ভারতীয় সীমান্তে বৃষ্টির মতো ড্রোনের আগমন ঘটেছে বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লি। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (৯ মে) ভোররাতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী একযোগে প্রায় ৫০০টি ড্রোন ভারতের বিভিন্ন সামরিক ও কৌশলগত অবস্থানের দিকে পাঠিয়েছে। লাদাখ থেকে গুজরাট পর্যন্ত অন্তত ২৪টি স্পটে এই ড্রোনগুলো শনাক্ত হয়।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা সূত্রের বরাত দিয়ে জানানো হয়, এসব ড্রোনের মধ্যে অন্তত ৫০টি আকাশ প্রতিরক্ষা অস্ত্রের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয় এবং আরও প্রায় ২০টি ‘সফট কিল’ প্রযুক্তির সাহায্যে নামানো হয়েছে। তবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ড্রোন ছিল ক্যামেরা সংযুক্ত গোয়েন্দা ড্রোন, যেগুলোর মাধ্যমে পাকিস্তান সম্ভবত ভারতীয় ঘাঁটি ও সামরিক গতিবিধি পর্যবেক্ষণের চেষ্টা করছিল।
সূত্র আরও জানায়, অধিকাংশ ড্রোন ছিল নিরস্ত্র, যা সরাসরি হামলার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়নি, বরং সম্ভবত তা নজরদারি ও তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে ব্যবহার হয়েছে। তবে এত বিপুল সংখ্যক ড্রোন ব্যবহারের ঘটনা অভূতপূর্ব এবং ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা।
এদিকে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত এই অভিযানের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। ইসলামাবাদ এই ড্রোন অপারেশন স্বীকার বা অস্বীকার—কোনোটাই করেনি।
এই ঘটনার ঠিক আগের রাতে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান চালায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের অন্তত ৯টি স্থানে। ভারত এই হামলাকে জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে দাবি করেছে।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ও একটি হেরন ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন,
“শত্রু পক্ষের আগ্রাসনের জবাবে আমাদের বাহিনী প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ হিসেবে তিনটি রাফাল, একটি মিগ-২৯, একটি সুখোই এবং একটি হেরন যুদ্ধ ড্রোন ভূপাতিত করেছে।”
তিনি আরও জানান, ভারতের হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বাহাওয়ালপুরের আহমেদপুর পূর্ব এলাকায়। সেখানে ১৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছে এক শিশুকন্যা, সাতজন নারী এবং পাঁচজন পুরুষ। আহত হয়েছেন অন্তত ৩৭ জন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।
আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এ ধরনের ড্রোন যুদ্ধ এবং পাল্টা বিমান হামলার ধারাবাহিকতা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ভারসাম্যে এক চরম অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের কোনো কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ দেখা না গেলে সংঘাত আরও বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?