গাজীপুরে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে একটি বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। যৌথ বাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযান শনিবার রাত ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে সারাদেশে বিস্তৃত হয়।
এর আগে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় যে, সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমন এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে যৌথ বাহিনীর এই অভিযান পরিচালিত হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলমান সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাতে গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে, যেখানে কয়েকজন আহত হন। এই ঘটনার পর দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, এই অভিযানের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সারা দেশে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
বিশেষ করে গাজীপুর, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও অন্যান্য প্রধান শহরগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জনসাধারণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং কোনো সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড নজরে এলে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে বলা হয়েছে।
অভিযানের অংশ হিসেবে যৌথ বাহিনী বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়েছে এবং যেকোনো ধরনের নাশকতা প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ অভিযান পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত চলবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক ফয়সল হোসেন জানান, ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এর ব্যাপারে রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি এবং সেগুলো জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহারের চেষ্টা চলছে। তাই অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করবে।
তিনি বলেন, লাইসেন্সধারী বেশিরভাগ অস্ত্র পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হলেও লুট হওয়া অস্ত্রের বড় অংশ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী, পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশে অস্ত্র প্রবেশ করানোর মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। এ কারণে অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান ফের শুরু হবে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, পরাজিত কোনো শক্তি যদি জনগণের জন্য হুমকি হয়ে ওঠে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এ অভিযানের নির্দেশনা দেবে।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?