মজনুর রহমান আকাশ, মেহেরপুরঃ
ঈদ অত্যাসন্ন। সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে চলতে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। প্রবাসী ও চাকরীজীবীদের কেনাকাটা রোজার দ্বিতীয়ার্ধে শেষ হলেও শেষ মুহুর্তের কেনাকাটায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। কেনা কাটায় পছন্দের তালিকায় অভিজাত শপিংমল হলেও গরীব বা মধ্যবিত্ততের ভরসাস্থল ফুটপাত। সেই ফুটপাতে বেচা কেনা এখন জমজমাট। শপিংমলে যে অনুসঙ্গ পাওয়া যাচ্ছে একই অনুসঙ্গ কমদামে পাওয়া যাচ্ছে ফুটপাতে। তবে গুনে ও মানে কিছুটা ভিন্ন।
কৃষক নজর আলীর সাথে দেখা হয় গাংনী বাসস্ট্যান্ডের ফুটপাতের দোকানে। তিনি এসেছেন রাইপুর থেকে। সাথে স্ত্রী ও দু’ছেলে মেয়ে। বেশি দামের জিনিষ পাওয়া যায় শপিং মলে তাই সেখানে যেতে তারা নারাজ। তাদের মতে, গরীব মানুষ অতটাকা পাবো কনে? কুনুরকম ঈদটা পার কত্তি পাল্লিই হয়। ফুটপাত থেকে কমদামে পোশাক কিনলেও তাতে রয়েছে ঈদের আনন্দ আর ভালবাসার ছাপ। একই কথা জানালেন রিক্সাচালক আজমাইন। শুধু কৃষক নজর আলী ও রিক্সাচালক আজমাইনই নয় অনেক বিত্তশালীরাও তাদের চাহিদা অনুযায়ি অনুসঙ্গ কিনছেন ফুটপাত থেকে।
গাংনী শহর, বামন্দী ও হেমায়েতপুর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বিপনী বিতানের চেয়ে ফুটপাতে তুলনামূলকভাবে ভীড় বেশি। শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবী ফতুয়া, প্যান্ট শার্ট, পাদুকা সেই সাথে সস্তা প্রসাধনী। বিপনী বিতান বা শপিংমলে আভিজাত্যের ছোয়ার সাথে দাম আকাশচুম্বী। নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা সামর্থ্যের মধ্যে নিজেদের পছন্দের কাপড়-চোপড়, গয়না, জুতা, স্যান্ডেল ও অন্য প্রসাধনীসহ অন্যান্য পণ্য কিনতে ভিড় করছেন ফুটপাতে। সাধ্যের সবটুকু দিয়ে সাধের ঈদ করার চেষ্টায় মুখভরা হাসিতে সন্তানদের জামাকাপড় কিনে দিচ্ছেন তারা।
শফিকুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা জানান, ফুটপাতে দামে কিছুটা সাশ্রয়ী এবং পণ্যের মানও বেশ ভালো। সেজন্য ফুটপাত থেকেই পাঞ্জাবিসহ কয়েকটি পোশাক কিনেছেন তিনি। দামাদামি করে নিতে পারলে কম দামেই ভালো পোশাক নেওয়া যায়। তিনি আরো জানান, মার্কেটগুলোতে জিনিসপত্রের দাম খুব বেশি। যা আয় রোজগার তা দিয়ে বড়ব দোকান থেকে জিনিসপত্র কেনার সামর্থ আমার নেই। তাই ফুটপাতই তাদের মতো মানুষের স্বস্তি।
রাইপুরের আবদুল আলীম জানান, বেশ কিছুদিন ধরে টাকা জমিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন এখানে। বড় নানীর জন্য শাড়ী আর ছোট বোনের জন্য একটা রঙিন ঝলমলে ফ্রক কিনেছেন তিনি। এছাড়াও বড়নানীর জন্য জন্য হাতব্যাগ, মায়ের জন্য জুতা, বাবার জন্য লুঙ্গি কিনেছেন। হেমায়েতপুরের আজমাইন জানান, ফুটপাতে সব পাওয়া যায়। পাওয়া যায় ছেলে-বুড়ো-নারী সবার পোশাকসহ জুতা, চশমা, ঘড়ি, ইমিটেশন সামগ্রী, প্রসাধনী, বেল্ট, ব্যাগ, শোপিস, বাচ্চাদের খেলনা, মোবাইলের সামগ্রী, টুপি, আতরসহ হরেক রকমের পণ্য।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?