সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর ভাষায়, “বাংলাদেশ রাষ্ট্র সঠিকভাবে নয়, বরং উল্টোভাবে চলছে।”
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। সেদিন ট্রাইব্যুনাল–১-এ জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর একটি বিবিধ মামলা খারিজ হয়। ইনুর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন পান্না।
আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,
“দেশের সব জায়গায় ঘাটতি রয়েছে। এখান থেকে বাসায় নিরাপদে যেতে পারব কি না, কিংবা রাতে ঘুমাতে পারব কি না—তার নিশ্চয়তা নেই।”
তিনি অভিযোগ করেন, মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদা রক্ষায় গত ২৮ আগস্ট এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি বয়োজ্যেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। কিন্তু সেখানে হামলা হলেও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি, বরং ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন “এমন প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধা থাকবে কোত্থেকে?”
রাষ্ট্রযন্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রযন্ত্র সঠিকভাবে চলছে না, উল্টোভাবে চলছে। ক্ষমতাসীনরা টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে। এ প্রবণতা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বেই দেখা যায়।”
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের প্রসঙ্গে পান্না বলেন, হত্যাকাণ্ডের শাস্তি অবশ্যই হওয়া উচিত, তবে তা প্রমাণের ভিত্তিতেই হতে হবে, জোরজবরদস্তি করে নয়। তিনি ব্যক্তিগতভাবে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করে বলেন, “সারা সভ্য দুনিয়া মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তবে এখনো আমেরিকার মতো কিছু দেশে এটা চালু আছে।”
শেখ হাসিনা ও ইনুর অডিও কথোপকথন নিয়ে প্রশ্ন করলে পান্না জানান, সেখানে স্পষ্ট বোঝা যায় ইনুকে আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার করে একদিন পর ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। গুলি না চালিয়ে সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করার কথাও বলা হয়েছিল। তাঁর মতে, এতে হত্যার জন্য উসকানি দেওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।