মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার চুলেও সাদা ধরনের পরিবর্তন আসে, যা প্রাকৃতিক একটি বিষয়। তবে অনেকেই চুলের সাদা হওয়া ঢাকার জন্য রং ব্যবহার করেন যাতে তাদের বয়স বোঝা না যায়। তবে এই রং ব্যবহার সম্পর্কে ইসলামে কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
হাদিসে এসেছে, হজরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত, মক্কা বিজয়ের দিনে আবু বকর রা. এর বাবা আবু কুহাফাকে নিয়ে আসা হলে, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দেন, তার চুলের রং পরিবর্তন করতে, তবে কালো রং ব্যবহার করা যাবে না। (সহিহ মুসলিম,হাদিস: ২১০২)
তবে যদি কোনো কারণে অল্প বয়সেই চুল পেকে যায়, যেমন অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণ, তাহলে সে ক্ষেত্রে কালো রং ব্যবহার করা জায়েজ তবে অনুত্তম। কিন্তু বার্ধক্যের কারণে চুল পেকে গেলে তা উপড়ে ফেলা মাকরুহ ।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,তোমরা সাদা চুল উপড়াবে না। যে মুসলমানের চুল ইসলামের কারণে সাদা হয়, তার জন্য আল্লাহ একটি নেকি লিখবেন ও একটি গুনাহ মাফ করবেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪১৫৪)
এছাড়া, আমর ইবনে শোয়াইব রহ. তার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাকা চুল উপড়ে ফেলতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, পাকা চুল মুসলমানের জন্য নূর। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২৮২১)
চুলে অন্য কোনো রং ব্যবহার করা নিষিদ্ধ নয়, তবে এ শর্তে যে, এটি কাফেরদের অনুসরণ হিসেবে না হয় এবং মানুষের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট করে অদ্ভুত কোনো রূপ না দেয়। ইসলামে কাফেরদের অনুকরণ করে সাজসজ্জা গ্রহণ করা নিষিদ্ধ, এবং সাধারণ সৌন্দর্য নষ্ট করা সাজসজ্জা গ্রহণও নিষিদ্ধ।
এছাড়া, চুলে ব্যবহৃত রং এমন হতে হবে যাতে তা চুলের উপর পৃথক কোনো প্রলেপ তৈরি না করে, বরং চুলের সঙ্গে মিশে যায়। কারণ, যদি রং চুলের উপর একটি প্রলেপ তৈরি করে, তাহলে চুলের ওপর পানি পৌঁছাতে সমস্যা হবে এবং অজু বা গোসলের সময় তা শুদ্ধ হবে না। তবে মেহেদির মতো রং ব্যবহার করা, যেগুলো চুলের ওপর কোনো প্রলেপ তৈরি না করে, সেগুলো ব্যবহার করলে অজু ও গোসল শুদ্ধ হবে।
এইভাবে, ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে যে, বয়সের পরিবর্তন বা সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে যত্ন নিলে তা যেন শরিয়তের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে না পড়ে এবং আমাদের ইসলামিক দায়িত্বগুলো সঠিকভাবে পালন করা যায়।