ভারত শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে কথিত জঙ্গি হামলার পর ভারতের নেওয়া একতরফা কঠোর সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় এবার পাল্টা পদক্ষেপ নিতে চলেছে পাকিস্তান। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের আহ্বানে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
বুধবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘ডন’–এর বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, বৈঠকে ভারতের সিদ্ধান্তের জবাবে কূটনৈতিক ও আঞ্চলিক পর্যায়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা হবে।
গত সপ্তাহে জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন ভারতীয় পর্যটক নিহত হন এবং আহত হন আরও অন্তত ১৭ জন। ভারতের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এর জের ধরে দিল্লি একাধিক কঠোর পদক্ষেপ নেয়, যার মধ্যে রয়েছে সিন্ধু নদী পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভারত সফরের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি।
ভারতের এসব সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিক চুক্তির পরিপন্থী বলে উল্লেখ করে পাকিস্তান কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, “সিন্ধু পানি চুক্তি ভারত একতরফাভাবে স্থগিত করতে পারে না। এটি শুধু দ্বিপাক্ষিক বিষয় নয়, বরং বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সম্পৃক্ততা রয়েছে। এমন সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনেও বাধাগ্রস্ত হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন,
“ভারতের একতরফা আচরণের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিক্রিয়া শুধু কূটনৈতিক নয়, প্রয়োজনে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত ক্ষেত্রেও হবে।”
এদিকে, হামলার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দিল্লি ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো, বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন এবং আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপ তৈরির উদ্যোগ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত–পাকিস্তান উত্তেজনা নতুন নয়, তবে সাম্প্রতিক এই পরিস্থিতি দুই দেশের সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে। একদিকে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনার ঝুঁকি, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বিষয়টির প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। পরিস্থিতি অবনতির দিকে গেলে দক্ষিণ এশিয়ার সামগ্রিক স্থিতিশীলতা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?