স্বাধীনতা দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ‘জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ থেকে তাদের আটক করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করার অভিযোগে এই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগ কেন্দ্রীয় সংসদ এর মহাসচিব সেলিম রেজা (৪৫), মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগ কেন্দ্রীয় সংসদ এর সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম (৪৮) এবং আশুলিয়ার দক্ষিণ গাজীরচট এলাকার মো. সোহেল পারভেজ (৪০)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রায় ৩০ জনের একটি দল শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানিয়ে লাল পতাকা হাতে নিয়ে ফিরছিলেন। এ সময় তারা উচ্চস্বরে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘৭১ এর হাতিয়ার গর্জে উঠু আরেকবার’, ‘তুমি কে আমি কে বাঙালি বাঙালি’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
তাদের একজন সেসময় বলেন, “বাংলাদেশকে জন্ম দিয়েছে আওয়ামী লীগ।” আরেকজন বলেন, “এখানে সারা বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা উপস্থিত। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করছি।” তিনি নিজেকে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন।
বিমান হাওলাদার নামের এক ব্যক্তি বলেন, “আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি।”
স্লোগান প্রদানের সময় হঠাৎ করেই বেশ কয়েকজন তরুণ তাদের ওপর চড়াও হয় এবং মারধর শুরু করে। স্লোগানদাতারা পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
মারধরের কারণ জানতে চাইলে এক তরুণ বলেন, “ছাত্রলীগের কী পোস্টে আছে এরকম একটা কিছু বলছিল; সেজন্য দৌড়ানো।”
পরবর্তীতে ওই দলের একজন স্মৃতিসৌধের মূল ফটকের সামনে থেকে এক যুবককে টেনে ভেতরে নিয়ে আসেন এবং মারধর করতে শুরু করেন। তাকে ‘জয় বাংলা স্লোগান দাও!’ বলে বারবার বলা হয়। তবে অন্যান্যদের আপত্তির মুখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্লোগান দেওয়ার বিষয়টি উসকানিমূলক এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির বলেন, “এ সময়ে এইগুলা স্লোগান দেওয়া মানে হল এ জায়গাটাতে উসকানি দেওয়া এবং অস্থিতিশীলতা তৈরি করার জন্য… এ কারণেই আটক করা হয়েছে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, স্বাধীনতা দিবসের মতো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনে এমন ঘটনা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বের প্রতি প্রশ্ন তুলছে। তবে পুলিশ বলছে, তারা শুধুমাত্র নিরাপত্তার স্বার্থে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানস্থলে এই ধরনের ঘটনা একদিকে যেমন নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, অন্যদিকে এতে রাজনৈতিক উত্তেজনাও সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, সাময়িক মজুতদারির কারণে চালের বাজার অস্থিতিশীল। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?