আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সতর্ক করতে অনেক সময় স্বপ্নের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় অবহিত করেন। এসব স্বপ্নে ভালো-মন্দের নানা ইঙ্গিত থাকতে পারে। ঘুমের মধ্যে মন্দ বা বিপদাপদের স্বপ্ন দেখে অনেক মানুষ অস্থির হয়ে পড়েন, কেউ কেউ আবার চিৎকার করে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন।
ইসলামে স্বপ্নের গুরুত্ব
জীবনের প্রতিটি বিষয়ে ইসলামে নির্দেশনা রয়েছে, এবং স্বপ্ন সম্পর্কেও রয়েছে ইসলামের স্পষ্ট বক্তব্য। স্বপ্নের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ চমৎকারভাবে ইসলামে পাওয়া যায়। এর মধ্যে কোনো দার্শনিক বা বিজ্ঞানীর বক্তব্যের সঙ্গে মিল হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই, তবে কখনো মিলে গেলে তাতে কোনো অসুবিধা নেই।
হাদিসে মহানবী সা. বলেছেন, সত্য স্বপ্ন নবুয়তের ৪৬ ভাগের এক ভাগ। (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭২)
স্বপ্ন দেখা যেমন একটি সাধারণ মানবিক অভিজ্ঞতা, তেমনি কখনো কখনো মন্দ স্বপ্ন দেখা মানুষকে উদ্বিগ্ন ও অস্থির করে তোলে। তবে, ইসলামে এসব মন্দ স্বপ্নের জন্য রয়েছে স্পষ্ট নির্দেশনা, যা মেনে চললে স্বপ্নের ক্ষতিকর প্রভাব কমানো সম্ভব।
খারাপ স্বপ্ন দেখলে করণীয় আমল
১. আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা
দুঃস্বপ্ন বা খারাপ স্বপ্ন দেখলে প্রথমে আল্লাহ তায়ালার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিৎ। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, তিনবার আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম পাঠ করলে, তা স্বপ্নের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। (মুসলিম, হাদিস :২২৬২)
এছাড়া, একটি বিশেষ দোয়া রয়েছে: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিন শাররি হাজিহির রু’ইয়া
অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এই ভয়ংকর স্বপ্নের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
২. থুথু নিক্ষেপ করা
খারাপ স্বপ্ন দেখলে, শরীরের বাঁ দিকে তিনবার (বাতাসে আদ্র ধরনের) থুথু নিক্ষেপ করা উচিত। (মুসলিম, হাদিস : ২২৬১)
৩. শোবার ভঙ্গি পরিবর্তন
যদি কোন ব্যক্তি খারাপ স্বপ্ন দেখে এবং সে কাত হয়ে শুয়ে থাকে, তবে তাকে অন্যদিকে মুখ ফেরাতে হবে। এটি স্বপ্নের মন্দ প্রভাব বদলানোর একটি প্রতীকী উপায়। (মুসলিম, হাদিস : ২২৬২)
৪. স্বপ্ন কাউকে না বলা
দুঃস্বপ্ন দেখলে, তা কাউকে বলা উচিত নয় এবং নিজের স্বপ্নের ব্যাখ্যাও করা উচিত নয়। (বুখারি, হাদিস : ৬৫৮৩)
৫. নামাজ আদায় করা
স্বপ্নের ভয় বা অশান্তি কাটানোর জন্য নামাজ পড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। (মুসলিম, হাদিস : ২২৬৩)
আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে স্বপ্নের ক্ষতি থেকে নিরাপদ রাখার জন্য দোয়া ও আমলের মাধ্যমে সাহায্য লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।