শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

রাজনীতি

আট মাসেই শতকোটি টাকা হাতিয়েছেন শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই খোকন

গত বছরের এপ্রিলের আগে বরিশালের কেউ চিনত না খোকন সেরনিয়াবাতকে। বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে কে পাবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তা নিয়ে যখন চলছিল আলোচনা-হঠাৎ করে নৌকার মাঝি হিসাবে কেন্দ্র থেকে ঘোষিত হয় তার নাম। অনেকটাই হতবাক হয়ে পড়েন বরিশালের মানুষ। কে এই খোকন সেরনিয়াবাত তা জানতে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন […]

নিউজ ডেস্ক

২১ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৪২

গত বছরের এপ্রিলের আগে বরিশালের কেউ চিনত না খোকন সেরনিয়াবাতকে। বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে কে পাবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তা নিয়ে যখন চলছিল আলোচনা-হঠাৎ করে নৌকার মাঝি হিসাবে কেন্দ্র থেকে ঘোষিত হয় তার নাম। অনেকটাই হতবাক হয়ে পড়েন বরিশালের মানুষ। কে এই খোকন সেরনিয়াবাত তা জানতে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন সবাই। পরে জানা যায়, দলের প্রভাবশালী নেতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর একমাত্র ভাই ও শহিদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের ছোট ছেলে এই খোকন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই।

দলীয় রাজনীতিতে কোনো অবদান না থাকলেও শেখ পরিবারের কোটায় ওই বছরের ১২ জুন অনুষ্ঠিত প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে জয়ী হন খোকন। মেয়রের দায়িত্ব নেন ১৪ নভেম্বর। মাত্র সাড়ে ৮ মাস ছিলেন এ দায়িত্বে। এ সময়েই নগর ভবনের ঠিকাদারির পার্সেন্টেজ নেওয়াসহ বিভিন্ন উপায়ে প্রায় শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনার ভাই হিসাবে প্রশাসনসহ সর্বস্তরের মানুষকে তটস্থ করে রেখেছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত তার কথায় উঠতে আর বসতে হতো বরিশালের প্রায় সবাইকে।

দায়িত্ব নেওয়ার পর সাবেক মেয়র তারই ভাতিজা সাদিক আব্দুল্লাহর সময়ে বরাদ্দ দেওয়া নগরীর ১৮টি হাটবাজারের ইজারা বাতিল করেন খোকন। তার লোকজন দখল করে নেয় নগরীর দুটি বাস টার্মিনালসহ সব লঞ্চঘাট ও বালুমহালসহ অন্যান্য স্থাপনা। সেখান থেকে আয় হওয়া অর্থের ভাগ নিতে শুরু করেন তিনি।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে নগর ভবনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পরও টানা ৮ মাস বন্ধ রাখা হয় বরিশাল নগরীর সব প্রকার ভবন এবং স্থাপনা নির্মাণের প্ল্যান অনুমোদন। পরে ১-২টা করে প্ল্যান ছাড়া শুরু হলেও ৬ তলার বেশি উচ্চতার ভবনের প্ল্যান অনুমোদনের ক্ষমতা নিজের হাতে রেখে দেন খোকন। কি কারণে তিনি এটা নিজের হাতে রেখেছেন তা সহজেই অনুমেয়। ৬ তলার নিচের ভবনের প্ল্যান অনুমোদনেও নির্দিষ্ট অঙ্কের উৎকোচ দিতে হতো তার নির্ধারিত লোককে। নির্বাচনের সময় সব প্রকার অযৌক্তিক কর বাতিলের ঘোষণা দিলেও দায়িত্ব নেওয়ার পর সেগুলো প্রত্যাহার তো দূর, বরঞ্চ নতুন করে পানির লাইন স্থাপনসহ বিভিন্ন খাতে কর বাড়ান খোকন। ট্রেড লাইসেন্স, সাইন বোর্ড রাজস্বসহ প্রায় সব খাতে টাকার অঙ্ক বাড়িয়ে দেন তিনি। ফলে বাড়তি করের কবলে পড়েন নগরবাসী। এমনকি ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরও অজ্ঞাত স্থান থেকে ২৮ জুলাই প্রায় ২ কোটি টাকার চেক স্বাক্ষর করেন খোকন। কোভিড প্রকল্পের ওই টাকা অতি সম্প্রতি এসেছিল নগর ভবনে। ২ কোটি টাকার চেক ছাড়ার বিনিময়ে পার্সেন্টেজ বাবদ টাকা নেন ২০ লাখ।’ চলতি বছরের মার্চে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ এবং সংস্কার কাজের ২৬৭ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করে সিটি করপোরেশন। আগে ভাগেই ঠিক হয়ে থাকা ঠিকাদারদের কার্যাদেশ দেওয়া হয় পরের মাস এপ্রিলে। ১৮ গ্রুপের ওই কাজ পাওয়াদের তালিকায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বর্তমান উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফের শ্যালক বরিশালের বিতর্কিত ঠিকাদার মাহফুজ খানের নামও রয়েছে। ১৮ গ্রুপের কাজের মধ্যে তিনি একাই পান ৬ গ্রুপের কাজ। কাজ পাওয়া একাধিক ঠিকাদার  জানান, ‘টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগেই আমাদের সঙ্গে কাজের ব্যাপারে সবকিছু ফাইনাল করে নেন খোকন সেরনিয়াবাত। টেন্ডার মূল্যের বিপরীতে শতকরা ১০ ভাগ টাকা তাকে অগ্রিম দিয়ে কাজ নিতে হয় আমাদের।’

শুধু এই ২৬৭ কোটি টাকার ঠিকাদারিই নয়, গত সাড়ে ৮ মাসে নগর ভবনে যতগুলো ঠিকাদারি কাজের টেন্ডার কিংবা মৌখিক নির্দেশ হয়েছে, তার সবগুলোর ক্ষেত্রেই নির্ধারিত ১০ পার্সেন্ট হিসাবে টাকা দিতে হয়েছে খোকন সেরনিয়াবাতকে।

দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই আয় বাণিজ্যের খাতগুলোতে হাত দিতে শুরু করেন খোকন সেরনিয়াবাত। ভাগাভাগিতে বনিবনা না হওয়ায় নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে সরিয়ে দেন বাস মালিক গ্রুপের তৎকালীন সভাপতি আফতাব হোসেনকে। বসান নিজের লোক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা অসীম দেওয়ানকে। এই অসীম দেওয়ান ছিলেন খোকনের আয় বাণিজ্যের ক্যাশিয়ার। নগর ভবনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বরিশাল নগরে বিসিসি’র নিয়ন্ত্রণাধীন মোট ১৮টি হাটবাজার রয়েছে। সঠিক নিয়মে টেন্ডার হলে এসব হাটবাজার থেকে বছরে ২০ কোটি টাকা ইজারা মূল্য আয় করা সম্ভব। কিন্তু নিজের আয় ঠিক রাখতে মাত্র ১ কোটি টাকায় হাটবাজারগুলো নিজের লোকজনের মধ্যে বণ্টন করে দেন খোকন। বিনিময়ে নেন মোটা অঙ্কের টাকা। এসব বাজার থেকে ওঠা প্রতিদিনের টাকার হিসাব নিতেন অসীম দেওয়ান। তারপর নির্ধারিত অঙ্ক পৌঁছে যেত সদ্য সাবেক মেয়রের বাসায়।’

বিআইডব্লিউটিএর একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরপরই বরিশাল লঞ্চঘাটসহ নদী বন্দরে থাকা আমাদের প্রায় সব ঘাট দখল করে নেয় খোকন সেরনিয়াবাতের লোকজন। পরে অনেকটা বাধ্য হয়ে সরাসরি রাজস্ব আদায় দেখিয়ে তাদের হাতে ঘাট পরিচালনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হই আমরা। চলতি বছরের জুনে হাসিবুল ইসলাম নামে একজন একতলা লঞ্চ ঘাটের ইজারা পেলেও তাকে ঘাট বুঝিয়ে দিতে পারিনি।’ বরিশাল স্পিডবোট ঘাটের একাধিক বোট চালক বলেন, ‘এই ঘাট থেকে খোকন সেরনিয়াবাতের নামে নিয়মিত ওঠানো হত মোটা অঙ্কের চাঁদা। না দিলে বোট চালাতে না দেয়ার হুমকি দিত।’

বরিশাল নগরের দুটি বাস টার্মিনাল থেকেও মাসে ২৫ থেকে ৩০ লাখ করে টাকা নিতেন খোকন সেরনিয়াবাত। বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিবার গাড়ি ছাড়ার বিপরীতে ৬০ টাকা করে আদায় করত তার লোকজন। এভাবে দুটি টার্মিনাল থেকে আয় হতো প্রায় ১৪ লাখ টাকা। এ ছাড়া মালিক সমিতির নিয়ন্ত্রণে থাকা বিএমএফ পরিবহণের আয়ের টাকাও দিতে হতো থাকে। এই খাতেও মাসে ৬-৭ লাখ টাকা পেতেন তিনি। দূরপাল্লার নতুন কোনো পরিবহণ এলে বরিশালের ওপর দিয়ে চলার বিনিময়ে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা দিতে হতো খোকন সেরনিয়াবাতকে।

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, এমন কোনো খাত নেই যেখান থেকে টাকা দিতে হতো না তাকে। এমনকি সাবেক মেয়র মরহুম শওকত হোসেন হিরনসহ তার ঘনিষ্ঠদের মালিকানাধীন ‘বরিশাল প্ল্যানেট পার্ক’র চুক্তি নবায়নেও উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। পার্কের পরিচালনা পরিষদের একজন বলেন, ‘নবায়ন প্রশ্নে করপোরেশনের ফি প্রায় ১০ লাখ টাকা ছাড়াও আলাদাভাবে ৪০ লাখ টাকা দিতে হয়েছে।’

এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য খোকন সেরনিয়াবাতের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. রুবেলের নম্বরে ফোন দিলে রিং হলেও তিনি তা ধরেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো উত্তর মেলেনি।

 

রাজনীতি

ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রী এবং মেয়ে আটক

এটি কি নিয়মতান্ত্রিক কোনো প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো নির্দেশনা বা রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করেছে?

নিউজ ডেস্ক

১৩ মে ২০২৫, ১৩:৫৮

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রী শেখ শাইরা শারমিনের বিদেশযাত্রায় বাধা দেওয়ার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি থাইল্যান্ডগামী থাই এয়ারওয়েজের টিজি৩২২ ফ্লাইটে ওঠার প্রস্তুতি নিলেও ইমিগ্রেশন কাউন্টার থেকে তাকে থামিয়ে দেওয়া হয়। তিনি ফ্লাইটে উঠতে পারেননি।

বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে তিনি ফ্লাইটের জন্য চেক-ইন সম্পন্ন করলেও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ কোনো নির্দিষ্ট কারণ না জানিয়ে তাকে ফ্লাইটে ওঠার অনুমতি দেয়নি। তবে ইমিগ্রেশন বা কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

শেখ শাইরা শারমিনের পারিবারিক পরিচিতি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক বলয়ের সঙ্গে যুক্ত। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের ভাই শেখ আবু নাসেরের ছেলে শেখ হেলাল উদ্দীনের কন্যা এবং বাগেরহাট-২ আসনের আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়ের বড় বোন। অন্যদিকে, তার স্বামী আন্দালিব রহমান পার্থ একজন বিরোধী রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সক্রিয় থেকেছেন।

এই প্রেক্ষাপটে একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হয়েও বিদেশযাত্রায় বাধার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে—এটি কি নিয়মতান্ত্রিক কোনো প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো নির্দেশনা বা রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করেছে?

আইন ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের স্বচ্ছতা নিয়ে এ ধরনের ঘটনার পর নানা ধরনের আলোচনা এবং ব্যাখ্যার সুযোগ তৈরি হয়। বিশেষ করে যখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সরাসরি কোনো মামলার আসামি নন কিংবা তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, তখন এমন ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন তৈরি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।

বর্তমানে এই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হোক বা রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডপ্রসূত কারণ—ঘটনাটির স্বচ্ছ ব্যাখ্যা প্রয়োজন, যাতে বিভ্রান্তি না ছড়ায় এবং নাগরিকদের অধিকার বিষয়ে আস্থার পরিবেশ অটুট থাকে।

রাজনীতি

ভারতে আশ্রয় নেওয়া সব আ:লীগ নেতাদের দেশে ফিরতে নির্দেশ দিলেন শেখ হাসিনা

দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে থাকা নেতাদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে সবাইকে দেশে ফিরতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা ফিরবেন না, তাদেরকে আটক করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে এবং আইনের আওতায় আনা হবে।

নিউজ ডেস্ক

১৭ মে ২০২৫, ১৭:০৩

গণহত্যা, দমন-পীড়ন ও অন্যান্য গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগপন্থী বহু নেতা এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে। ভারতের অভ্যন্তরে থাকা অবৈধ বিদেশিদের দ্রুত দেশত্যাগের নির্দেশ জারির পর দেশটিতে পালিয়ে থাকা এসব নেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে দেশ ছাড়ার হিড়িক।

আগস্ট মাস থেকে এ নির্দেশনা আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করার কথা থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।

পুশব্যাক ও গ্রেফতারের আশঙ্কায় অনেক নেতা ভারতে অবস্থান ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন। ইতিমধ্যে ৫০ জনেরও বেশি নেতা ইউরোপ ও আমেরিকায় পালিয়ে গেছেন এবং অনেকে নতুন করে এসব দেশে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন। তবে পালিয়ে বাঁচা যেন খুব সহজ হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে থাকা নেতাদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে সবাইকে দেশে ফিরতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা ফিরবেন না, তাদেরকে আটক করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে এবং আইনের আওতায় আনা হবে।

এ লক্ষ্যে সরকার আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বহুমুখী কূটনৈতিক ও আইনি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

সরকারের একটি গোপন সূত্র জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়ায় ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় আছে। সরকার চায়, এসব অপরাধের দ্রুত বিচার কার্যকর হোক এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক।

এই প্রেক্ষাপটে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা নেতাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে আত্মগোপনে গেছেন, আবার কেউ কেউ দেশে ফেরার উপায় খুঁজছেন।

রাজনীতি

নাহিদ, সারজিসকে টার্গেট করে হামলা, উদ্দেশ্য ছিল সরাসরি হত্যা : অপু

হামলাকারীদের লক্ষ্য ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা নাহিদ বা সারজিস। গাড়িবহরে ঢুকে যে আচরণ তারা করেছে, তা দেখে হত্যার উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়। আমরা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

নিউজ ডেস্ক

০৪ জুলাই ২০২৫, ২০:২৯

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অভিযোগ করেছে, তাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের বহনকারী গাড়িবহরে ঠাকুরগাঁওয়ের টাঙ্গন ব্রিজ এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় কর্মসূচি শেষে পীরগঞ্জ যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কর্মসূচি শেষে ঠাকুরগাঁওয়ের আর্ট গ্যালারি মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে গাড়িবহরটি পীরগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পথিমধ্যে টাঙ্গন ব্রিজ এলাকায় একটি আন্তঃজেলা বাস হঠাৎ বহরে ধাক্কা দেয়। এতে একটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে, এনসিপির নেতাকর্মীরা বিষয়টি জানতে বাসটির কাছে গেলে ৫-৬ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে গাড়ির চালকসহ একজন কর্মী আহত হন।

এনসিপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হামলাটি কেবল তাৎক্ষণিক কোনো ঘটনা নয়—বরং এটি ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত আক্রমণ। দলের ভাষ্য অনুযায়ী, বাস দুর্ঘটনার আড়ালে মূল উদ্দেশ্য ছিল গাড়িবহরে থাকা শীর্ষ নেতাদের লক্ষ্য করে প্রাণঘাতী হামলা চালানো। যদিও তারা ভুল গাড়িতে আঘাত করে, পরে তৎপর হয়ে আবারও হামলার চেষ্টা করা হয়।

ঠাকুরগাঁও জেলা এনসিপির মুখপাত্র অপু জানান,

“প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে যে, হামলাকারীদের লক্ষ্য ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা নাহিদ বা সারজিস। গাড়িবহরে ঢুকে যে আচরণ তারা করেছে, তা দেখে হত্যার উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়। আমরা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”

ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারওয়ার হোসেন বলেন, “আমরা অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এনসিপির পক্ষ থেকে ঘটনাটিকে হামলা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং তারা একটি ভিডিও ফুটেজও আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”