মো. হাসনাইন আহম্মেদ, ভোলা:
ইরাকের বাগদাদ শহরে আগুনে দগ্ধ হয়ে মোহাম্মদ আলী (২২) নামের এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি ভোলার সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের চেউয়াখালি গ্রামের হাফেজ মো. সালেহ আহম্মেদের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ওই এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বজন হারানোর বেদনায় ভারী হয়ে উঠেছে ওই এলাকার পরিবেশ। পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সাত ভাইবোনের মধ্য মোহাম্মদ আলী ছিলেন ষষ্ঠ। সংসারের হাল ধরতে ৭ বছর আগে পাড়ি জমিয়েছিলেন ইরাকের বাগদাদ শহরে। কাজ নিয়েছেন জেনারেটর রক্ষণাবেক্ষণের।
আলীর বাবা সালেহ আহম্মেদ জানান, অভাবের সংসারের হাল ধরতে ৭ বছর আগে সূদুর ইরাকে পাড়ি জমিয়েছেন ছেলে মোহাম্মদ আলী। গেলো শনিবার রাতে জেনারেটরের ইঞ্জিন চলা অবস্থায় তৈলের পাইপ ফেটে পেট্রোল ছড়িয়ে পরে মোহাম্মদ আলীর গায়ে। পরে তরিগড়ি করে জেনারেটরের সুইজ বন্ধ করতে গিয়ে আগুন দগ্ধ হন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। মঙ্গলবার রাতে তার শ্যালকের মাধ্যমে জানতে পারেন আলী মারা গেছেন।
এদিকে, যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইরান ইরাকে ফ্লাইট বন্ধ থাকায় লাশ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চিয়তায় পরিবার। আদরের ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা। নির্ভাক ছাউনিতে শেষ বারের মত আদরের ছেলেকে একবার দেখেতে আহাজারি যেনো থামছেই না। কান্নায় বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন মা নাজমা বেগম।
কান্না জড়িত কন্ঠে আলীর বড় বোন ইয়াছমিন বেগম জানান, আমাদের খুব অভাবের সংসার ছিলো। বাবা মায়ের সুখের জন্য অল্প বয়সে বিদেশে পাড়ি জমান আলী। গেল বছরের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশে এসে তার বন্ধুদের মাধ্যমে বিয়ে করবেন বলে পরিবারকে জানান। কিন্তু আমাদের ঘরটি জরাজীর্ণ থাকায় তাকে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলি। এবং বাড়ির পাশে একটি বিল্ডিং তৈরি করি। কিছু দিন পর দেশে এসে বিয়ে করে ওই বিল্ডিংয়ে থাকার কথা ছিলো আমার ভাইয়ের।
তিনি আরও জানান, যুদ্ধের কারনে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় ভাইয়ের লাশ দেশে আনা জটিল হয়ে পরেছে। লাশ দেশে ফেরত আনতে চেষ্টা চলমান আছে। যদি দেশে আনা সম্ভব না তাহলে ওখানে হযরত আলী(রাঃ) মাঝারের পাশে জমি কিনে দাফন করা হবে।
এদিকে, দূতাবাসের মাধ্যমে আলীর লাশ ফিরে ফেতে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোড় অনুরোধ জানিয়েছেন তার পরিবার।