ভারতের আসাম রাজ্যে গরুর গোশত খাওয়ার ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। হোটেল, রেস্তোরাঁ, অনুষ্ঠানে কিংবা জনসমক্ষে গরুর গোশত পরিবেশন বা খাওয়া সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বুধবার আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ঘোষণা দেন যে গরুর গোশত নিয়ে বিদ্যমান আইন সংশোধন করা হচ্ছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী হোটেল, রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন স্থানে গরুর গোশত খাওয়ার উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে।
তিনি জানান, এ নিয়ে রাজ্যের ক্যাবিনেট বৈঠক করেছে এবং গরুর গোশত খাওয়ার বিষয়ে আগের আইন আরো কঠোর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে আসামে গরুর গোশত বিক্রি নিষিদ্ধ ছিল এবং মন্দিরের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে গরুর গোশত খাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এবার নতুন সংশোধনের মাধ্যমে আসামের বিজেপি সরকার এই নিষেধাজ্ঞাকে আরো জোরদার করতে যাচ্ছে।
জানা গিয়েছে, নতুন আইনে হোটেল এবং রেস্তোরাঁতে গরুর গোশত বিক্রিতে নিষিদ্ধ করা হবে। এছাড়াও প্রকাশ্যে বা কোনো অনুষ্ঠানে গরুর গোশত খাওয়া যাবে না। কেবল মন্দির-সংলগ্ন এলাকা নয়, গোটা রাজ্যজুড়েই এই নতুন আইন কার্যকর হবে বলে জানান হিমন্ত। সংবাদ সম্মেলনে আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিন বছর আগে আসামে গোহত্যা বন্ধ করতে আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। সেখানে সাফল্য মিলেছে। তার পরেই আইনে আরো কড়াকড়ি আনার কথা ভাবছে হিমন্তের প্রশাসন।
হিমন্তের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। তাদের মতে, মানুষ কী খাবেন আর কী খাবেন না এই বিষয়ে সরকার কোনো দিনও হস্তক্ষেপ করতে পারে না। পাশাপাশি বিজেপি সরকার অন্যান্য রাজ্যেও রয়েছে, সেখানে কেন গরুর গোশত নিষিদ্ধ করতে পারছে না?
উল্লেখ্য, বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশে গরু জবাই করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কয়েক মাস আগে সেরাজ্যের কয়েকটি বাড়ির ফ্রিজে গরুর গোশত রাখার অভিযোগ উঠেছিল। তার পরেই ১১টি বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় মধ্যপ্রদেশ প্রশাসন। যদিও পরে প্রশাসনের দাবি ছিল, সরকারি জমির উপর বেআইনিভাবে ওই বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছিল তাই এই পদক্ষেপ। ওই একই ছবি কী এবার দেখা যেতে পারে আসামেও? হিমন্তের নতুন ঘোষণার পর থেকে প্রশ্ন উঠছে। সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন, জি নিউজ, সিয়াসত