দীর্ঘদিন ধরেই সীমান্ত সমস্যা সহ নানা ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থানে চীন ও ভারত। সম্প্রতি দেশ দুটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। তবে এমন অবস্থার মধ্যে তিব্বতে চীনের বাঁধ নির্মাণের খবরে তৈরি হয়েছে নতুন উত্তেজনা।
আনুমানিক ১৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার ব্যয়ে তিব্বতে ইয়ারলুং জাংবো নদীতে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে চীন। ভারত ও বাংলাদেশে এই নদী ব্রহ্মপুত্র নদ নামে পরিচিত। এটি নির্মিত হলে তা হবে পৃথিবীর বৃহত্তম বাঁধ। আর এই খবরেই এখন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ভারত। কেননা এই বাঁধ নির্মাণ হলে তা ভারতের ভাটি অঞ্চলের পানির প্রবাহ, পরিবেশ ও অর্থনীতির ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।
ভারত এরই মধ্যে চীনকে এ বিষয়ে তাদের উদ্বেগ জানিয়েছে। শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেন, অভিন্ন নদীর ক্ষেত্রে ভাটির দেশেরও কিছু অধিকার আছে। এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণের আগে ভাটির দেশের সঙ্গে আলোচনা করা জরুরি। পরিস্থিতির ওপর ভারত নজর রাখছে।
এদিকে দুই দিনের সফরে নয়াদিল্লি এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান। জানা গেছে তার এই সফরে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর চীনের তৈরি বাঁধগুলোর প্রভাব নিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবে তিনি। তিব্বতের মতো কৌশলগত অঞ্চলগুলোতে বাঁধ নির্মাণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনায় চীনের একতরফা উদ্যোগে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে চীনের প্রভাব আরও বাড়িয়ে তুলবে। ফলে ওয়াশিংটনও চীনের এই বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পগুলোকে গভীর উদ্বেগের চোখে দেখছে।
ব্রহ্মপুত্রে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বা এ ধরনের বড় বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি অনেক দিন ধরেই আলোচনায় আছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই বাঁধ নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় চীন সরকার। পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন অব চায়না বলছে, এটি থেকে বছরে ৩০ হাজার কোটি কিলোওয়াট–ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধটিও চীনে।
মধ্য চীনের থ্রি গর্জেস ড্যাম নামের ওই বাঁধের উৎপাদন সক্ষমতা ৮ হাজার ৮২০ কোটি কিলোওয়াট–ঘণ্টা। নতুন জলবিদ্যুৎ বাঁধটির উৎপাদন সক্ষমতা হবে এর তিন গুণ।
বাঁধ নির্মাণ ছাড়াও লাদাখের কিছু এলাকা নিয়ে হোটন প্রদেশে চীন দুটি নতুন প্রশাসনিক অঞ্চল বা কাউন্টি গড়ে তুলেছে। সম্প্রতি সেই ঘোষণা দিয়েছে তারা। ওই সিদ্ধান্তেরও প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। তবে সাধারণত চীন এ ধরনের কোনো ওজর–আপত্তিতে কান দেয় না। ২০২০ সালের সংঘর্ষের পর পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর স্থিতাবস্থা বজায় রাখার ভারতীয় দাবিও তারা আজ পর্যন্ত পুরোপুরি মেনে নেয়নি। কাজেই বাঁধ তৈরির এই সিদ্ধান্ত চীন পুনর্বিচার করবে, এমন সম্ভাবনাও নেই বললেই চলে।

তুরস্ক, সৌদি ও পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশ নিয়ে ইসলামি সেনাবাহিনী গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে ইরান। আপনি কি এই আর্মি গঠনের পক্ষে?