ভবিষ্যতে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চোখেই বাংলাদেশকে দেখতে হবে। বিশেষ করে যারা ভারতের চোখে বাংলাদেশকে দেখার কূটনৈতিক ভাষা প্রয়োগ করতে চান, তাদের জন্য একথাটি শতভাগ প্রযোজ্য। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনীতিবিদ নন, কখনো রাজনীতি করেননি।
তাই হয়তো কেউ কেউ রাজনীতির সীমানায় তাকে দেখতেও চান না। আবার নিজেকে সান্ত্বনা দিতে একটু আগ বাড়িয়ে বলতে চান, রাষ্ট্রপরিচালনায় ড. ইউনূস পুরোপুরি ব্যর্থ। তাদের জন্য ব্যক্তিগতভাবে আমার বড় আফসোস হয়। আমি তাদের ‘আফসোস লীগ’ বলে নিন্দামন্দ অবশ্যই করব না।
তবে এতটুকু বলব-প্রফেসর ইউনূস ইতোমধ্যে বিশ্বপরিমণ্ডল এবং আঞ্চলিক ভূরাজনীতির যেসব ট্রাম্প কার্ড খেলেছেন, তাতে বাজিমাত করেছেন বললে কম বলা হবে।
আপনাদের মতো হয়তো দুর্নীতি আর অর্থ পাচারে ম্যাজিক দেখাতে পারেননি, কিন্তু জনস্বার্থ বিবেচনায় প্রকৃত সমস্যা চিহ্নিত করে দেশ ও দেশের বাইরে যেভাবে দৃঢ়তার সঙ্গে মাথা উঁচু করে ভূমিকা রাখছেন তা সাধারণ মানুষ মনে রাখবে বহুকাল।
অনেকেই বলছেন, ড. ইউনূসের মধ্যে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠছে। সত্যিকারার্থে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে দেশ যেভাবে জাতীয়তাবাদের চেতনায় স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার দুর্বার স্বপ্নে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক সেই পদধ্বনি যেন আমরা ফের শুনতে পাচ্ছি।
ফলে নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ নিয়ে ইউনূস সরকারের কপালে চিন্তার ভাঁজ সেভাবে পড়ছে না।
বরং এ ইস্যুকে সামনে রেখে অর্থনৈতিকভাবে আরও শক্তি সঞ্চয় করে ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ, যা হবে ইউনূসের হাত ধরে ‘বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির নতুন সনদ।’
আমি মনে করি, পুরো জাতি বড় প্রত্যাশা নিয়ে ড. ইউনূসের অর্থনৈতিক ট্রাম্প কার্ড প্রত্যক্ষ করার জন্য কিছুটা সময় ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করতে পারে। যেমন আপনারা ধৈর্যের ফল পেয়েছেন রোজায়। পণ্যের দাম বাড়েনি, বরং ক্ষেত্রবিশেষে কমেছে। হয়নি বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা।
তাই আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, ড. ইউনূসের সরকার নিকট ভবিষ্যতে এমন কিছু পরিকল্পনা, উদ্যোগ ও কার্যকর পলিসি নিতে যাচ্ছে-যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের মজবুত অর্থনৈতিক ভিত গড়ে উঠবে। শুধু ট্রাম্পের রিপাবলিক পার্টি নয়, প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাট শিবিরও খুশি হবে।
আর এ ধরনের দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার সেই অপার সম্ভাবনার যোগ্যতা তিনি প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার অনেক আগেই অর্জন করেছেন।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?