ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের গত ১০ বছরের শাসনামলে দেশটির জনগণের ব্যয় অনুযায়ী আয় বাড়েনি। এতে ক্রমশ হতাশ হচ্ছে ভারতীয় জনগণ। সম্প্রতি এক জরিপে বলা হয়েছে, জীবনযাত্রার ব্যয়ের তুলনায় মজুরি না বাড়ায় নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম হতাশায় আছেন ভারতের বহু মানুষ।
বিশেষ করে মধ্যম আয়ের মানুষ তাদের জীবনে অর্থনৈতিক নেতিবাচক প্রভাবের কথা বলেছেন। ভারতের জাতীয় বার্ষিক বাজেট পাস করার ঠিক আগ মুহূর্তে প্রকাশিত হলো এই জরিপ। যা মোদির জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখছে বিশ্লেষকরা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, এসব তথ্য প্রকাশ করেছে ভারতের জরিপকারী সংস্থা সি-ভোটার। সংস্থাটির তথ্যে বলা হয়েছে, বাজেট-পূর্ব ওই জরিপে অংশ নেয়া অন্তত ৩৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন আগামী অর্থবছরে সাধারণ নাগরিকের জীবনযাত্রার মান আরও অবনতি হবে।
২০১৩ সালের পর সর্বোচ্চ সংখ্যা মানুষ দেশের আর্থিক উন্নয়ন নিয়ে এভাবে হতাশা প্রকাশ করেছে। প্রসঙ্গত ২০১৪ সালে প্রথম ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন নরেন্দ্র মোদি। এরপর থেকে তিনিই দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তার শাসনামলে জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি নিয়ে হাতাশ হচ্ছে জনগণ।
সি-ভোটার বলছে, তারা এই জরিপের জন্য ভারতের সকল রাজ্যজুড়ে মোট ৫ হাজার ২৬৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের অভিমত সংগ্রহ করেছে। ধারাবাহিকভাবে খাদ্য মূল্যস্ফীতির ফলে পরিবারে বাজেট সংকুচিত করতে বাধ্য হচ্ছেন ভারতীয় নাগরিকরা।
ধারণা করা হচ্ছে গত চার বছরের মধ্যে প্রবৃদ্ধির হার সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছাবে। যারফলে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারতে নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান বেশ খারাপ হবে।
জরিপে অংশ নেয়া দুই-তৃতীয়াংশ উত্তরদাতাই মনে করেন দেশটির মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নেই। মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই সকল জিনিসে উচ্চ মূল্য গুনতে হচ্ছে নাগরিকদের। এই মূল্যস্ফীতির হার জনগণের জীবনযাত্রার মানকে আরও ‘বিরূপভাবে’ প্রভাবিত করছে বলে মনে করেন জরিপে অংশ নেয়া নাগরিকরা।
রয়টার্স বলছে, চলতি সপ্তাহে যে বাজেট ঘোষণা করা হবে সেখানে স্থবির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদার, ব্যয়যোগ্য আয় বৃদ্ধি এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে শান্ত করার জন্য পদক্ষেপ ঘোষণা করতে পারেন নরেন্দ্র মোদি।
খরচ বাড়লেও ব্যয় বেড়েছে। জরিপে অংশ নেয়া অর্ধেক মানুষ বলেছেন, গত বছর তাদের ব্যক্তিগত আয় যা ছিল তার তুলনায় এ বছর ব্যয় বেড়েছে। যারফলে তারা কঠিন চাপের মুখে রয়েছে। বিশ্বমানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও ভারতের চাকরির বাজারে তরুণদের জন্য ভালো মজুরি দেয়া হয়না।
দেশটির সর্বশেষ বাজেটে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য পাঁচ বছর মেয়াদে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু বিশাল এই বরাদ্দ পেলেও সংশ্লিষ্ট খাতে নেয়া প্রকল্পগুলো এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
মোদির অধীনে জীবনযাত্রার মানে হতাশ হচ্ছে ভারতের জনগণ: জরিপ
গত ১০ বছরের মোদির শাসনামলে হতাশ ভারতীয় জনগণ : জরিপ