জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, তাদের আন্দোলন শুধুমাত্র ফ্যাসিবাদী শাসন উচ্ছেদের জন্য ছিল না, বরং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্যই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে স্বৈরতন্ত্র বিতাড়িত করা হয়েছে, কোনো নতুন সংকট তৈরি করার জন্য নয়।
শনিবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় সাংবাদিকদের সম্মানে আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তবে তারা জানিয়ে দিতে চান, ফ্যাসিবাদ উৎখাত করার মতোই শক্ত অবস্থানে থেকে তারা যেকোনো নতুন স্বৈরাচারী শক্তির বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াবে।
গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক চাপের বাইরে গিয়ে স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশের যে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হয়ে থাকবে। তিনি আরও বলেন, দেশকে সংস্কারের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা এখনো চলমান রয়েছে। গণতান্ত্রিক উত্তরণের এই পথে সাংবাদিকদের দায়িত্ব হলো বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করা এবং কোনো রাজনৈতিক শক্তির কাছে মাথা নত না করা।
৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের দল মাত্র ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করেছে। এখন আমাদের প্রধান কাজ হলো দলের আনুষ্ঠানিক নিবন্ধন সম্পন্ন করা এবং সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানো। নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তবে বর্তমানে আমাদের অগ্রাধিকার হলো রাজনৈতিক কাঠামো শক্তিশালী করা।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই আন্দোলন সম্পূর্ণরূপে অরাজনৈতিক একটি প্লাটফর্ম। এটি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, বরং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন এবং গণহত্যার বিচারের দাবিতে কাজ করছে। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, কেউ যদি এই আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। অন্যায় করলে প্রচলিত আইনে তার বিচার হবে।”
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বর্তমান কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা পুলিশকে লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত করেছিল এবং রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে ব্যবহার করেছিল। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যারা এখনও মনে করেন, আওয়ামী লীগ বা অন্য কোনো স্বৈরতান্ত্রিক শক্তি ফিরে আসবে এবং পুলিশ বাহিনীকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করা হবে, তারা ভুল করছেন। বাংলাদেশের জনগণ এমন কোনো পুলিশিং আর চায় না। এখন জনগণের চাহিদার ভিত্তিতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কাজ করতে হবে।”
উক্ত অনুষ্ঠানে দেবিদ্বার উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীসহ উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী নাছির, ছাত্র প্রতিনিধি সাজেদুল রাশেদ রাফসান, খাইরুজ্জামান সবুজ, রাকিবুল ইসলাম হৃদয়, মাহমুদুল হাসান, তানভীর হাসান তুষার এবং এনসিপির প্রতিনিধি শামীম কাউছার।

জয় ও নিঝুম মজুমদারের এই আহ্বানকে দেশবিরোধী বলে মনে করেন ?