“কোনো অভ্যুত্থান, কোনো বিপ্লব, কোনো পরিবর্তন কিংবা যুদ্ধ এক মাস বা ৩৬ দিনে হয় না। যুগের পর যুগ মানুষের আত্মত্যাগ, লড়াই আর রক্তের বিনিময়ে এসব অর্জিত হয়”—গাইবান্ধায় আয়োজিত এক কর্মশালায় একথা বলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে গাইবান্ধা জেলা স্টেডিয়াম মিলনায়তনে বিএনপির “রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা” বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বক্তব্য দেন তিনি। কর্মশালায় স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে তিনি বলেন,
“কেউ যদি মনে করেন, কয়েক দিনের আন্দোলনে শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়া করা গেছে, তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। শেখ হাসিনার পালানো বিএনপির টানা ১৬ বছরের আন্দোলন, প্রতিরোধ ও ত্যাগের ফসল।”
তিনি বলেন,
“এই দেশের মাটি থেকে, মানুষের হৃদয় থেকে শেখ হাসিনার সরকারকে সরাতে বিএনপি ও দেশের মানুষ দীর্ঘদিন সংগ্রাম করেছে। এই আন্দোলন এক দিনে হয়নি। এটি গণআন্দোলনের বিস্ফোরণ ছিল—যার চাপে শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগ করতে হয়েছে।”
রুমিন ফারহানা আরও বলেন,
“আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে এই দেশে যা করেছে, তা শুধু রাজনৈতিক অন্যায় নয়, তা ছিল রাষ্ট্র ও জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। তাদের বিরুদ্ধে আগামী ১০০ বছর বিচার চলবে। কারণ এই পাপের মাত্রা সীমাহীন।”
বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“আমরা গত ১৫ বছর মাটি ছাড়িনি, আর আগামীতেও এক চুল জমি ছাড়ব না। এই রাষ্ট্র মেরামতের যে ৩১ দফা ঘোষণা করা হয়েছে, সেটিই আগামী বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রূপরেখা। সেই ভিত্তিতে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ব, যেখানে কারও মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হবে না, বিচার বিভাগ থাকবে স্বাধীন, এবং সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক হবে।”
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় জেলা ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা, যাদের মধ্যে ছিল দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের সহযোদ্ধারাও।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার বক্তব্য বিএনপির দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের দিক নির্দেশনা এবং দলের নেতাকর্মীদের মনোবল ধরে রাখার চেষ্টা। বর্তমান অন্তর্বর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপি যে রাষ্ট্র সংস্কারের দিকে মনোযোগী, এই ধরনের কর্মশালার মাধ্যমে তারই সাংগঠনিক বিস্তার চালানো হচ্ছে।
এদিকে, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে ঘিরে বিএনপির অবস্থান যে কঠোর এবং রাজনৈতিক বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে—এই বার্তাও এ বক্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
গাইবান্ধার কর্মশালাটি বিএনপির চলমান সাংগঠনিক কর্মসূচির অংশ, যেখানে দেশের বিভিন্ন জেলায় ৩১ দফা রূপরেখা নিয়ে রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। দলটি বলছে, এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে “নতুন প্রজন্মকে আগামী রাষ্ট্রব্যবস্থার লক্ষ্য ও কাঠামো সম্পর্কে অবহিত করা” এবং আওয়ামী লীগ শাসনামলের বিরুদ্ধে একটি জনমত গড়ে তোলা।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?