একসময় আপনি কিছুই ছিলেন না, মায়ের গর্ভে এক টুকরা মাংস মাত্র। তারপর আল্লাহ তাআলা আপনার মাঝে প্রাণের সঞ্চার করলেন, যখন ১২০তম দিনে এক ফেরেশতা এসে আপনাকে জীবন দিলেন। সেই ফেরেশতা আপনার জন্য আপনার ভাগ্যের লিখন চাইলেন; আপনার রিজিক, আপনার আমল, আপনার মৃত্যুর দিন, আর আপনি জান্নাতি হবেন নাকি জাহান্নামি।
এরপর পৃথিবীতে আপনার আগমন ঘটল। আপনি চোখ খুলে দেখলেন আলো, আর সেই মুহূর্তেই শয়তান আপনাকে নাড়া দিয়ে বলল, তুমি আর আমি এখানে দীর্ঘ সময় কাটাবো, আর আমি তোমাকে পথভ্রষ্ট করেই ছাড়বো। এদিকে, ফেরেশতারা নীরবে আপনাকে ভালো পথে আহ্বান করতে থাকল।
এরপর জীবনের যাত্রা শুরু হলো। সময় দ্রুত অতিক্রান্ত হতে লাগল। এক সময় আপনি উপলব্ধি করলেন, ৭০-৮০ বছরের এই জীবন যেন এক মুহূর্ত মাত্র! শৈশব, তারুণ্য, যৌবন, বার্ধক্য সব যেন এক ঝাপটায় পার হয়ে যায়। শয়তান আপনাকে খারাপের দিকে টানতে লাগল, আর ফেরেশতারা আপনাকে কল্যাণের পথে ডাকার চেষ্টা করল।
অবশেষে, বার্ধক্য এসে গেল। আপনি আবার সেই অসহায় অবস্থায় ফিরে গেলেন, যেভাবে একসময় এই পৃথিবীতে এসেছিলেন। তখন হঠাৎ দেখতে পেলেন, ফেরেশতারা আকাশ থেকে আপনার জন্য কাফন নিয়ে নেমে আসছেন। তারা আপনাকে ডেকে বলছেন, তোমার রবের দিকে ফিরে এসো! তাঁর ক্ষমার দিকে ফিরে এসো, তাঁর দয়ার দিকে ফিরে এসো! আমরা ছিলাম তোমার সাথেই, আর এখন তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি।
এরপর, রুহুকে বের করে নেওয়া হলো, আপনাকে কবরে রাখা হলো। সেখানে দুইজন ফেরেশতা এসে আপনাকে প্রশ্ন করলেন; তোমার রব কে? তোমার দ্বীন কী? তোমার নবী কে?
এরপর কেয়ামত দিবস আসবে। আপনাকে কবর থেকে উঠিয়ে নেওয়া হবে। এক ফেরেশতা আপনাকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে, আর অন্যজন আপনার পক্ষে বা বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবে।
যদি আপনি সৎকর্মশীল হন, তবে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। সেখানে ফেরেশতারা এসে আপনাকে বলবেন, দুনিয়াতে তুমি যে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছ, তার জন্য তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হোক!
এই পথচলায় আপনি কী সিদ্ধান্ত নেবেন? কোন দিক বেছে নেবেন? সময় চলে যাওয়ার আগে, আল্লাহর পথে ফিরে আসুন। কারণ, একদিন আমাদের সবাইকেই ফেরেশতাদের ডাক শুনতে হবে।