সাব্বির হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের প্রধান ডিএএমপি পিলার ২ নম্বরের ৩ থেকে ৮ নম্বর উপপিলার সংলগ্ন লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম কলোনিপাড়া এলাকায় অবৈধভাবে কাঁটাতারের বেড়া ও লোহার খুঁটি স্থাপন করেছে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে বিএসএফের ৬ ব্যাটালিয়নের অরুণ ক্যাম্পের সদস্যরা শূন্যরেখা থেকে মাত্র ৩ থেকে ৫ গজ দূরে এ নির্মাণকাজ শুরু করলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বিজিবি হস্তক্ষেপ করে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্রে জানা গেছে, বিএসএফ সদস্যরা রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশি ভূখণ্ডের অত্যন্ত কাছাকাছি এসে বেড়া নির্মাণ শুরু করলে শনিবার (১ মার্চ) সকালে দহগ্রাম আঙ্গোরপোতা বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার লুৎফর রহমান সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বিজিবি’র বাধার মুখে বিএসএফ নির্মাণকাজ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখে। তবে এ সময় উভয় পক্ষের সদস্যরা কাঁটাতারের কাছে অবস্থান নেওয়ায় সীমান্তে উত্তেজনা ছড়ায়।
উত্তেজনা প্রশমনে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় কলোনিপাড়া শূন্যরেখায় পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিজিবির পক্ষে পানবাড়ী কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আইয়ুব আলীর নেতৃত্বে ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল এবং বিএসএফের পক্ষে বোটবাড়ী কোম্পানি কমান্ডার জালম সিং-এর নেতৃত্বে অন্য একটি দল আলোচনায় অংশ নেন। বৈঠকে বিজিবি বিএসএফের এই একতরফা কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
বিজিবি’র রংপুর ৫১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. সেলিম আলদীন বলেন, “বিএসএফ দাবি করেছে, স্থানীয় গ্রামবাসী জেলা প্রশাসনের সহায়তায় এ নির্মাণকাজ করেছে। কিন্তু আমরা এসব মৌখিক বক্তব্য মানি না। তাদেরকে চুক্তি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।”
বিএসএফ তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের আশ্বাস দিলেও বিজিবি সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও টহল অব্যাহত রেখেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও বিজিবি সদস্যদের মতে, গত কয়েক বছর ধরে এ এলাকায় বিএসএফ বারবার সীমান্ত আইন লঙ্ঘনের চেষ্টা চালাচ্ছে।
বিজিবি জানিয়েছে, কূটনৈতিক ও সামরিক পর্যায়ে এ ঘটনার তদন্ত ও সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত রেখা ও চুক্তি পরিপালনে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আপোসহীন অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন লে. কর্নেল সেলিম আলদীন।
এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণ ও বিজিবি সীমান্ত নিরাপত্তায় সতর্কতা জারি রেখেছে। বাংলাদেশি ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?