সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ১৩ বছর পার হলেও এখনো বিচারিক কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে তাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এত বছর পরও তদন্তকারীরা অপরাধের সুনির্দিষ্ট মোটিভ কিংবা প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। মামলাটির তদন্তের জন্য ১৫৫ বার সময় নেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত আদালতে কোনো প্রতিবেদন জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
প্রথমে থানা পুলিশ, এরপর ডিবি ও সিআইডি মামলার তদন্ত দায়িত্ব নেয়। বর্তমানে তদন্ত করছে র্যাব। তবে এত বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যায়নি। এর মধ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপ নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ওই অডিও ক্লিপে আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য নূরনবী চৌধুরী শাওনের নাম উঠে এসেছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, সাগর-রুনি ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও ফুটেজ পেয়েছিলেন, যা একটি স্টুডিওতে সিডি আকারে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সেই তথ্য ফাঁস হয়ে যায়।
অডিওতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই দম্পতিকে হত্যার জন্য একটি পরিকল্পিত কমান্ডো স্টাইলে অভিযান চালানো হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, একটি বিশেষ দল জানালা দিয়ে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে হত্যাকাণ্ডটি সম্পন্ন করে। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে সেখানে সরাসরি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামও উঠে এসেছে। অভিযোগ করা হয়েছে, সাগর-রুনির হাতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ফুটেজ ধ্বংস করতেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
এখন পর্যন্ত মামলাটির তদন্তের অংশ হিসেবে ১৬০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে দৃশ্যমান কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা সম্ভব হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তদন্তে প্রভাব খাটিয়ে মামলাটিকে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের একাংশের মত, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ইচ্ছাকৃত গাফিলতির কারণেই সাগর-রুনি হত্যার বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু থেকেই বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এই হত্যার পর ২০১২ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছিলেন, “৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হবে।” কিন্তু সেই ৪৮ ঘণ্টা আজ ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও ন্যায়বিচার অধরা থেকে গেছে। নিহতদের পরিবার ও সহকর্মীরা আজও বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=ioCzb40xCyc

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?