সানজিদ মাহমুদ সুজন, শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি:
গতকাল বাংলাদেশের প্রায় সকল মিডিয়া গুলোই শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর এলাকার বোমাবাজির খবরটি ফলাও করে প্রকাশ করা হয়।এ সময় বোমাবাজির একটি যুদ্ধের মাঠ মনে হয়।এটা দেখেই নরে চরে উঠে বর্তমান সরকারের প্রশাসন।আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে নামে যৌথবাহিনি সহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
রাতে ঢাকার শাজাহানপুর এলাকা হতে গ্রেপ্তার হয়,পুলিশ কতৃক দেওয়া মামলার প্রধান বিলাশপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান, কুদ্দুস ব্যাপারি।বিলাশপুরের বিভিন্ন স্থান হতে আরো ৬ জনকে গ্রেপতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।৮০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞ্যাত আরো ৫০০-১০০০ জনকে আসামি করে নিয়মিত মামলা করেন জাজিরা থানা পুলিশ।
সারাদিন আজো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পরার মতো।
এদের মধ্যে একজন রয়েছে মোটরসাইকেল চালনাকারী, যে মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে, নাম মালেক চৌকিদার।তার পরিবার তাকে নির্দোশ দাবি করে।খবর নিয়ে এর সত্যতাও পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে জাজিরা থানা হতে জানা যায় ডিবি তাকে গ্রেপতার করে থানায় সোপর্দ করে।আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এই অভিযান করাহচ্ছে। অপরাধী না হলে জামিনে চলে আসবে।
উপজেলার সকল মানুষের অভিযোগ মুলনা,জয়নগর,বরকান্দি, কুন্ডেরচর,পালেরচর, পূর্ব নাওডোবা, গোপালপুর এলাকায় বংশানুমিক ঐতিহ্য ছিল মারামারির। যা একপর্যায়ে প্রজন্ম পরিবর্ধনে প্রায় সমাপ্তির দিকে।
কিন্তু বিলাশপুর ইউনিয়নে আজ ২৫ বছর যাবৎ নতুন করে কুদ্দুস ব্যাপারি,জলিল মাদবর,সালেক মাদবর,সালাউদ্দিন মাসটার এর কারনে চলছে,যুগ ধরে।এ পর্যন্ত হয়েছে ১০ এর অধিক খুন।বোমা বিস্ফরিত হয়েছে ৬-৭ কোটি টাকার উপরে,মালামাল, ঘরবাড়ি পোড়ানো হয়েছে কয়েক কোটি টাকার।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে, কিসের জন্য, কোন লাভে করা হচ্ছে এই নৃশংস মারামারি?
এ ব্যাপারে জাজিরা উপজেলার, উপজেলা নির্বাহি অফিসার কাবেরি রায়ের সাথে কথা বললে, তিনি জানান এলাকার আধিপত্য, দলিয় প্রভাব বিস্তার করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই এই পেশি শক্তির প্রদর্শন।
জাজিরা থানার ওসি দুলাল আকন্দ একি তথ্য জানালেন।
সরোজমিন হতে, সাধরন মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে আরো বেশ কিছু অর্থনৈতিক কারন ও রাজনৈতিক কারন।আমরা সবাই জানি বাংলাদেশের বেশির ভাগ পরিবারের লোক কর্তার আয়ের উপর দিয়েই চলে, যে কারনে গ্রামের লোকগুলো অল্প পরিশ্রমে অর্থ উপার্জনে আগ্রহি।কেবলমাত্র অবৈধ উপায়ে দ্রুত অর্থ উপার্জন সম্ভব।
যে তথ্য জানা গেল অর্থনৈতিক বিষয়ে :
১/এলাকায় একজনের জমি ক্রয় ও বিক্রয় করতে হলে প্রভাবশালীর সহায়তা নিয়ে করতে হয়,এতে একটা লাভ আসে।
২/ নতুন বাড়ি করলে জমি ভরাট করতে, বাড়ি তৈরীতে প্রভাবশালীর সহায়তা লাগে,এতে কাজের সুবিধা।
৩/ মানব পাচারের একটা বিষয় আছে।সহজ ভাষায় বলতে গেলে, অবৈধপথে বিদেশে শ্রমিক প্রেরন।
৪/এলাকার সরকারি নাল ও খাস জমি হতে,রাতের আন্ধকারে মাটি বিক্রি।
৫/নদী হতে কার্টারের মাধ্যমে বালু কেটে বিক্রি।
৬/এলাকায় চাদাবাজি।
৭/মাদক ব্যাবসা নিয়ন্ত্রন।
৮/ টেন্ডারের কাজ পেতে এবং যে কাজ করবে তার থেকে লাভ গ্রহন করতে।
এই সকল কাজ গুলো করতে মূলত এলাকায় পেশিশক্তির দাপট ও ভয়ের সৃষ্টি করতে হয়।আর ভয় পেলেই জনগনকে যা বলবে তা করবে,যাকে ভোট দিতে বলবে তাকে ভোট দিবে।
৫ই আগস্টের আন্দোলনে সরকারের পটভূমি পরিবর্তন হলে, জাজিরায় অফিসগুলোতে রাজনৈতিক শক্তির শূন্যতার সৃষ্টি হয়।মব জাস্টিছ এর ভয়ে সরকারি কর্তারা তটস্থ। এই সুযোগে একটি বিশেষ গোস্টি তাদের প্রভাব বিস্তারে কাজ করছে।
এরাই উপজেলা হতে এগুলো নিয়ন্ত্রন নিতে কাজ করছে।যে কারনে এই সময়ে এসে, আওয়ামিলীগের নেতারা যখন গ্রেপতার নয়তো পলাতক,এতোটা সাহষ এ সময় কেউ দেখাবে না দাবি এলাকার নিরহ মানুষদের। বিশেষ দলের লোকদের নতুনকরে প্রতিটা এলাকায় ব্যাবসা ও সিন্ডিকেট তৈরিতে, ঈদে ঘরমুখো মানুষ যারা এসেছে গ্রামে, তাদের মধ্যে থেকে বিশেষ দলের লোকজন সূকৌশলে টাকা পয়সা ও ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে,কাজিয়ারচর,দূর্বা ডাংগা,বিলাশপুর,পালেরচড় এলাকায় মারামারির সূত্রপাত ঘটায় বলে দাবি অনেকের।
এলাকার মানুষ এই ধরনের অপতৎপরতা থেকে মুক্তিপেতে কেবলমাত্র বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভিযানের উপরি আস্থা রাখছেন।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?