সাব্বির হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত লালমনিরহাটের হাসিনুর রহমানের বাড়িতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সাক্ষাৎ ও সমবেদনা জানানোকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ও মানবিক সংহতির এক দৃশ্য ফুটে ওঠে আজ শনিবার বিকেলে।
এ সময় তিনি হাসিনুরের মা-বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা ও ভবিষ্যতের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
জামায়াত আমির হাসিনুরের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে এক লাখ টাকা নগদ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার ও সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের দাবি তুলে ধরেন এবং সরকারের কাছে দ্রুত তদন্ত ও জবাবদিহিতা চান।
এর আগে শনিবার দুপুরে লালমনিরহাটের কালেক্টরেট মাঠে জেলা জামায়াতের আয়োজিত এক জনসভায় ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “ভারত আমাদের প্রতিবেশী, কিন্তু তাদের সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। বিএসএফের এই বর্বরতা মানবতাবিরোধী”।
তিনি নির্বাচনের আগে “খুনিদের বিচার” ও “পেশিশক্তিমুক্ত নির্বাচনী পরিবেশ” তৈরির দাবি জানান এবং সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “সংস্কার ছাড়া জনগণ নির্বাচন মানবে না”।
শফিকুর রহমান ভারতকে “বন্ধু রাষ্ট্র” আখ্যায়িত করে বলেন, “সীমান্তে অমানবিক আচরণ কাম্য নয়। ভারতকে অবশ্যই এই ঘটনার তদন্ত করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে”।
গত ১৬ এপ্রিল হাতীবান্ধা সীমান্তের ৮৯৪ নম্বর পিলারে ঘাস কাটতে গেলে বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হাসিনুরকে গুলি করে। পরে তাকে টেনেহিঁচড়ে ভারতে নিয়ে মারা হয়। দুই দিন পর মরদেহ ফেরত দেওয়া হলে পরিবারের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।
শফিকুর রহমান জোর দিয়ে বলেন, “আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে সংখ্যালঘু নয়, সবাই নিরাপত্তা পাবে। নারীরা স্বাধীনভাবে চলবে, কেউ তাদের দিকে তাকানোর সাহস পাবে না”।
দুর্নীতি দমন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিক্ষা-নিরাপত্তা সংস্কারের মাধ্যমে “কোরআনের শাসন” প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
হাসিনুরের পরিবার ও গ্রামবাসী জামায়াত আমিরের সমবেদনাকে স্বাগত জানালেও তারা দ্রুত ন্যায়বিচার চান। এক স্বজন বলেন, “সীমান্তে আমাদের নিরাপত্তা নেই। এই হত্যার বিচার না হলে আরও জীবন যাবে”।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?