বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

ইসলাম ও জীবন

নবীজি সা. কীভাবে বিজয় উদযাপন করেছিলেন?

মাতৃভূমি শুধু একটি ভৌগোলিক সীমানা নয়, বরং তা আমাদের অস্তিত্বের মূল। যেখানে আমরা জন্মগ্রহণ করি, যেখানে আমাদের শৈশব কাটে, যেখানে আমাদের স্মৃতিগুলি জড়িত থাকে, সেই স্থানকেই আমরা মাতৃভূমি বলি। মাতৃভূমি প্রেম মানুষের স্বাভাবিক একটি অনুভূতি। যা আমাদের পরিচয়ের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইতিহাস জুড়ে দেখা যায়, মানুষ মাতৃভূমির জন্য নিজের প্রাণ দিয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু […]

নিউজ ডেস্ক

১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:০৩

মাতৃভূমি শুধু একটি ভৌগোলিক সীমানা নয়, বরং তা আমাদের অস্তিত্বের মূল। যেখানে আমরা জন্মগ্রহণ করি, যেখানে আমাদের শৈশব কাটে, যেখানে আমাদের স্মৃতিগুলি জড়িত থাকে, সেই স্থানকেই আমরা মাতৃভূমি বলি। মাতৃভূমি প্রেম মানুষের স্বাভাবিক একটি অনুভূতি। যা আমাদের পরিচয়ের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

ইতিহাস জুড়ে দেখা যায়, মানুষ মাতৃভূমির জন্য নিজের প্রাণ দিয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে মাতৃভূমির জন্য মানুষ আত্মাহুতি দিয়েছে। কুরআনুল কারিমেও বিজয়ের গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে। মাতৃভূমি প্রেম শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; মানবিক মূল্যবোধেরও একটি অংশ।

আজকের বিশ্বায়নের যুগে যখন মানুষ সারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ায়, তখনও মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা অবিরাম। দেশপ্রেমের উজ্জ্বল প্রমাণ দিয়েছেন প্রিয় নবীজি সা.। যেদিন তিনি মক্কা বিজয় করলেন শুকরিয়া নামাজ আদায় করলেন।

শুধু তাই নয়, কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়ালা বিজয় শিরোনামে নাসর ও ফাতহ নামের দুটি সুরা নাজিল করেছেন। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন, ‘যখন আল্লাহর সাহায্যে বিজয় আসবে, তখন মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করতে দেখবে। তখন তোমার প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করো। আর তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল’ (সুরা নাসর, আয়াত ১-৩)

পবিত্র কুরআনুল কারিমের এ সুরায় মহান আল্লাহ বিজয় উদযাপনের দুইটি পদ্ধতি নবীজিকে শিখিয়ে দিয়েছেন। এক. আল্লাহর প্রশংসায় তার পবিত্রতা বর্ণনা করা। দুই. যুদ্ধকালীন অজান্তে যেসব ভুলত্রুটি হয়েছে, তার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আমি তাদের পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা (বিজয়) দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, জাকাত দান করবে, সৎকাজের আদেশ করবে ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করবে (সুরা হজ, আয়াত ২২)।

নবীজি আল্লাহর দেয়া পদ্ধতিতে মক্কা বিজয় উদযাপন করলেন। বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মক্কা বিজয়ে নবীজি আনন্দে সর্বপ্রথম আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলেন।

আট রাকাত শুকরিয়ার নামাজ আদায় করে আনন্দ প্রকাশ করেন (জাদুল মায়াদ, আল্লামা ইবনুল কাইয়িম জাওজি)। নবীজির দেখাদেখি অনেক সাহাবিও তার অনুকরণে আট রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন।

এ আনন্দ উদযাপন ছিলো দশম হিজরিতে। যে দিন মক্কা বিজয় হয়। মহানবী সা. প্রিয় জন্মভূমির স্বাধীনতায় তিনি এত বেশি খুশি হয়েছিলেন, খুশিতে মহান রবের দরবারে সিজদায় লুটিয়ে পড়েন। বিজয়ের আনন্দে তিনি সেদিন ঘোষণা করেছিলেন, ‘যারা কাবাঘরে আশ্রয় নেবে তারা নিরাপদ।

এভাবে মক্কার সম্ভ্রান্ত কয়েকটি পরিবারের ঘরে যারা আশ্রয় নেবে, তারা যত অত্যাচার-নির্যাতনকারীই হোক না কেন তারাও নিরাপদ। এই ছিল প্রিয়নবীর মক্কা বিজয়ের আনন্দ উৎসবের ঘোষণা।

দেশপ্রেম ভালোবাসায় নবীজি বলেন, ‘আল্লাহর পথে একদিন ও এক রাত সীমান্ত পাহারা দেয়া এক মাস পর্যন্ত সিয়াম পালন ও এক মাস ধরে রাতে সালাত আদায়ের চেয়ে বেশি কল্যাণকর। যদি এ অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে, তাহলে যে কাজ সে করে যাচ্ছিল, মৃত্যুর পরও তা তার জন্য অব্যাহত থাকবে, তার রিজিক অব্যাহত থাকবে, কবর-হাশরের ফিতনা থেকে সে নিরাপদ থাকবে।’ (মুসলিম ১৯১৩)

নিজের শহর মক্কা ছেড়ে মদিনায় যাওয়ার পর নবীজির দেশপ্রেম বুঝা গিয়েছিলো। তিনি প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। হে আল্লাহ! আমার কাছে মক্কা যতোটা প্রিয় ছিল, এর চেয়ে বেশি প্রিয় আমার কাছে মদিনাকে বানিয়ে দাও। (ইবনে হিব্বান ৫৬০০)

মদিনা নিজের দেশ বানানোর পর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখনি মদিনার বাহির থেকে মদিনার দিকে ফিরে আসতেন। তখন নবীজি কী করতেন? এক হাদিসে আসছে,

হযরত হুমায়দ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি আনাস রা. কে বলতে শুনেছেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর থেকে ফিরে যখন মদিনার উঁচু রাস্তাগুলো দেখতেন তখন তিনি তার উটনীকে মদিনার মুহব্বতে দ্রুতগতিতে চালাতেন তার বাহন অন্য জানোয়ার হলে তিনি তাকে তাড়া দিতেন। (বুখারি ১৮০২ ১৬৮৫)

এ হাদিসের ব্যাখ্যায় হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি রহ বলেন, এ হাদিস মদিনার ফজিলতের সাথে সাথে নিজের দেশকে মুহাব্বত করা ও তার প্রতি টান অনুভব করার বৈধতার প্রমাণও বহন করে। (ফাতহুল বারি-৩/৬২১, ১৮০২)

ইবনে বাত্তাল রহ. লিখেন, মদিনার মুহাব্বতে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সওয়ারী দ্রুতগামী করার কারণ হলো, কেননা, এটি তার দেশ।

এতে তার পরিবার পরিজন ছিলেন। যারা লোকদের মাঝে তার কাছে সর্বাধিক প্রিয় ছিল। স্বীয় দেশের প্রতি ভালোবাসা এবং আন্তরিক টান অনুভব করা আল্লাহ তাআলা স্বভাবজাত বানিয়েছেন। যেমনটি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও করেছেন। যাতে আমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রয়োজনীয় সফর শেষ হবার পর স্বীয় পরিবারের কাছে দ্রুত ফিরে আসার আদেশ করেছেন। (শরহে বুখারি লিইবনে বাত্তাল-৪/৪৫৩)

নিজের মাতৃভূমি বা স্বীয় দেশকে মুহাব্বত করা, ভালোবাসা, তার প্রতি আন্তরিক টান অনুভব করা স্বভাবজাত বিষয়। রসুল সা. নিজের দেশকে ভালোবেসেছেন। দেশপ্রেম একটি সুন্নাহ।

মক্কা বিজয়ের দিন উটনির পিঠে সওয়ার হয়ে আনসার ও মুহাজির পরিবেষ্টিত অবস্থায় রসুলুল্লাহ সা. মক্কায় প্রবেশ করেন। এদিন তিনি আল্লাহর প্রতি বিনয়ী ও তার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায়কারী হিসাবে মক্কায় প্রবেশ করেন।

বিজয়ী সেনাপতির ন্যায় অহংকারীভাবে নয়। এ সময় তিনি সওয়ারির উপরে বসে সুরা ফাতহ বা তার কিছু অংশ ধীর কণ্ঠে বারবার পাঠ করছিলেন’ (বুখারি ৪২৮১, ৫০৪৭)।

তিনি মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করেন, হাতের মাথা বাঁকানো লাঠির মাধ্যমে হাজারে আসওয়াদ চুম্বন করেন। বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করেন।

এ সময় কাবাগৃহের ভিতরে ও বাইরে ৩৬০টি মূর্তি ছিল। রসুলুল্লাহ সা. হাতের লাঠি দিয়ে এগুলি ভাঙতে থাকেন। কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতটি পড়তে থাকেন। ‘তুমি বল, হক এসে গেছে, বাতিল দূরীভূত হয়েছে। নিশ্চয়ই বাতিল দূরীভূত হয়েই থাকে’ (বনু ইসরাঈল ৮১)।

তিনি আরও পড়েন,‘তুমি বল হক এসে গেছে এবং বাতিল আর না শুরু হবে, না ফিরে আসবে’ (সুরা সাবা ৪৯)। অর্থাৎ সত্যের মুকাবিলায় মিথ্যা এমনভাবে পর্যুদস্ত হয় যে, তা কোন বিষয়ের সূচনা বা পুনরাবৃত্তির যোগ্য থাকে না’ (বুখারি ৪২৮৭)।

আমরা যদি নবীজির মতো আমাদের মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করি, তবে তা শুধু আমাদের জীবনকে সার্থক করবে না, বরং সমাজ ও জাতির কল্যাণেরও পথ প্রশস্ত করবে।

তাই, মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও দেশের প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালন করা, শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্যই নয়, বরং মানবিক ও জাতীয় কর্তব্য হিসেবেও অপরিহার্য।

ইসলাম ও জীবন

বিশ্বের ১৬৫ দেশের মুসলিমরা ব্যবহার করছেন যে স্যোশাল মিডিয়া

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্সের মত সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মুসলিমদের তৈরি স্যোশাল মিডিয়া ‘আলফাফা’। বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৬৫টিরও বেশি দেশের প্রায় চার লাখ মুসলিম এটি ব্যবহার করছেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, আলফাফা জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হচ্ছে, আলফাফা মুসলিমদের জন্য সর্বোচ্চ ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। যে স্বাধীনতা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্সে পাওয়া যায় না। ইসলাম নিয়ে অধিকাংশ পোস্ট […]

নিউজ ডেস্ক

২০ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭:৪৭

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্সের মত সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মুসলিমদের তৈরি স্যোশাল মিডিয়া ‘আলফাফা’। বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৬৫টিরও বেশি দেশের প্রায় চার লাখ মুসলিম এটি ব্যবহার করছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, আলফাফা জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হচ্ছে, আলফাফা মুসলিমদের জন্য সর্বোচ্চ ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। যে স্বাধীনতা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্সে পাওয়া যায় না। ইসলাম নিয়ে অধিকাংশ পোস্ট ডিলেট করে দেয় তারা। কিন্তু আলফাফা তৈরিই করা হয়েছে মুসলিমদের জন্য।

জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের একদল মুসলিম যুবক শুরু করেন এ স্যোশাল সাইট। ক্রমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সাইটটি। বর্তমানে ১৬৫টিরও বেশি দেশের মুসলিম ব্যবহার করছে এ অ্যাপস। বিশেষ করে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড হয়েছে এক মিলিয়নেরও বেশি।

আলফাফার নির্বাহী পরিচালক আসিফ সাঈদ গণমাধ্যমকে জানান, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সহকর্মী ও বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করতে অনেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেরই প্রকাশ ঘটেছে। কিন্তু মুসলমানদের জন্য ঈমান-আমল ঠিক রেখে সে সবের অনেক কিছু ব্যবহার করা দুষ্কর। সেসব বিষয় মাথায় রেখে ইসলামি মতাদর্শ লালন করা যুক্তরাষ্ট্রের একদল যুবক নিয়ে এসেছে সম্পূর্ণ হালাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। নাম আলফাফা ডটকম।

এতে বিনামূল্যে আপনার ব্যবসা, মসজিদ, রেস্টুরেন্ট বা চাকরি ও পেশাদার প্রোফাইল তালিকাভুক্ত করতে পারবেন। অ্যামাজনের মতো ই-কমার্স হিসেবেও দেখতে পারেন মুসলিমদের পরিচালিত এ সাইটটি।

একটি বাটনের ক্লিকে বিশ্বজুড়ে আপনার বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সংযোগ করতে পারবেন সহজে। একই সঙ্গে স্যোশাল মিডিয়া, মুসলিম ডিরেক্টরি, ব্লগ, ফোরাম, জবস, টিচ, ই-কমার্সসহ নানান ফিচারে সাজানো হয়েছে সাইটটি। গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপসটি ডাউনলোড করতে লিখুন alfafaa.

ইসলাম ও জীবন

মাত্র সাড়ে ৪ বছর বয়সে মায়ের কাছে হাফেজ হলেন শিশু আহমাদ

মাত্র সাড়ে ৪ বছর বয়সে ১০ মাস সময়ে মায়ের কাছে কোরআন মাজিদের হিফজ সম্পন্ন করার এক বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুম। তার বয়স বর্তমানে ৪ বছর ৬ মাস ২৯ দিন। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় ঢাকার যাত্রাবাড়ির মাদরাসাতু উসওয়াতি ফাতিমাহ রাদিয়াল্লাহু আনহায় এ বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। তার শিক্ষক ছিলেন তারই মা, যিনি তাকে […]

নিউজ ডেস্ক

২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮:১৮

মাত্র সাড়ে ৪ বছর বয়সে ১০ মাস সময়ে মায়ের কাছে কোরআন মাজিদের হিফজ সম্পন্ন করার এক বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুম। তার বয়স বর্তমানে ৪ বছর ৬ মাস ২৯ দিন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় ঢাকার যাত্রাবাড়ির মাদরাসাতু উসওয়াতি ফাতিমাহ রাদিয়াল্লাহু আনহায় এ বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। তার শিক্ষক ছিলেন তারই মা, যিনি তাকে অত্যন্ত যত্ন ও আন্তরিকতায় হিফজ সম্পন্ন করিয়েছেন। হিফজের সময় আহমাদ কোরআনের বাংলা অর্থও শিখেছেন, যা তার প্রতিভার আরও একটি প্রমাণ।

বিশ্বখ্যাত কারি ও বিচারক শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আজহারীর মতে, এই বয়সে হিফজ সম্পন্ন করার ঘটনা বিশ্বে বিরল। ইরান বা আলজেরিয়ায় ৫ বছর বয়সে হিফজের দৃষ্টান্ত থাকলেও আহমাদের মতো সাড়ে চার বছরে এ অর্জন অভূতপূর্ব। আহমাদ তার হিফজ সম্পন্ন করতে সময় নিয়েছে মাত্র ১০ মাস ১৮ দিন।

তার মায়ের একান্ত ইচ্ছা, তিনি যেন বিশ্বমানের মুত্তাকি, মুখলিস হাফেজ ও আলেম হিসেবে গড়ে ওঠেন। আল্লাহ তাআলা তাকে সেই তাওফিক যেনো দান করেন, সে দোয়াই কামনা করেছেন তিনি।

বিস্ময় শিশু আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুমের বাবা, খ্যাতিমান টিভি উপস্থাপক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাসুম বিল্লাহ বিন রেজা গণমাধ্যমকে বলেন, মহান রবের দরবারে কোটি কোটি কৃতজ্ঞতা, মহান রব দয়া মায়া করে আমার কলিজার টুকরো আহমাদকে তাঁর মহান গ্রন্থ আল কোরআন হিফজ করার তাওফিক দান করেছেন। আমাদের সন্তানের এ অর্জন আমাদের জন্য শুধু গর্বের নয়, দায়িত্বেরও। আমরা চাই, আহমাদ যেন একদিন বিশ্বজুড়ে কোরআনের আলো ছড়ায় ও মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। আমি দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থী।

হাদিস ফাউন্ডেশন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানড. আহমাদ আবদুল্লাহ ছাকিব বলেন, ‘বাবা-মায়ের সঙ্গে এই বিস্ময় শিশু যখন আমার মারকাযে বেড়াতে আসে, তখন আমি নিজেই স্তব্ধ হয়ে যাই। শুধু কোরআন হিফজ নয়, সে কোরআনের শব্দার্থও শিখে নিয়েছে। বাংলা, ইংরেজি ও আরবি ভাষায় ঝরঝরে রিডিং করতে পারে। আরবিতে তার স্পিকিং দক্ষতাও অসাধারণ। সব মিলিয়ে এটি এক অবিশ্বাস্য প্রতিভা। এখানেই তার যাত্রা শেষ নয়। বুখারি ও মুসলিম শরিফের হাদিস ধারাবাহিকভাবে মুখস্থ করার লক্ষ্যে সে এগিয়ে যাবে এটাও সে জানায়। মাশাআল্লাহ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে মুসলিম উম্মাহর একজন সুবিজ্ঞ মুখলিস আলেমে দ্বীন হিসাবে কবুল করুন।’

কুয়েত প্রবাসী দাঈ, শায়খ হাবিবুর রহমান মাদানী বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, যিনি তাঁর অনুগ্রহে সকল কল্যাণ পরিপূর্ণ করেন। আল্লাহ এই শিশু ও তার পরিবারকে বরকত দিন। তাকে ইসলামের জন্য এক মূল্যবান সম্পদ বানিয়ে দিন এবং সকল অকল্যাণ থেকে রক্ষা করুন। এমন সংবাদ হৃদয়কে প্রশান্তি দেয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে উত্তম প্রতিদান দিন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফেজ হুসাইনুল বান্না বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। এটা আল্লাহর মেহেরবানি যে আল্লাহ এমন শেষ্ঠ সন্তান দান করেছেন। ইয়া রাব্বি লাকাল হামদ। আল্লাহ যুগের আলেমে দীন হিসেবে কবুল করুন।

ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ শায়খ শরিফ আবু হানিফ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহপাকের বড় মেহেরবানি। বিনয়ের সাথে আল্লাহর শোকর আদায় করি। কারো বদনজর যেন না পড়ে খেয়াল রাখতে হবে। এ সংবাদ শুনেই সবাই মাশাআল্লাহ পড়বেন। তার জন্য দোয়া করবেন। সকল জ্বীন-ইনসানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহ ওকে হেফাজত করুন।’

মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শায়খ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আল্লাহু আকবর, মাশাল্লাহ তাবারকাল্লাহ, এটা বাংলাদেশের জন্য মহান এক গৌরব। আমি বাংলাদেশের মায়েদের প্রতি অনুরোধ করবো, আপনারা যদি সন্তানদের কোরআনের প্রতি ভালোবাসা ও অধ্যবসায় শেখাতে পারেন, তবে এমন সাফল্য সম্ভব। নিজের সন্তানকে সময় দিন, তাদের মননশীলতা ও প্রতিভা বিকাশে সহযোগিতা করুন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সন্তানকে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতার পথিক বানিয়ে দিন। আমিন’

ইসলাম ও জীবন

সাঈদীর মৃত্যু মেডিক্যাল কিলিং কি না জানাতে হবে : আজহারী

জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক ড. মিজানুর রহমান আজহারি বলেছেন, ‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী শিরক-বিদআতের আস্তানা তছনছ করে দিয়েছিলেন।আজীবন ইসলামকে বিজয়ী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে গোটা বিশ্ব কেঁদেছে।তাঁর মৃত্যু স্বাভাবকি ছিল নাকি মেডিক্যাল কিলিং ছিল, তা আমরা এখনো জানি না। এখন বিষয়টি তদন্ত করে জাতির সামনে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে।’ আজ […]

নিউজ ডেস্ক

৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ২২:৩৫

জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক ড. মিজানুর রহমান আজহারি বলেছেন, ‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী শিরক-বিদআতের আস্তানা তছনছ করে দিয়েছিলেন।
আজীবন ইসলামকে বিজয়ী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে গোটা বিশ্ব কেঁদেছে।
তাঁর মৃত্যু স্বাভাবকি ছিল নাকি মেডিক্যাল কিলিং ছিল, তা আমরা এখনো জানি না। এখন বিষয়টি তদন্ত করে জাতির সামনে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে।’

আজ শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর প্যারেড মাঠে ইসলামী সমাজকল্যাণ পরিষদ আয়োজিত তাফসিরুল কুরআন মাফিলের পঞ্চম ও শেষ দিনে প্রধান মুফাসসিরের বক্তব্যে এ এসব কথা বলেন।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার ছিলেন। তাই তাঁর মুত্যু পরিকল্পিত মেডিক্যাল কিলিং হতে পারে। এ ধারণা আমরা করতেই পারি। যে সময়টা আমরা কাটাচ্ছি, এতো সুন্দর সময় বাংলাদেশ আর পাবে না ।

আমাদের জন্মের পর থেকে এ রকম চমৎকার সময় আমরা পাইনি। এটাই আসল সময়। তাই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাই, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি হত্যাকাণ্ড তা তদন্ত কমিটি করে রিপোর্ট গণমানুষের কাছে জানাতে হবে।’

অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এরইমধ্যে বলেছেন- আমরা এমন নির্বাচন দিতে চাই, যা হবে ঐতিহাসিক।
দিনের ভোট দিনে হবে। রাতে হবে না। সবাই নিজের ভোট নিজে দিতে পারবেন। কোনো কারচুপি হবে না। নিশ্চিন্ত থাকুন। আমরা একটি বৈষম্যহীন, সুন্দর ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র উপহার দিতে চাই। আমাদের কুরআনকে ধারণ করতে হবে।

তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ইসলামিক ফাউন্ডেশনে যারা নয়-ছয় করেছেন, আমরা একজন বিচারপতির মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

তিনি আরো বলেন, ব্যাংকে টাকা নেই, লালবাতি জ্বলছে। আমরা রিজার্ভে হাত দিচ্ছি না। আমাদের পরবর্তীতে যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবেন তাদের জন্য একটি সাসটেইনেবল ইকোনমি রেখে যেতে চাই।

এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম নগর জামায়াত আমির শাহজাহান চৌধুরী, মাওলনা মনিরুল ইসলাম মজুমদার, সাঈদী পুত্র মাওলানা শামীম সাঈদী প্রমুখ।

প্রয়াত ইসলামী বক্তা ও জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর স্মৃতিধন্য এ মাহফিলে চট্টগ্রাম ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে।
মাফিলস্থল ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন সড়কেও অবস্থান নেন আজহারির বক্তব্য শুনতে আসা লোকজন। জনসমুদ্রে পরিণত হয় প্যারেড মাঠ ও সংলগ্ন এলাকা। আগে এ মাহফিলে প্রধান অতিথি থাকতেন সাঈদী।