‘জুমা’ শব্দটি ‘জমf’ শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ হলো একত্র হওয়া বা একত্র করা। এই দিনটি ইসলামে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ দিনটি আল্লাহর দেয়া দিনগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন। সপ্তাহের ঈদ শুক্রবার, এবং ইসলামে এই দিনটির মর্যাদা অত্যন্ত উচ্চ। মহান আল্লাহ তায়ালা নিজেই সকল দিনের মধ্যে জুমাবারকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন।
পবিত্র কুরআনের নির্দেশনা
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে জুমার নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন,হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হয়, তখন আল্লাহর স্মরণের দিকে এসো।
ক্রয়-বিক্রয় পরিত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্য অতি উত্তম, যদি তোমরা জানতে! আর যখন নামাজ শেষ হয়, তখন জমিনে ছড়িয়ে পড়, আর আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর। আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করতে থাক যাতে তোমরা সাফল্য লাভ করতে পার।(সুরা জুমা: ৯-১০)
জুমার নামাজের পাপ মোচন
হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা, এক রমজান থেকে পরবর্তী রমজান মধ্যবর্তী সময়ের পাপ মোচন করে; যদি সেই ব্যক্তি সব ধরনের কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে।(মুসলিম: ২৩৩)
জুমা নামাজ ত্যাগের শাস্তি
জুমার নামাজের প্রতি এতো গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও, যারা বিনা ওজরে এই নামাজ ত্যাগ করে, তাদের জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা বিনা ওজরে (কোনো কারণ ছাড়া) ও ইচ্ছা করে ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তায়ালা ওই ব্যক্তির অন্তরে মোহর মেরে দেবেন।(তিরমিজি, আবু দাউদ)
এই শাস্তির পর, সেই ব্যক্তি আত্মভোলা হয়ে যাবে ও সংশোধনের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হবে। (মুসলিম)
জুমা নামাজ ত্যাগের শাস্তি ও বিধিনিষেধ
চার শ্রেণির লোক ছাড়া, জুমার নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গুনাহ হিসেবে গণ্য। এই চার শ্রেণি হল-
১. ক্রীতদাস
২. স্ত্রীলোক
৩. অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক
৪. মুসাফির (যারা সফরে রয়েছেন) ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি
ইসলামকে অবমূল্যায়ন
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে,যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা পরিত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পেছনের দিকে নিক্ষেপ করল।(মুসলিম)
পরপর তিন জুমা নামাজ আদায় না করা ইসলামের প্রতি বড় অবমাননা ,যার ফলে উক্ত ব্যক্তি সংশোধনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবে।
জুমার নামাজের গুরুত্ব ইসলামে অত্যন্ত বড়। আল্লাহর কাছে এর মর্যাদা অসীম, এবং মুসলমানদের জন্য এটা একটি বিশেষ দিনে একত্রিত হয়ে ইবাদত করার সুযোগ।
যারা এই দিনটি যথাযথভাবে পালন করেন, তারা আল্লাহর কাছে বিশেষ পুরস্কারের অধিকারী হন। তাই আমাদের উচিত, এই মহান দিনের গুরুত্ব উপলব্ধি করে, যথাসময়ে জুমার নামাজ আদায় করা ও এর সঠিক মর্যাদা রক্ষা করা।