জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার সম্প্রতি এক টেলিভিশন টকশোতে বিএনপির বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, “বিএনপি মাঠে অন্য কাউকে মেনে নিতে পারছে না, ক্রমাগত হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, সাত মাস পর নাকি দেখে নেবে। গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী স্টাইলের রাজনীতি জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে।”
তিনি আরও বলেন, “পুরোনো বন্দোবস্তের সেইফগার্ড হয়ে গেছে বিএনপি। পুরোনো বন্দোবস্তের সকল রিসোর্স অটোমেটিকালি বিএনপির কাছে আসছে।”
সারোয়ার তুষার জানান, বিএনপির খোদ কেন্দ্রীয় নেতা, যাদের অনেকের বক্তব্য এত উদ্ধত যে, তারা ক্ষমতায় আসলে কিভাবে কথা বলবে তা ভাবলে ভয় লাগছে।
তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, “যেমন ধরুন আমি নাম নিয়ে বলি মির্জা আব্বাস সাহেব, যে ভঙ্গিতে উনি কথা বলছেন, ‘আমরা চাঁদা তুলে ইউটিউবারদের চালিয়ে দেব’। এরা সংস্কার করলে আমরা এসে এগুলো পাল্টে দেব।”
স্থানীয় পর্যায়ের পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর বলে মন্তব্য করেন তিনি। “আমাদের নেতাকর্মীদেরকে তারা একটি তো হচ্ছে, যেটা বললেন আপনি, অন্তরকন্দলে ৭৫ জন নিহত হয়েছে।
সাত-আট মাসে। একটি দল যারা ১৫ বছর নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তারা এখন এই অবস্থায়। এক ধরনের মানে প্রায় অন্য কাউকে তারা মাঠে মেনে নিতে পারছে না।”
তিনি আরও বলেন, “এটা ভয়ঙ্কর ঘটনা। আপনি প্রবাসে বসে থেকে দলের প্রধান অনেক সুশীল এবং ভালো ভালো কথা বলছেন, আমরা এপ্রিশিয়েট করি, কিন্তু এটা তো কোনো কিছু হচ্ছে না। কোনো কাজ হচ্ছে না।”
সারোয়ার তুষার তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন, “তারেক রহমান এই দলের প্রধান ব্যক্তিত্ব এবং তিনি যথেষ্ট ক্লিন ইমেজে ভদ্র রাজনীতির একটি মেসেজ দিচ্ছেন। কিন্তু দলের প্রধানের বক্তব্য দলের লোকেরা মানছে না। এবং যেটা আমরা আমাদের বিবৃতিতে বলেছি, কোন নিয়ন্ত্রণ দেখা যাচ্ছে না স্থানীয় পর্যায়ে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “আমাদের বলা হচ্ছে যে সাত-আটটা মাস অপেক্ষা করেন, তারপর দেখবো কিভাবে এলাকায় ঢুকেন। তাদের মেসেজ পরিষ্কার, তারা জানে যে নির্বাচনে তারা জিতবে এবং জিতলে তারা আমাদের ঢুকতে দিবে না।”
এছাড়া, ঈদ উপলক্ষে বিএনপির নেতারা যাকাতের কাপড় বিতরণের পর তাদের কার্যক্রমের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন, “এটা আওয়ামী লীগের ভাষা, যে ভোট কেন্দ্র যেতে হবে না। এর মানে, ভোটের ব্যাপারটা আমরা দেখবো।”
এমতাবস্থায়, সারোয়ার তুষার আরও মন্তব্য করেন, “বিএনপির নেতা, স্থানীয় নেতা, সব জায়গায় একই ভাষায় কথা বলছেন। এর মধ্যে কিছু নেতারা প্রকাশ্য অস্ত্র প্রদর্শন করেছেন। আরেকজন নরসিংদীর নেতা বলছেন, ‘যারা সংবিধান সংস্কারের কথা বলবে, তাদের আমরা হাত-পা গুড়িয়ে দেবো।’ এটা কি ধরনের রাজনীতি?”
তিনি আরও বলেন, “এরা তো জেলা পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। যদি এটা একটি দলের ভাষা হয়, তাহলে কিভাবে আমরা আশ্বস্ত হব যে নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তারা অন্যান্য দলকে রাজনীতি করতে দেবে?”
সারোয়ার তুষারের মতে, বিএনপির বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে তাদের মধ্যে আসন্ন শুদ্ধি অভিযান কোন ফলপ্রসূ হবে না।
তিনি বলেন, “বিএনপি ইতিমধ্যে ৩০০০ এর উপরে সদস্যকে বহিষ্কার করেছে, কিন্তু এই শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে কোনো কাজ হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত দলীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলানো না হয়।”

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সময় কোনো বিষয় নয়, নিরপেক্ষ নির্বাচনই আসল কথা। তাঁর এই বক্তব্যে আপনার সমর্থন আছে কি?