সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক, সামরিক এবং কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এই দ্বন্দ্বের প্রভাব সুস্পষ্ট।
চীনের অর্থনৈতিক মন্দার ফলে দেশটিতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (FDI) উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ২০২৩ সালে চীনে FDI-এর পরিমাণ ছিল ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৪২ শতাংশ কম। এই পরিস্থিতিতে চীন থেকে ব্যবসা গুটিয়ে একাধিক বহুজাতিক সংস্থা ভারতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনে বিনিয়োগকারীদের আস্থা হ্রাস পাওয়ায় ভারত একটি বিকল্প বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে উঠে আসছে। অফিশিয়াল মনিটারি অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন ফোরামের (OMFIF) সমীক্ষা অনুযায়ী, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দুই-পঞ্চমাংশ ভারতকে পছন্দ করছেন, যেখানে চীনকে সমর্থন করছেন এক-চতুর্থাংশেরও কম।
চীন ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ নতুন নয়, তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, চীনের সামরিক শক্তি ও অর্থনৈতিক প্রভাব ভারতের তুলনায় অনেক বেশি।
ভারতের প্রায় অর্ধশত কোটি মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে বাস করে, যা দেশের সামরিক সক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। এমতাবস্থায়, চীনের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়ানো ভারতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাছাড়া, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রকৃত বন্ধু রাষ্ট্রের সংখ্যা কম।
পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান প্রভৃতি দেশ চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখছে, যা ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানকে দুর্বল করছে।
চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের অবনতির ফলে ভারতের প্রযুক্তি খাত বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গত এক দশকে চীনা বিনিয়োগ ভারতে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল, বিশেষ করে প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ খাতে।
তবে সাম্প্রতিক উত্তেজনার ফলে চীনা বিনিয়োগ স্থগিত হয়েছে, যা ভারতীয় স্টার্টআপগুলোর জন্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনা বিনিয়োগের অভাবে ভারতীয় স্টার্টআপগুলো বিকল্প পুঁজির সন্ধানে রয়েছে, যা সহজলভ্য নয়।
চীন ও ভারতের মধ্যে বর্তমান উত্তেজনা ভারতের জন্য বহুমুখী চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। অর্থনৈতিক, সামরিক এবং কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এই দ্বন্দ্বের প্রভাব সুস্পষ্ট।

জয় ও নিঝুম মজুমদারের এই আহ্বানকে দেশবিরোধী বলে মনে করেন ?