সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের শাসনের পতন ইরানের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আসাদ সরকারের পতনের ফলে ইরানি দূতাবাসেও হামলা চালানো হয়েছে এবং ইরানের দীর্ঘকালীন আঞ্চলিক মিত্র সিরিয়া এখন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে। এর ফলে ইরান তার প্রভাব হারানোর আশঙ্কায় রয়েছে, বিশেষ করে যখন লেবাননে হেজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং ইসরায়েল হামাসের শীর্ষ নেতাকে হত্যা করেছে।
ইরানের জন্য বর্তমানে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য পুনঃনির্বাচন এবং ইরানের প্রতি তার কঠোর অবস্থান। তাছাড়া, তুরস্ক সিরিয়া, ইরাক ও লেবাননে তার প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে, যা ইরানের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি পশ্চিম এশিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তন করতে পারে এবং এর প্রভাব ভারতেও পড়তে পারে।
ভারতের স্বার্থের কথা বলা হলে, ইরান একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বিশেষ করে চাবাহার বন্দর নির্মাণে ভারতের অংশগ্রহণ এবং মধ্য এশিয়ার বাজারে প্রবেশের জন্য। ইরান দুর্বল হলে পাকিস্তান, সৌদি আরব, ইসরায়েল ও তুরস্কের প্রভাব বৃদ্ধি পাবে, যা ভারতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে ইরান দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে তার শক্তি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হতে পারে, কারণ তার প্রাকৃতিক সম্পদ এবং পরমাণু কর্মসূচি ত্বরান্বিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, ইরান দুর্বল হলে তুরস্কের প্রভাব বৃদ্ধি পাবে, যা পাকিস্তানকে সমর্থন করতে পারে, এবং সেই পরিস্থিতিতে ভারতের স্বার্থও হুমকির মুখে পড়তে পারে। ভারতের পক্ষ থেকে ইরানের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ পশ্চিম এশিয়ার শক্তির ভারসাম্য রক্ষা করতে ইরানই একমাত্র শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে কাজ করতে পারে।