শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

রাজনীতি

জামায়াতের সাথে ঐক্যের কারণে নেজামে ইসলাম পার্টি বিলুপ্তপ্রায়! একান্ত সাক্ষাতকারে আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

অতিসম্প্রতি (২৫ অক্টোবর) ফেনীর মিজান ময়দানে অরাজনৈতিক দল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর দেয়া ‘জামায়াত মদিনার ইসলাম নয়; মওদুদীর ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়’ শীর্ষক মন্তব্যে জামায়াতের নেতৃত্বে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে জোট গঠনে প্রাথমিক ধাক্কা লেগেছে বলে প্রতিভাত হচ্ছে। হেফাজত আমীরের এ বিস্ফোরক মন্তব্যের পর গত ২৯ অক্টোবর জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে […]

নিউজ ডেস্ক

০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২০:১৩

অতিসম্প্রতি (২৫ অক্টোবর) ফেনীর মিজান ময়দানে অরাজনৈতিক দল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর দেয়া ‘জামায়াত মদিনার ইসলাম নয়; মওদুদীর ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়’ শীর্ষক মন্তব্যে জামায়াতের নেতৃত্বে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে জোট গঠনে প্রাথমিক ধাক্কা লেগেছে বলে প্রতিভাত হচ্ছে।

হেফাজত আমীরের এ বিস্ফোরক মন্তব্যের পর গত ২৯ অক্টোবর জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর শাহজাহান চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ফটিকছড়ি’র বাবুনগর মাদ্রাসায় হেফাজত আমীরের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়ে ‘এই মুহুর্তে এ ধরণের মন্তব্য না করতে ওনাকে অনুরোধ করায়’ বিষয়টি আরো প্রকাশ্যে চলে আসে বলে প্রতিয়মান হচ্ছে। ইসলামী অঙ্গনের অন্দরমহলে এ নিয়ে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এ বৈঠক নিয়ে ৩০ অক্টোবর হেফাজত আমীর পরিচালিত বাবুনগর মাদ্রাসা শিক্ষক ও নাতনী জামাই মাওলানা ফরিদুল আলম আমিনী কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া একটি স্ট্যাটাস আরো খোলাসা করে দিয়েছে বিষয়টি। তার স্ট্যাটাসটি ছিল এ রকম ‘একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার সাক্ষী’
“গতকাল ২৯ শে অক্টোবর রোজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার সময় জামিয়া বাবুনগরে একটি গুরুত্বপূর্ণ মজলিস বসে। কাকতালীয় সে বৈঠক সম্পর্কে কারো প্রস্তুতি ছিলোনা।

মূলত গত ২৫ শে অক্টোবর জুমাবার ফেনির মিজান ময়দানে হেফাজতের উদ্যোগে আয়োজিত মহাসম্মেলনে আমীরে হেফাজত মুজাহিদে মিল্লাত আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহ সময়ের অতীব প্রয়োজনীয় যদিও তিক্ত একটি মহাসত্য অত্যন্ত সাহসিকতা ও বাস্তবতার নিরিখে ঘোষণা দেন যে, জামায়াতে ইসলামীকে ওলামায়ে দেওবন্দ ইসলামী দল মনে করে না।

আমীরে হেফাজতের এই দুঃসাহসিক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সারাদেশের কিছু দেওবন্দী চেতনা তথা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বিরোধী মানস্পটে মারাত্মকভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম সাতকানিয়ার সাবেক এমপি জনাব শাহজাহান চৌধুরীর নেতৃত্বে আমীরে হেফাজতের সাক্ষাতে মিলিত হন। তারা সম্প্রতি জামায়াতের সাথে ঐক্য প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত কিছু আলেমের নাম মেনশন করে তার বিপরীতে আমীরে হেফাজতের বক্তব্যের হাল হাকীকত, যথার্থতা জানতে চান।

আমীরে হেফাজত বলেন, আমি আমার শায়খ ও মুরশিদ শায়খুল ইসলাম হযরত হুসাইন আহমদ মাদানী রাহিমাহুল্লাহর জবানে সরাসরি একাধিকবার উপরোক্ত কথাগুলো শুনেছি, যা আমরা সব দেওবন্দী ওলামায়ে কেরাম মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। এতে তারা জানতে চান যে, হযরত মাদানী রাহিমাহুল্লাহর আরো অনেক শাগরিদ ও খলীফা এমন রয়েছেন যারা জামায়াতে ইসলামী বা মাওলানা মওদূদী রাহিমাহুল্লাহর সাথে কাজ করেছেন, সহযোগিতা করেছেন।

তখন আমীরে হেফাজত বললেন, আমি যখন দেওবন্দ যাই তখন হযরত মাদানী রাহিমাহুল্লাহর প্রায় শেষ অবস্থা। মাওলানা মওদূদীর সাথে প্রথম দিকে হযরত মাদানী রাহিমাহুল্লাহর ভালো সম্পর্ক ছিলো, সাথে আরো অনেক দেওবন্দী ওলামায়ে কেরামের সাথে সুসম্পন্ন ছিলো। যেমন মাওলানা মনজুর নোমানী রাহ., মাওলানা সাইয়িদ আবুল হাসান আলী নদভী রাহ. প্রমূখ।

তবে মাওলানা মওদূদীর সাথে ওলামায়ে দেওবন্দের সম্পর্কের গভীরতায় মাওলানা মওদুদির অনেক হাকীকত ও দ্বীনী মুদাহানাত, গোমরাহি ধরা পড়ে। যদ্দরূণ প্রায়জন শেষ পর্যন্ত মাওলানা মওদূদীর জামায়াত থেকে বেরিয়ে আসেন। সুতরাং হযরত মাদানী রাহিমাহুল্লাহর শুরুর দিকে অনেক খুলাফা, মুরীদান হয়তো সে সুবাদে তার সাথে সুসম্পর্ক রাখতেন। আর মানুষের শেষ অবস্থানই আসল।

আমীরে হেফাজত বরাবরের মতো তার দৃঢ়চেতা মনোবল ও আকীদার প্রশ্নে অটুট থাকেন। এতে তারা বিভিন্ন ছলচাতুরীর আশ্রয় নেন। তারা বারংবার এ কথা খুব দৃঢ়তার সাথে বুঝাতে থাকেন যে, সত্তর বছরের ইতিহাসে এভাবে কোনো দেওবন্দী আলেম জনসমক্ষে এ রকম কথা বলেননি, যা আপনি বলেছেন। তখন আমীরে হেফাজত বললেন, বিষয়টি আসলে তেমন নয়। যুগে যুগে হক্কানী ওলামায়ে দেওবন্দ তাদের বক্তব্য, লেখনী ও নানা মাধ্যমে মওদূদীর গোমরাহি সম্পর্কে জাতিকে সতর্ক করেছিলেন।

তারই ধারাবাহিকতায় আমার এ অবস্থান। তখন উনারা একথা ঘুরেফিরে বলতে থাকেন যে, জামায়াতের সাথে অতীতে অনেক দেওবন্দী আলেমদের সাথে সুসম্পর্ক বা জোট গঠন হয়েছিল। যেমন শায়খুল হাদীস আজিজুল হক রাহ., মুফতি ফজলুল হক আমিনী রাহ., মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রাহ. প্রমূখ। বিগত সময়ে আমীরে হেফাজত আল্লামা আহমদ শফি রাহ., আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী রাহ. ও হাল জমানার হেফাজত নেতৃবৃন্দের সাথে সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেন।

তখন আমীরে হেফাজত বলেন, এসব সম্পর্ক অতীতেও ছিলো, এখনো আছে হয়তো আগামীতেও থাকবে। কারণ এগুলো ভূ-রাজনৈতিক বা সময়ের সমীকরণে সম্পর্ক, আকীদাগত সম্পর্ক বা জোট নয়।
সম্মানিত মেহমানবৃন্দ বারবার জানতে চান যে, আপনাদের সাথে আমাদের বিরোধ কোথায়? তখন জামিয়া বাবুনগরের সম্মানিত শায়খুল হাদীস ও প্রধান মুফতি আল্লামা মুফতি মাহমূদ হাসান হাফিজাহুল্লাহ বলেন, বিরোধ মূলত কিছু ঈমান কেন্দ্রিক আকীদাগত বিষয়ে।

যেমন ইসমতে আম্বিয়া, মিয়ারে হক ইত্যাদি। তখন উনারা বলেন, এগুলো সত্তর বছরের মীমাংসিত ইস্যু। তখন হযরত মুফতি সাহেব হুজুর, জামিয়ার নায়েবে মুহতামিম সাহেব হুজুর ও বিশিষ্ট মুহাদ্দিস হযরত মুফতি মীর হুসাইন রামগড়ী হুজর বললেন, যদি সত্যিকারে আপনারা ঘোষণা দেন যে, মাওলানা মওদূদীর গোমরাহি আকীদার সাথে জামায়াতে ইসলামী একমত নন, তাহলে তো আর কোনো বিরোধ থাকেনা বা আপনাদের সাথে ঐক্য হওয়ার পথে কোনো বাধা, বিপত্তি থাকেনা।

তখন তারা বলেন যে, আমরা আপনাদের সাথে মুনাযারা বা তর্ক করার জন্য আসিনি; বরং আমরা হুজুরের নিকট দুআ নিতে এসেছি। যখন হুজুরদের পক্ষ থেকে বলা হলো, আপনারা মুখে মওদূদীর আকীদার কথা না মানার কথা বলেছেন, বাস্তবতা তার বিপরীত। কারণ মাওলানা মওদূদী জামায়াতের ফাউন্ডার ফাদার বা প্রতিষ্ঠাতা। তখন মেহমানবৃন্দ বলেন, জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা একজন নন।

বরং পঁচাত্তর জন। তাদের সবার চিন্তা, চেতনায় জামায়াতের উদ্ভব ঘটে। এক কথায় হুজুরদের পক্ষ থেকে যতবার উনাদের আকীদাগত ত্রুটি তুলে ধরা হয় উনারা বলেন, আমরা বহসের জন্য আসিনি। অথচ উনারা মাওলানা মরহুম কারী ইলিয়াছ সাহেবের লিখিত কিতাব মাওলানা মওদূদী ওলামায়ে দেওবন্দ কি নযর মে কিতাবটিসহ আরো বই সাথে নিয়ে আসেন।

এ প্রথম জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সরাসরি কোনো মজলিস। যেখান থেকে বুঝলাম তারা রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট পরিপক্ব ও রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিতে উস্তাদ। তবে আকীদাগতভাবে কাঙ্গাল। তাদের একটি দিক আমার ভালো লেগেছ, সেটা হলো জনাব শাহজাহান চৌধুরী যখন কথা বলেন তখন তারা সবাই নিশ্চুপ থাকেন। সবচে কয়েকটি ভাবনার বিষয় হলো,

এক. তারা দীর্ঘ ইতিহাস ফিরিস্তি তুলে ধরেও আমীরে হেফাজতের দৃঢ় মনোবলের কাছে ধরাশায়ী হলেন।

দুই. আরো অনেকের মতো তারাও ভাব দেখিয়ে আমীরে হেফাজতের আখলাকে হাসানাহ’র কাছে পরাজিত হন (তিনি যেহেতু কুরাইশী গোত্রের উত্তরাধিকারী, তাই উচ্চ আখলাকে হাসানাহ ও তাওহীদে খালেসের ব্যাপারে তিনি অটল থাকেন।

তার আখলাকে হাসানাহ’র কারণে বহু শত্রুও পরে ভুল বুঝতে পেরে ফিরে আসেন। তার আখলাকে হাসানাহ কেমন, তার সাথে সাক্ষাত কিংবা কথা বললে বুঝা যায়। তার শত্রুরাও তার আখলাকের কথা নির্দ্বিধায় স্বীকার করেন)।

তিন. তারা হয়তো মনে করেছেন যে, আমীরে হেফাজত এরকম বক্তব্য কারো কানাঘুষা বা প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়ে প্রদান করেছেন, আশাকরি পরিশেষে তারা বুঝতে সক্ষম হন যে, তিনি কারো ফাঁদে পা দিয়ে নয়, বরং নিজের দৃঢ় অবস্থান থেকে এমন বক্তব্য দিয়েছেন (আমীরে হেফাজতের ব্যাপারে অনেকেই হয়তো ভূল বুঝতে পারেন যে, তিনি হয়তো কোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে কারো কানাঘুষা দ্বারা প্ররোচিত হন।

এটি সম্পূর্ণ ভূল। তিনি প্রায়শ বলেন, আমি বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও আকল পরিপূর্ণ ঠিক আছে। তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নিকট থেকে নিকটতম কারো কথাকে পাত্তা দেন না। যা তিনি ন্যায়সঙ্গত ও সত্য মনে করেন তাই তিনি সিদ্ধান্ত দেন। বা কারো পক্ষাবলম্বন করেন। সে সিদ্ধান্তের ফলাফল কেউ সাময়িক বুঝতে অক্ষম হলেও পরে এক সময় তার সত্যতা, বাস্তবতা বুঝে আসে। তিনি ফেরাসত বা দূরদর্শী চিন্তার অধিকারী। তাই অনেকে সেগুলো বুঝতে পারেন না, যদ্দরূণ অযথা সমালোচনা করেন)।

চার. বাংলাদেশে বর্তমানে কওমি অঙ্গনে যে সকল মুরুব্বীগণ দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন তাদের মাঝে সবচে বয়োজ্যেষ্ঠ, অধিক আকাবিরের দেওবন্দের সুহবতপ্রাপ্ত, সবচে আহলে ইলম ওয়াত তাকওয়া, বিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ হচ্ছেন আমীরে হেফাজত। তিনি শুধু বয়সের দিকে সবার বড় নন, বরং ইলম, হিলম, আমল, তাকওয়া, তাহারাত, যুহদ, আখলাকে হাসানাহর, বিজ্ঞতা, প্রাজ্ঞতা ও অভিজ্ঞতার বিচারেও সবার শীর্ষে। সুতরাং এ সাক্ষাত সংক্রান্ত কোনো বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো সুযোগ নাই।”

স্ট্যাটাসটির সত্যতা নিশ্চিতে গত বুধবার বিকেলে ফরিদুল আলম আমিনীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন ‘আমি আমার দেয়া স্ট্যাটাসে অবিচল আছি। ওই বৈঠকে আমি মাঝ সময় থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলাম। তারই আলোকে আমি তা সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করেছি’।
‘জামায়াত মদিনার ইসলাম নয়;

মওদুদীর ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়’ সাম্প্রতিক এ মন্তব্য নিয়ে হেফাজত আমীরের সাথে গত বুধবার বিকেলে এ প্রতিবেদক দেখা করলে তিনি একান্ত আলাপচারিতায় আরো ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, জামায়াতের সাথে আমার কোন রাজনৈতিক বা অন্য কোন বিরোধ নেই।

আমি বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলেও নেই। এক সময় মুফতি ফজলুল হক আমিনীর নেতৃত্বে আমরা কওমী অঙ্গনে কাজ করা রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে ইসলামী ঐক্যজোট গঠন এবং বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটও গঠন করি। তা ছিল রাজনৈতিক কৌশলগত;

আঁকিদাগত ভাবে জামায়াতের সাথে আমাদের ঐক্য কখনোই ছিল না। মূলত: বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে উপমহাদেশে অগ্রভাগে নেতৃত্ব দেন মাওলানা হোসাইন আহমদ মাদানী। কিন্তু দেশ স্বাধীনের সময় জিন্নাহ’র দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান আলাদা হয়ে যায়। তারও ১৫/১৬ বছর পর আমি পাকিস্তান থেকে ভারতের দেওবন্দে পড়তে যাই। সেখানে মাওলানা হোসাইন আহমদ মাদানী আমার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন।

একদিন আমার শায়খের কাছে নেজামে ইসলাম পার্টির প্রধান মাওলানা আতাহার আলী পরামর্শ নিতে যান যে, মওদুদীর নেতৃত্বাধীন জামায়াতের সঙ্গে আমরা নির্বাচনী জোট গঠন করতে পারি কিনা? এ সময় মাওলানা আতাহার আলীকে মাওলানা মাদানী পাল্টা প্রশ্ন করেন ‘জামায়াতে ইসলামী এবং নেজামে ইসলাম পাটি একি নীতিতে বিশ^াসী কিনা? তখন আতাহার আলী বললেন ‘না’।

মাদানী ছাহেব বললেন- তাইলে ঐক্য কিসের ভিত্তিতে? মওদুদী যেহেতু সাহাবী এবং ইজমা-কেয়াস মানে না- সেহেতু তার সাথে ঐক্য হতে পারে না। তারই আলোকে আমি রেফারেন্স হিসেবে বলেছি ‘জামায়াত মদিনার ইসলাম চায় না; মওদুদীর ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়’। ইনকিলাব সম্পাদক মঙ্গলবার তার এক সভায় আমার এ বক্তব্য সমর্থন করায় আমি তাকেও আন্তরিক মোবারকবাদ জানাই।

জামায়াতের বর্তমান নেতৃত্বে কোন আলেম নেই। আমীর চিকিৎসক আর সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক। এদের দিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা বা ব্যাখ্যা প্রদান কেমনে সম্ভব? এরপর বলি- নেজামে ইসলাম পার্টি যুক্তফ্রন্টের সাথে নির্বাচনে গিয়ে প্রাদেশিক ৩৫টি এবং কেন্দ্রীয় ১৫টি আসনে জিতে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যের ব্যাপার- সেই নেজামে ইসলাম পার্টির জেনারেল সেক্রেটারী মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ নিষিদ্ধ জামায়াতের আমীর মাওলানা আব্দুর রহিমের সাথে মিলে আইডিএল করে শেষ হয়ে গেছে। বলতে গেলে ‘জামায়াতের সাথে ঐক্যের কারণেই নেজামে ইসলাম পার্টি এখন বিলুপ্তপ্রায়’!

তারা কিংবা কওমী অঙ্গনে কাজ করা অন্যান্য দলগুলো যদি জামায়াতের সাথে ঐক্য করে- তবে একি দশা হবে তাদেরও। আমি স্পষ্টভাষী মানুষ। কেউ যদি হেফাজতকে ছায়া হিসেবে নিয়ে জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য করে হুকুমতে যেতে চায়- তাতে আমি নেই। হেফাজত কারো ক্ষমতার সিড়ি হবে না। আমরা রাজনৈতিক দল না। কাউকে সমর্থনও করতে পারি না। হ্যাঁ; জামায়াত একটি ভালো রাজনৈতিক দল মনে করলে জনগণ তাদের ভোট দিতে পারে। এতে আমার কোন আপত্তি নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে হেফাজত আমীর আল্লামা শাহ মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, আওয়ামীলীগের সাথে আমাদের কোন বিরোধ ছিল না। তারা মানুষের উপর জুলুম-অত্যাচার করেছে। নৈরাজ্য সৃষ্টি করে নির্বিচারে মানুষ মেরেছে। শাপলা চত্বরে আমাদের রক্ত রঞ্জিত করেছে। শত শত আলেম-তলাবা শহীদ করেছে।

সব দখল করেছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। হাজারো মানুষ হত্যা করে অবশেষে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। আল্লাহ মহাপরিকল্পনাকারী। তার কাছে ছাড় পায়নি। এ রকম জঘন্য শাসক আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া উচিত না। তাদের থেকে সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে।

তিনি আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে বলেন, যেদিন প্রেসিডেন্ট জিয়া মারা গেলেন; সকালে মাদ্রাসায় গিয়ে দেখি আমার পিতা মাওলানা হারুন বাবুনগরী তাঁর অফিসের ভেতরে পুত্র শোকের মতো গুঁগড়ে গুঁগড়ে কাঁদছেন! জিজ্ঞেস করলাম- এত বিলাপ করে কাঁদছেন কেন? তিনি আমারে বললেন- তুই শুনসনি প্রেসিডেন্ট জিয়াকে মেরে ফেলছে! তো এভাবে কাঁদতে হবে কেন?

উত্তরে বললেন- আমি তাঁর মাঝে খোলাফায়ে রাশেদীনের কিছু নমুনা দেখতে পেয়েছি। এজন্য কাঁদছি। আমার পিতার মৃত্যুর পর হেফাজতের সাবেক মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদীর কাছে শুনলাম- ওনি নাকি ঢাকার কাটারায় মসজিদে ইমামতি করা কালে এক ব্যবসায়ীর ছেলেকে কারে করে এবং প্রেসিডেন্ট জিয়ার পুত্রকে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যেতে দেখতেন। একদিন তিনি প্রেসিডেন্ট জিয়ার ছেলেকে (সম্ভবত তারেক) জিজ্ঞেস করেন- তোমার বাবা প্রেসিডেন্ট; বঙ্গভবনের চারিপাশে এতগুলো কার আছে,

সেগুলোতে করে তোমাকে স্কুলে পাঠায় না কেন? প্রতি উত্তরে ছেলেটি জানিয়েছিল- বাবাকে বলেছিলাম কারে করে পাঠাতে; উনি বলেছেন- বঙ্গভবনের কার গুলো নাকি তার বাবার কেনা না! আরেকদিন প্রেসিডেন্ট জিয়া বঙ্গভবনে খতমে কোরআন আয়োজন করেন। সেখানে তাকেও ঢাকার মসজিদের ইমাম হিসেবে দাওয়াত দেয়া হয়। সেখানে কোরআন খতমের সময় নীরব বসে থাকেন প্রেসিডেন্ট জিয়া।

খতম শেষে লাল চা আর বেলা বিস্কুট দিয়ে আলেমদের আপ্যায়ন করান। এ সময় তিনি আলেমদের বলেন, এ খতমে কোরআন আমার নিজের টাকায় দেয়া। তাই ভালো করে আপনাদের আপ্যায়ন করাতে পারিনি বলে দুঃখিত। আরেকদিন শুনলাম- জিয়া রাষ্ট্রীয় সফরে নেপাল যান খালেদা জিয়াকে সাথে নিয়ে। সেখান রাজা খালেদা জিয়াকে একটি স্বর্ণের হার উপহার দেন।

দেশে এসে সেই স্বর্ণের হার খালেদা জিয়ার গলা থেকে খুলে নেন এবং বলেন, এটি তোমাকে নয়; দেশের প্রেসিডেন্টের স্ত্রী হিসেবে দেয়া। অতএব এটা রাষ্ট্রীয় সম্পদ। পরে তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়া হয়। জিয়া নিজে শ্রমিকদের সাথে রাঙ্গুনিয়ায় খাল কেটেছে।

এ জিয়া মারা যাওয়ার সময় একাউন্টে ৬০০ টাকা ছিল; স্যুটকেটে জায়নামাজ, তসবিহ, লুঙ্গি, গেঞ্জি ছাড়া কিছুই ছিল না। তখন আমার মনে পড়ল- আমার পিতা এজন্যই বলেছিলেন; জিয়ার কাছে খোলাফাদের নমুনা ছিল। এমন পিতার সন্তান তারেক রহমানকে দেশের মানুষ পিতার মতো হিসেবে দেখতে চায়।

এটা তারেক রহমানকে মনে রাখতে হবে। যেভাবে ষড়যন্ত্র চলছে; সতর্ক থাকতে হবে। ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে সুযোগ দিতে হবে। তাকেও খেয়াল রাখতে হবে অপশক্তি আবার যেন দেশে আসতে না পারে।

০২ মে ২০২৫
poll_title
দুইজন ভারতীয়কে বাংলাদেশে ধরে নিয়ে আসার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?

মোট ভোট: ১৪৭৪

রাজনীতি

ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রী এবং মেয়ে আটক

এটি কি নিয়মতান্ত্রিক কোনো প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো নির্দেশনা বা রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করেছে?

নিউজ ডেস্ক

১৩ মে ২০২৫, ১৩:৫৮

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রী শেখ শাইরা শারমিনের বিদেশযাত্রায় বাধা দেওয়ার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি থাইল্যান্ডগামী থাই এয়ারওয়েজের টিজি৩২২ ফ্লাইটে ওঠার প্রস্তুতি নিলেও ইমিগ্রেশন কাউন্টার থেকে তাকে থামিয়ে দেওয়া হয়। তিনি ফ্লাইটে উঠতে পারেননি।

বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে তিনি ফ্লাইটের জন্য চেক-ইন সম্পন্ন করলেও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ কোনো নির্দিষ্ট কারণ না জানিয়ে তাকে ফ্লাইটে ওঠার অনুমতি দেয়নি। তবে ইমিগ্রেশন বা কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

শেখ শাইরা শারমিনের পারিবারিক পরিচিতি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক বলয়ের সঙ্গে যুক্ত। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের ভাই শেখ আবু নাসেরের ছেলে শেখ হেলাল উদ্দীনের কন্যা এবং বাগেরহাট-২ আসনের আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়ের বড় বোন। অন্যদিকে, তার স্বামী আন্দালিব রহমান পার্থ একজন বিরোধী রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সক্রিয় থেকেছেন।

এই প্রেক্ষাপটে একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হয়েও বিদেশযাত্রায় বাধার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে—এটি কি নিয়মতান্ত্রিক কোনো প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো নির্দেশনা বা রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করেছে?

আইন ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের স্বচ্ছতা নিয়ে এ ধরনের ঘটনার পর নানা ধরনের আলোচনা এবং ব্যাখ্যার সুযোগ তৈরি হয়। বিশেষ করে যখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সরাসরি কোনো মামলার আসামি নন কিংবা তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, তখন এমন ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন তৈরি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।

বর্তমানে এই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হোক বা রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডপ্রসূত কারণ—ঘটনাটির স্বচ্ছ ব্যাখ্যা প্রয়োজন, যাতে বিভ্রান্তি না ছড়ায় এবং নাগরিকদের অধিকার বিষয়ে আস্থার পরিবেশ অটুট থাকে।

০২ মে ২০২৫
poll_title
দুইজন ভারতীয়কে বাংলাদেশে ধরে নিয়ে আসার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?

মোট ভোট: ১৪৭৪

রাজনীতি

ভারতে আশ্রয় নেওয়া সব আ:লীগ নেতাদের দেশে ফিরতে নির্দেশ দিলেন শেখ হাসিনা

দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে থাকা নেতাদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে সবাইকে দেশে ফিরতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা ফিরবেন না, তাদেরকে আটক করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে এবং আইনের আওতায় আনা হবে।

নিউজ ডেস্ক

১৭ মে ২০২৫, ১৭:০৩

গণহত্যা, দমন-পীড়ন ও অন্যান্য গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগপন্থী বহু নেতা এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে। ভারতের অভ্যন্তরে থাকা অবৈধ বিদেশিদের দ্রুত দেশত্যাগের নির্দেশ জারির পর দেশটিতে পালিয়ে থাকা এসব নেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে দেশ ছাড়ার হিড়িক।

আগস্ট মাস থেকে এ নির্দেশনা আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করার কথা থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।

পুশব্যাক ও গ্রেফতারের আশঙ্কায় অনেক নেতা ভারতে অবস্থান ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন। ইতিমধ্যে ৫০ জনেরও বেশি নেতা ইউরোপ ও আমেরিকায় পালিয়ে গেছেন এবং অনেকে নতুন করে এসব দেশে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন। তবে পালিয়ে বাঁচা যেন খুব সহজ হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে থাকা নেতাদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে সবাইকে দেশে ফিরতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা ফিরবেন না, তাদেরকে আটক করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে এবং আইনের আওতায় আনা হবে।

এ লক্ষ্যে সরকার আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বহুমুখী কূটনৈতিক ও আইনি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

সরকারের একটি গোপন সূত্র জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়ায় ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় আছে। সরকার চায়, এসব অপরাধের দ্রুত বিচার কার্যকর হোক এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক।

এই প্রেক্ষাপটে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা নেতাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে আত্মগোপনে গেছেন, আবার কেউ কেউ দেশে ফেরার উপায় খুঁজছেন।

০২ মে ২০২৫
poll_title
দুইজন ভারতীয়কে বাংলাদেশে ধরে নিয়ে আসার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?

মোট ভোট: ১৪৭৪

রাজনীতি

প্রধান উপদেষ্টার সামনে নির্বাচনের সময় নিয়ে বৈঠকে ‘তর্কে’ জড়ালেন সালাহউদ্দিন ও নাহিদ

বিএনপির পক্ষ থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিএনপি ৩১ ডিসেম্বরের এক দিন পরেও জাতীয় নির্বাচন মেনে নেবে না। সংবিধান সংশোধন ছাড়া অন্য সব সংস্কার এক মাসেই সম্ভব।”

নিউজ ডেস্ক

০৩ জুন ২০২৫, ১৮:১৭

রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সোমবার (২ জুন) বিকেলে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এই আলোচনা শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের প্রধান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আলোচনার শুরুতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমি প্রতিদিন যেসব বৈঠক করি, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাই আপনাদের সঙ্গে বসে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলাপ করার সময়। এখানেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রচিত হচ্ছে।”

আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল প্রয়োজনীয় সংস্কার নির্ধারণ ও তা বাস্তবায়নের রোডম্যাপ ঠিক করা। তবে আলোচনা ঘুরে দাঁড়ায় নির্বাচন কবে হবে, সেই সময়সূচি নিয়ে বিতর্কে।

বিএনপির পক্ষ থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিএনপি ৩১ ডিসেম্বরের এক দিন পরেও জাতীয় নির্বাচন মেনে নেবে না। সংবিধান সংশোধন ছাড়া অন্য সব সংস্কার এক মাসেই সম্ভব।”

এরপর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ মন্তব্য করেন, “কিছু দল ভারতের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়।” এ বক্তব্যে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, “ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইলে সেটা যদি ভারতের সুর হয়, তাহলে যারা নির্বাচন পেছাতে চায়, তারা কি যুক্তরাষ্ট্র বা চীনের সুরে কথা বলছে?”

এই বক্তব্যে বৈঠকে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং এনসিপি ও বিএনপির প্রতিনিধিদের মধ্যে তীব্র বিতণ্ডা শুরু হয়।

বৈঠক শেষে সালাহউদ্দিন বলেন, “নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।” অন্যদিকে, এনসিপি নেতা নাহিদ বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলে সংস্কার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে।”

আলোচনায় অংশ নেওয়া নেতাদের মতে, আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল সংস্কার, কিন্তু বাস্তবে বিতর্ক আবর্তিত হয়েছে নির্বাচন সময়সূচিকে ঘিরে।

০২ মে ২০২৫
poll_title
দুইজন ভারতীয়কে বাংলাদেশে ধরে নিয়ে আসার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?

মোট ভোট: ১৪৭৪