মেহেদী হাসান মেহের: ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে দুগ্রুপে সংঘর্ষ হয়েছে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই গ্রুপের কয়েকশ দাঙ্গাবাজ টেঁটা, রামদা, ঢাল, সুরকি, ইট, পাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এই দুই গ্রুপের এক গ্রুপ শিবু সরকার ও আরেক গ্রুপ আজগর আলী সরকার গ্রুপ নামে পরিচিত। এই দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় ২৫ জন আহত হয়েছেন ও অনেকের বাড়িতে ভাঙচুরও হয়েছে।
আহতদের মধ্যে ১১ জন টেটাবিদ্ধ হয়েছেন। আহতরা হলেন- মোশারফ হোসেন, মোবারক হোসেন, আলমগীর হোসেন, কামাল মিয়া, নজরুল ইসলাম, সুরুজ মিয়া, রফিক মিয়া, খলিল মিয়া, শহীদ মিয়া, হানিফ মিয়া, আবদু মিয়া, তাজু মিয়া, হালিমা বেগম, শাহিন মিয়া, ময়না বেগম, হালিমা বেগম, নজরুল ইসলাম, বিপ্লব মিয়া, মাসুদ মিয়া, রহমতউল্লাহ, শাহিন মিয়া, ধন মিয়া, আহসানুল্লাহ, জামাল মিয়া ও আসাদ মিয়া। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ও ঢাকা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এলাকার সাবেক মেম্বার শামিম – ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান। জানা গেছে, মামলা ও ৭ পুলিশের ভয়ে অনেকেই স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন, তবে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি – হয়নি কেউ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোনারামপুর ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের শেবু সরকারের বাড়ির সঙ্গে আজগর আলী সরকার বাড়ির মধ্যে প্রায় ৫০ বছর ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধীতা চলছে। সপ্তাহখানেক আগে শিবু সরকার বাড়ির সাব্বির হোসেনকে মারধর করে আজগর আলী বাড়ির লোকজন। ওই ঘটনায় সাব্বিরের বাবা মঙ্গল মিয়া বাদী হয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় মামলা করেন।
গত রবিবার পুলিশ মামলার আসামি হোসেন ও হাশেমকে গ্রেপ্তার করে। ওই ঘটনায় আজগর আলী সরকার বাড়ির লোকজন শেবু সরকার বাড়ির মন্টু মিয়া ও শাহজান মিয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাদের মারধর করে। এ নিয়ে দুই দলের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। গত সোমবার রাতে আবারও দুই দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় ১১ জন টেটাবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ এ ব্যাপারে শেবু সরকার বাড়ির রফিক মিয়া বলেন, গত রবিবার পুলিশ আসামি হাশেম হোসেনকে গ্রেপ্তার করলে ছোট শেকু, ইসলাম, ছোট্ট মন্টু মিয়া শাহজান মিয়ার বাড়িতে হামলা করে তাদের মারধর করে এবং আমাদের গ্রাম থেকে বের করে দেয়। সোমবার আমরা গ্রামে এলে আবার তারা হামলা করে আমাদের ওপর।
আজগর আলী সরকার বাড়ির ইসমাইল হোসেন বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে মিয়া মোক্তার হোসেনের নেতৃত্বে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন আমাদের লোকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও টেটাবিদ্ধ করে আহত করে অনেক কিছু লুটপাট করে নিয়ে যায়। আমাদের ২০ থেকে ৩০ জন আহত হন; যাদের বেশিরভাগই টেটাবিদ্ধ।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ মোরশেদুল আলম চৌধুরী জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ হয়েছে।