সাজেদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে দিন দিন বিবাহ বিচ্ছেদের হার বেড়েই চলছে। স্থানীয় হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ১০০টি বিয়ের মধ্যে প্রায় ৩৬টি বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে।
ভূঞাপুর উপজেলা ও পৌর কাজী অফিসের তথ্য২০২৩ সালে ৮৩৭টি বিয়ে হয়েছিল, যেখানে ৩১৯টির বিচ্ছেদ হয়। ২ সালে বিয়ে বেড়ে ৯২৯টিতে পৌঁছায়, একই সঙ্গে বিচ্ছেদের সংখ্যা ১৮টি বেড়ে ৩৩৭টিতে দাঁড়িয়েছে। মোট বিয়ের তুলনায় বিচ্ছে৩৬.২৮ শতাংশ।
তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নে বিচ্ছেদের হার সবচেয়ে বেশি। সেখানে গত বছর ১১৩টি বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। এছাড়া গোবিন্দাসী ইউনিয়নে ৩৯টি, গাবসারা ইউনিয়নে ৪৮টি, অর্জুনা ইউনিয়নে ৫৭টি, অলোয়া ইউনিয়নে ৩২টি, ফলদা ইউনিয়নে ৪২টি এবং পৌর এলাকায় (তিনটি কাজী অফিসে) ৪১টি বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিয়ে বিচ্ছেদের পেছনে বাল্যবিয়ে, স্ত্রীর প্রতি স্বামীর উদাসীনতা, পরকীয়া, নারীর প্রতিবাদী রূপ, নারী শিক্ষার অপ্রতুলতা, স্বামীর মাদকাসক্তি, দীর্ঘদিন স্বামী প্রবাসে থাকা, শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতন, যৌতুকের চাপ, স্বামীর নির্যাতন প্রভৃতি কারণে বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটছে।
বিচ্ছেদকৃত এক নারী জানান, পারিবারিক অশান্তি এবং আর্থিক সংকট তাদের সম্পর্কের মধ্যে ভাঙন তৈরি করেছে। এখন তিনি ডিভোর্সী তকমা নিয়েও স্বাধীনভাবে জীবন শুরু করতে চান।
মো. মনির জানায়, তিনি পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। তাদের বিবাহিত সময় ভালোই যাচ্ছিল- তার একটা সন্তান আছে। কিন্তু তার স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে সাজানো মামলা দিয়ে তাকে জেলে পাঠায়। তারপর স্ত্রী তাকে তালাক দেয়।
ভূঞাপুর উপজেলা কাজী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান জানান, বিচ্ছেদ বা পরিবার ভাঙার ক্ষেত্রে সমাজের একটি নেতিবাচক মনোভাব থাকে। তবে পরিবারগুলোর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং একটি সহানুভূতিশীল মনোভাব গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে।
ভূঞাপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আমিনা বেগম জানান, বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে তারা নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। বিয়ে বিচ্ছেদ সম্পর্কে তারা কাউন্সিলিং শুরু করেছেন। তবে এক্ষেত্রে অভিভাবকদের বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। তবেই সমাধান পাওয়া সহজতর হবে।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?