রাজধানীর মহাখালীর সাততলা বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা গভীর রাতে শুরু হয়ে বস্তির বিস্তীর্ণ এলাকা গ্রাস করে নেয়। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৪টা ৩৮ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায় বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান জানান, প্রথমে রাত ৩টা ৫০ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় একে একে আরও আটটি ইউনিট যুক্ত হয়, মোট নয়টি ইউনিট মিলে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনো আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গভীর রাতে হঠাৎ আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পান তারা। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, এতে বস্তির বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক দেখা দেয়। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই দ্রুত ঘরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলেও, বেশ কিছু পরিবার তাদের সামান্য যা কিছু সম্পদ ছিল, তা রক্ষা করতে পারেনি।
উল্লেখ্য, মহাখালীর এই সাততলা বস্তিতে আগেও একাধিকবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ২০২১ সালের মে মাসে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক ঘর পুড়ে যায়, যা হাজারো মানুষকে গৃহহীন করে তোলে। এছাড়া, ২০২৩ সালেও এখানে আরেকটি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যা ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়েছিল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বস্তির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে এবং বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে সামান্য অগ্নিস্ফুলিঙ্গও মুহূর্তের মধ্যে বিশাল অগ্নিকাণ্ডে রূপ নেয়।
এদিকে, ফায়ার সার্ভিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট বা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে বিস্তারিত তদন্তের পরই প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
এ অগ্নিকাণ্ডের ফলে কতগুলো ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে এবং কেউ হতাহত হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।