মাদক আমাদের দেশের বড় সমস্যা। এর সমাধান আমাদের সবাইকে মিলে করতে হবে। আপনাদের কাছে অনুরোধে মাদকের বিষয়ে তথ্য দেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অ্যাকশনে না গেলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই যাব। পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীকেও তথ্য দিতে পারেন। পেপারে আগে না দিয়ে এদের কাছে জানান, যদি তারা না ব্যবস্থা নেয় তাহলে পেপারে দিয়ে দেন। কিন্তু মাদকের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে আমাদের সহযোগিতা করুন, মিডিয়ায় আগে দিলে তারা সজাগ হয়ে যায়, তাই আমরা চাই তারা ঘুমিয়ে থাকা অবস্থাতেই ধরে ফেলতে।

এখন অনেক মামলা হচ্ছে, অনেক নির্দোষ লোককে আসামি করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আপনাদের সজাগ হতে হবে। আমি বাহিনী প্রধানদেরও বলেছি, যারা এ ধরনের মামলা করবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে এখন থেকে। খারাপ লোককে খারাপ বললে সেও মামলা করে দিচ্ছে, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সার্কুলারও দিয়েছে- যারা এরকম মামলা করে সেগুলো না নেওয়ার জন্য। আর নিলেও বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আগে পুলিশ বাদী হয়ে অনেক আসামি করত কিন্তু এখন পুলিশ সেরকম মামলা দেয় না, এখন দেয় সাধারণ মানুষ।

পুলিশ সংস্কারে পুলিশ কমিশন কাজ করে যাচ্ছে, তারা রিপোর্ট দিলে সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই আমার বরিশালে প্রথম পরিদর্শন। এখানে এসে নিজেকে খুব ধন্য মনে করছি, অন্যান্য জায়গার থেকে এখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। মাঝে মাঝে যদিও রাস্তাটা ব্লক করে ফেলে, এটার জন্য সবাই চেষ্টা করবেন। রাস্তা ব্লক না করে তাদের যে দাবি-দাওয়া থাকে তা সঠিক চ্যানেলে প্লেস করলে সব থেকে ভালো হয়। এখানে ছাত্র প্রতিনিধিরা রয়েছে, তাদেরও আমি সহায়তা করার জন্য বলেছি, রাস্তা ব্লক করে যাতে জনগণকে ভোগান্তির মধ্যে না ফেলা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম, র‌্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার, বরিশাল সেনানিবাসের ৭ পদাতিক ডিভিশনের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল আজিম- পিএসসি