বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

ইসলাম ও জীবন

মাদকের থাবায় যুব সমাজ, কী বলছে ইসলাম?

মাদকের ভয়াবহ থাবায় প্রতিদিন ঝরে যাচ্ছে অগণিত তরুণ-তরুণীর তাজা প্রাণ। সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, ভেঙে পড়ছে অসংখ্য সুখী পরিবার। যুব সমাজের এই ধ্বংসের মূল কারণ হিসেবে মাদককে দেখা হচ্ছে, যা ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে। এ কারণেই ইসলাম মাদকদ্রব্যকে ‘উম্মুল খবায়েছ’ তথা সব ধরনের জঘন্যতার মূল হিসেবে অভিহিত করেছে। মাদক […]

নিউজ ডেস্ক

০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:৩৮

মাদকের ভয়াবহ থাবায় প্রতিদিন ঝরে যাচ্ছে অগণিত তরুণ-তরুণীর তাজা প্রাণ। সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, ভেঙে পড়ছে অসংখ্য সুখী পরিবার। যুব সমাজের এই ধ্বংসের মূল কারণ হিসেবে মাদককে দেখা হচ্ছে, যা ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে।

এ কারণেই ইসলাম মাদকদ্রব্যকে ‘উম্মুল খবায়েছ’ তথা সব ধরনের জঘন্যতার মূল হিসেবে অভিহিত করেছে। মাদক শুধু ব্যক্তির নৈতিক চরিত্র ধ্বংস করে না, বরং এর ফলে সমাজে খুন, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস এবং শত্রুতার মতো অপরাধ বেড়ে যায়।

ইসলামে মাদকের নিষিদ্ধতা

ইসলাম সমাজকে মাদকাসক্তির ধ্বংস থেকে বাঁচাতে মাদকদ্রব্যকে সম্পূর্ণরূপে হারাম ঘোষণা করেছে। কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্যনির্ধারক তীরগুলো শয়তানের অপকর্মের অন্তর্ভুক্ত। তাই এগুলো থেকে দূরে থাকো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।(সুরা মায়েদা, আয়াত ৯০)

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,প্রতিটি নেশাজাতীয় দ্রব্যই মদের অন্তর্ভুক্ত, আর সব ধরনের মাদক হারাম (মুসলিম শরিফ,হাদিস ২০০৩)
ইসলাম শুধু মাদক সেবনই নয়, এর ব্যবসাকেও হারাম করেছে। হজরত আয়েশা রা. বলেন,যখন সুরা বাকারার শেষ আয়াতগুলো নাজিল হলো, তখন রসুলুল্লাহ সা. ঘোষণা করলেন, মদের ব্যবসা হারাম। (বোখারি শরিফ, হাদিস ৪৪৫)

মাদকাসক্তদের জন্য সতর্কবাণী

মাদকাসক্তদের সম্পর্কে রসুলুল্লাহ সা. কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,তিন ধরনের মানুষকে আল্লাহ কিয়ামতের দিন ভ্রুক্ষেপ করবেন না—মাতাপিতার অবাধ্য সন্তান, নিয়মিত মদপানকারী এবং যে দান করে তা প্রচার করে (মুস্তাদরাক, হাদিস ৭২৩৫)।

এছাড়াও তিনি বলেছেন,আমার উম্মতের যে কেউ এক ঢোক মদ পান করবে, তাকে দোজখের পুঁজ পান করানো হবে।(মেশকাত শরিফ, হাদিস ৩১৮)

মাদকাসক্তি থেকে মুক্তির পথ

আধুনিক যুগে মাদকাসক্তি এক ভয়াবহ অভিশাপ ও মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এই ফাঁদ থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন মানসিক পরিবর্তন এবং ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি গভীর মনোযোগ। কেবল আইন প্রয়োগ করলেই এই সমস্যার সমাধান আসবে না, বরং ইসলামের নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধ মেনে চলার মাধ্যমেই সমাজ থেকে মাদকাসক্তি দূর করা সম্ভব।

মাদক, সমাজ ও ব্যক্তিগত জীবনে গভীর ধ্বংস ডেকে আনে, যা পরিবারের বন্ধন এবং রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতাকে চরমভাবে ব্যাহত করে। ইসলাম মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্ক করেছে। তাই মানসিক ও নৈতিক পরিবর্তন এবং ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে সমাজকে এই মহামারী থেকে রক্ষা করতে হবে।

হে আল্লাহ! আমাদের সমাজকে মাদকাসক্তির মহামারী থেকে রক্ষা করুন। আমাদের হৃদয়কে সঠিক পথে পরিচালিত করুন এবং পাপ থেকে বাঁচার তাওফিক দিন। আমাদের সমাজ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সব অনিষ্ট থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

ইসলাম ও জীবন

জুমার দিনের মর্যাদা ও দোয়া কবুলের বিশেষ সময়: এক গভীর বার্তা

জুমার দিন মুসলমানদের জন্য এক অতি মর্যাদাপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ দিন, যা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর প্রিয় সৃষ্টি মুসলিম উম্মাহকে বিশেষ উপহার হিসেবে দান করেছেন। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি শুধু একটি নামাজের দিন নয়, বরং এটি একটি ইবাদতের উৎসব, দোয়া কবুলের মোক্ষম সুযোগ এবং রুহানিয়াতের পূর্ণদিবস। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন— “হে ঈমানদারগণ! জুমার দিনের নামাজের আজান দেওয়া […]

নিউজ ডেস্ক

১৬ মে ২০২৫, ১২:০৩

জুমার দিন মুসলমানদের জন্য এক অতি মর্যাদাপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ দিন, যা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর প্রিয় সৃষ্টি মুসলিম উম্মাহকে বিশেষ উপহার হিসেবে দান করেছেন। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি শুধু একটি নামাজের দিন নয়, বরং এটি একটি ইবাদতের উৎসব, দোয়া কবুলের মোক্ষম সুযোগ এবং রুহানিয়াতের পূর্ণদিবস।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন—

“হে ঈমানদারগণ! জুমার দিনের নামাজের আজান দেওয়া হলে, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।”
(সূরা জুমু’আ, আয়াত ৯)

এই আয়াতের আলোকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, জুমার আজানের পর পার্থিব সকল কাজ ত্যাগ করে নামাজ ও খুতবার দিকে ধাবিত হওয়া ঈমানদারের জন্য অপরিহার্য। এমনকি ইসলামী ফিকাহ অনুসারে, এ সময়ে কেনা-বেচা করা হারাম হিসেবে গণ্য হয়।

হাদীসে জুমার ফজিলত ও দোয়া কবুলের সময়
হযরত আনাস (রাযি.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন:

“হযরত জিবরাঈল (আ.) আমার কাছে একটি সাদা কাচের টুকরা নিয়ে এলেন এবং বললেন, ‘এটি জুমার দিন, যা তোমার প্রতিপালক তোমার ওপর ফরজ করেছেন। এতে একটি সময় আছে, যখন কোনো বান্দা আল্লাহর কাছে কিছু চাইলেই তা অবশ্যই কবুল করা হয়।’”
(সহিহ হাদীস – মুসনাদ আহমদ, সংক্ষেপে)

হজরত আবু হুরায়রা (রাযি.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:

“নিশ্চয়ই জুমার দিনে একটি মুহূর্ত রয়েছে, সেই মুহূর্তে যদি কোনো মুসলিম বান্দা কল্যাণকর কিছু চায়, আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই তা কবুল করে নেন।”
(সহিহ বুখারী: ৮৫২; সহিহ মুসলিম)

দোয়া কবুলের সম্ভাব্য সময় দুটি প্রসিদ্ধ মতানুসারে ইসলামী স্কলারদের মধ্যে দুইটি মত প্রসিদ্ধ:

১. খুতবা শুরু থেকে নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত সময়।
২. আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়।

এই দুটি সময়ই ইমাম আবু উমর ইবনে আব্দুল বার (রহ.) গুরুত্বের সাথে দোয়া করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন:

“প্রত্যেক মুসলমানের উচিত এই দুটি সময়ে আন্তরিকভাবে দোয়া করা, তাহলে ইনশাআল্লাহ তার দোয়া বিফল হবে না।”
(আততামহীদ, খণ্ড ১৯, পৃষ্ঠা ২৪)

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে জুমার ফজিলত বোঝার এবং সে অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন।

উপসংহার: জুমার দিনে কী করণীয়?
🔹 আজানের পরপরই পার্থিব সকল ব্যস্ততা পরিহার করে মসজিদের দিকে ধাবিত হওয়া।
🔹 খুতবা ও নামাজে মনোযোগী হওয়া এবং গুনাহ থেকে বিরত থাকা।
🔹 জুমার দিনে বিশেষভাবে আসরের পর সময়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দোয়া করা।
🔹 নিজের ও উম্মতের কল্যাণের জন্য নিরবিচারে দোয়া করা।

“যে আল্লাহর প্রতি তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য পথ খুলে দেন এবং তাকে এমন স্থান থেকে রিযিক দেন, যেখান থেকে সে কল্পনাও করে না।”
(সূরা আত-তালাক, আয়াত ২-৩)

আন্তর্জাতিক

আল-আকসায় হাজারো ফিলিস্তিনির ঈদের নামাজ আদায়

আল-আকসা শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়—এটি ফিলিস্তিনিদের আত্মপরিচয়, অধিকার ও ইতিহাসের অংশ। ঈদের দিনে সেখানে নামাজ আদায় করা মানে হলো, নিপীড়নের মধ্যেও অস্তিত্বের ঘোষণা দেওয়া।

নিউজ ডেস্ক

০৬ জুন ২০২৫, ১৬:২০

অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের ঐতিহাসিক আল-আকসা মসজিদে ঈদুল আজহার নামাজে সমবেত হন হাজারো ফিলিস্তিনি। পবিত্রতা আর প্রতিরোধের প্রতীক এই প্রাঙ্গণে শুক্রবার (৬ জুন) সকালে মুসল্লিরা সুশৃঙ্খলভাবে ঈদের নামাজ আদায় করেন। ইসলাম ধর্মের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান আল-আকসা মসজিদে এমন আয়োজনে ঈদের আনন্দ আর সংকল্প একসঙ্গে মিশে যায় ফিলিস্তিনি চেতনায়।

রয়টার্স জানায়, নামাজ শেষে মুসল্লিরা একে অপরকে আলিঙ্গন করে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। অনেক শিশু, পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে অংশ নেয়—যা এই আগ্রাসী বাস্তবতার মধ্যেও জীবনের এক অবিচল প্রতিচ্ছবি।

আল-আকসা শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়—এটি ফিলিস্তিনিদের আত্মপরিচয়, অধিকার ও ইতিহাসের অংশ। ঈদের দিনে সেখানে নামাজ আদায় করা মানে হলো, নিপীড়নের মধ্যেও অস্তিত্বের ঘোষণা দেওয়া।

কিন্তু এই প্রার্থনার বিপরীতে, গাজার আকাশে তখনো বোমার শব্দ। ঈদের দিনে গাজা উপত্যকার জনগণ উদযাপন নয়—বেছে নিচ্ছে বেঁচে থাকার লড়াই। টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যেই ঈদ উদযাপন করছে গাজাবাসী।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে কিছু শিশু ও যুবককে ঈদের নামাজ পড়তে দেখা গেছে—জীবনের স্বাভাবিকতাকে ধরে রাখার এক ক্ষীণ প্রচেষ্টা মাত্র। আল জাজিরার বরাতে জানা গেছে, গাজা থেকে আহত হয়ে দোহার বিভিন্ন হাসপাতালে অবস্থান করা কিছু ফিলিস্তিনি কাতারের আল-থুমামা কমপ্লেক্সে ঈদের নামাজে অংশ নিয়েছেন। ফিলিস্তিনি চিত্র সাংবাদিক বিলাল খালেদ ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন, যেখানে দেখা যায়—দোহায় ঈদের জামাতে অংশ নিচ্ছে শরণার্থী শিশুরা।

তবে ঈদের সকালেও থেমে থাকেনি ইসরায়েলের হামলা। খান ইউনিস, গাজার নুসাইরাত শরণার্থী শিবির ও তুফাহ পাড়ায় চালানো সামরিক অভিযানে বহু হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে সরাসরি গুলিতে।

এটাই গাজার ঈদ—আল-আকসার মিনারে যখন তাকবির ধ্বনি উঠছে, তখন গাজার ধ্বংসস্তূপে ছড়িয়ে পড়ছে রক্ত আর কান্না। উৎসব ও আতঙ্ক, প্রার্থনা ও প্রতিরোধ—এই দুই মেরুতে বিভক্ত ফিলিস্তিন আজও দাঁড়িয়ে আছে নিজের অস্তিত্বের প্রশ্নে।

বিশ্ব যখন ঈদ উদযাপনে ব্যস্ত, তখন ফিলিস্তিনিরা প্রমাণ দিচ্ছে—ধ্বংসের মধ্যেও বিশ্বাস, রক্তের ভেতরেও প্রার্থনার আলো কখনো নিভে না।

২০ জুন ২০২৫
poll_title
তুরস্ক, সৌদি ও পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশ নিয়ে ইসলামি সেনাবাহিনী গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে ইরান। আপনি কি এই আর্মি গঠনের পক্ষে?

তুরস্ক, সৌদি ও পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশ নিয়ে ইসলামি সেনাবাহিনী গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে ইরান। আপনি কি এই আর্মি গঠনের পক্ষে?

মোট ভোট: ১২৬২