সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের বিদেশে চলে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে চরম সমালোচনা এবং উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এমন এক সময়ে, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সর্বোচ্চ দায়িত্বে থাকা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম এক স্পষ্ট ও জোরালো বার্তা দিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, “যদি এই ঘটনায় কারও সংশ্লিষ্টতা থেকে থাকে এবং আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হই, তবে আমি নিজেই পদত্যাগ করব।”
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এই বক্তব্য দেন। তিনি বলেন,
“সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগ কোনোভাবেই স্বাভাবিক ঘটনা নয়। বিষয়টি আমাদের জন্য অপ্রত্যাশিত। যারা এতে সহযোগিতা করেছে বা কোনোভাবে মদদ দিয়েছে, তাদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি নির্দেশ রয়েছে যাতে কোনো তদবিরবাজ থানায় ঢুকতে না পারে। তদবির করে বিচারবর্হিভূত সুবিধা পাওয়ার সংস্কৃতি ভেঙে ফেলতে হবে। দুর্নীতিবাজ কিংবা অপরাধীদের কোনো ছাড় নেই। নিরীহ কেউ হয়রানির শিকার হবে না—এটি আমরা নিশ্চিত করব।”
মতবিনিময় সভা শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পথ অবরুদ্ধ করে সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের সঙ্গে কথা বলার সময়ও উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “কেউ যদি সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে জড়িত থাকে, আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পিছপা হব না। আর আমি নিজে যদি ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হই, তবে সোজাসুজি দায়িত্ব ছেড়ে দেব।”
দেশের সার্বভৌমত্ব ও আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে এমন শক্ত অবস্থান প্রশাসনের উচ্চপর্যায় থেকে দেওয়া নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন এবং তা জাতির কাছে একটি প্রত্যাশিত বার্তা—দোষী যেই হোক, ছাড় নেই।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব এমদাদুল্লাহ মিয়ান, বারি মহাপরিচালক মোজাফফর হোসেন, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন। তারা দেশব্যাপী শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আন্তরিক সহযোগিতার আহ্বান জানান।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?