কে, এইচ, এম, নূরুল আলম কামাল, নেত্রকোনা প্রতিনিধি :
নেত্রকোনার পূর্বধলায় সোয়াই নদীর বন্ধ হওয়ার কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। খননের দাবিতে এলাকাবাসী রাস্তা অবরোধ সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। শনিবার খনন কাজ শুরু হওয়ার খবর শুনে শ্যামগঞ্জ এলাকার শত শত লোক ভীড় জমায়। তৈরি হয় আনন্দঘন পরিবেশ।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, শ্যামগঞ্জ বাজারের পাশ দিয়ে প্রবাহিত সোয়াই নদীর ৪৬ কিমি দৈর্ঘ্য। এ নদী ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীত দিকে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে সোয়াই নদীটি পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ বাজারের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মগরা নদীতে মিশেছে।
কালের বিবর্তনে নদীটি পলি পড়ে ভরাট হয়ে যায়। এলাকাবাসীর দাবিতে নদীর পরিবেশ পুনরুদ্ধারে পাউবো দুই বছর ধরে নদী পুনঃখনন করছে। এটি ২টি প্যাকেজে ২৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজ পায় মেসার্স ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স ও আমিন অ্যান্ড কোম্পানি নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
খননকাজ প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্সের অধীনে শ্যামগঞ্জ বাজার-সংলগ্ন ময়লাকান্দা এলাকা থেকে শ্যামগঞ্জ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ এলাকায় ৪০০ মিটার কাজ দখলদারদের বাঁধায় বন্ধ হয়ে যায়।
এই অংশে নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কসহ দুই পাশে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা আছে। যেভাবে নদী খননের ডিজাইন করা হয়েছে, ওই জায়গার বেশ কিছু অংশ ব্যক্তি মালিকানাধীন। সিএস, বিআরএসসহ সবকিছুর বৈধ কাগজপত্র আছে তাঁর।
তাই পাউবো বাধার মুখে খননকাজ থেকে বিরত আছে। উপজেলা প্রশাসন গণ শুনানি করে খনন কাজে নির্দেশ প্রদান করেন।
স্থানীয় আনিসুর রহমান ও জানু মিয়া সহ অনেকেই জানান, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর দখলদারদের কাছ থেকে মুক্ত হতে যাচ্ছে সোয়াই নদী। এ আনন্দে খনন কাজের শুরুর সময় এলাকার শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছে। ময়লাকান্দা এলাকায় আজ মনে হচ্ছে ঈদ আনন্দ হয়ে বেড়াচ্ছে।
পূর্বধলা উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, মুরুব্বিদের কাছ থেকে গল্প শুনেছি এই নদী দিয়ে একসময় হাজার মন ধারণকারী বেপারী নৌকা চলাচল করত।
এটির সময়ের সাথে সাথে ভরাট হয়ে গেলে কিছু প্রভাবশালী মহল দখল করে নেয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড খনন কাজের প্রকল্প তৈরি করে খনন কাজ শুরু করেন। শ্যামগঞ্জ বাজারের কাছে আসার পর স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী দখলদার বিভিন্নভাবে খনন কাজটি বাধাগ্রস্ত করেন।
এতে এলাকাবাসীর বিভিন্ন সময় সড়ক অবরোধ সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। এরই প্রেক্ষিতে প্রশাসন যথোপযুক্ত উদ্যোগ নেন। এলাকাবাসী ব্যাপক আনন্দ উপভোগ করছেন।
গৌরীপুর থানার উপ পরিদর্শক আইয়ুব আলী বলেন, লোকজনের ভিড় দেখে আমরা ময়লাকান্দা এলাকায় আসি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদীর চিহ্নিত করে নিশান টাংগিয়ে দিয়েছে। এর ভিতরেই সোয়াই নদীর খনন কাজ করছে। স্থানীয় লোকজন খনন কাজেও সহযোগিতা করছে।